তিয়ানশি বাংলাদেশ লিমিটেডের সেভেন ষ্টার ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া এক ভয়ংকর মুর্তিমান আতংকের নাম হত্যা, ধর্ষণ যার নিত্যদিনের কাজ।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, বিগত দের যুগ ধরে তিয়ানশি বাংলাদেশ লিমিটেডের সাথে যুক্ত শত শত মানুষকে পথে বসে দিয়েছে। করেছেন একাধিক বিয়ে। সতিত্ব হরণ করেছেন অসংখ্য সুন্দরী ললনাদের। তিয়ানশির বাহারি প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত হয়ে সাফল্যের চাবিকাঠি দেখিয়ে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া মেয়েদেরকে তিয়ানশি স্বাস্থ্য সেবার সাথে জড়িত করে লুটে নিয়েছেন সর্বস্ব।
এমনি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে ছানাউল্লাহ ভূঁইয়ার অতীত খুঁজে। তার পুরাতন ব্যবসায়ীক সহযোগীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, ছানাউল্লাহ এক ভয়ংকর রূপের লোক। ব্যবসায়িক প্রলোভন ও অল্প সময়ের মধ্যে কোটি পতি হওয়ার স্বপ্ন দেখি খ্রিস্টান, মুসলিম এমনকি হিন্দু মেয়েদের সাথে প্রতিনিয়ত চলে রঙ্গ লীলা। তার সাথে সবসময় একজন হিন্দু প্রবাসীর স্ত্রী থাকে যার নাম তৃষ্ণা ( ছদ্ম নাম) । স্বামী বিদেশ থাকায় ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া তাঁর স্বামীর দায়িত্ব পালন করেন।
সকালে বিকালে শয়নে স্বপনে ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া তাঁর পাশে থাকে। অনেক সময় ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া তাকে নিয়ে ঢাকার অভিজাত হোটেলে রাত্রি যাপন করেন। একদিন ভোর বেলায় ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া ঐ প্রবাসীর হিন্দু স্ত্রীকে নিয়ে পল্টনে আবিদা সুলতানার বাসায় হন্তদন্ত হয়ে উঠেন।
চটকদার বিজ্ঞাপন ও জৌলুস মিশ্রিত বক্তব্য দিয়ে সব শ্রেণীর মানুষকে আকৃষ্ট করে স্বাস্থ্য সেবার পাশে চলে দেহ ব্যবসা। যশোর, খুলনা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ ও ঢাকার প্রায় দুই ডজন স্কুল, কলেজের মেয়েদের ও প্রবাসীর স্ত্রীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে করে সর্বশান্ত।
নতুন কোনো কাষ্টমার পেলে তাদের কাছে মেয়াদ উত্তীর্ণ মেডিসিন ধরিয়ে দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রায় দুই ডজন স্বামী হারা মহিলার স্বপ্ন পুরুষ ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া।
হীজড়া সংগঠনের সভাপতি আবীদা সুলতানা মিতুকে ফাঁদে ফেলে ৮ ( আট) লাখ দশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। তাকে স্বাস্থ্য সেবার নামে বিভিন্ন উপকরণ দেয়ার নামকরে টাকা নিয়েও মেয়াদোত্তীর্ণ প্রোডাক্ট সরবরাহ করে।
এ ব্যপারে আবীদা সুলতানা মিতু বলেন, আমাকে ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া চিকিৎসার কথা বলে, আমার কাছ থেকে প্রতারণা করে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য সেবার নাম করে .
প্রথমে এই চক্রটি মানুষের কাছে চটকদার কথা বলে তিয়ানশীর প্রচারণা চালায়। তারপর মানুষের সাথে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে আকাশচুম্বী মূল্যে প্রোডাক্ট বিক্রি করে। এভাবেই এ চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
ছানাউল্লাহ নিজেকে বাঁচাতে ও তার ব্যবসা সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে ঢাকা প্রেসক্লাব নামের অনিবন্ধিত সংগঠনের সাথে জড়িত হয়ে ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের ছায়াতলে সমবেত থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন। একদল কুচক্রী মহলকে ম্যানেজ করে বিভিন্ন মন্ত্রী ,এমপিদের সাথে ছবি তুলে সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে সাভার আশুলিয়া অংশ নিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যায় অংশ নেয় ছানাউল্লাহ।
তার এ হত্যাযজ্ঞ ঘটনা নিয়ে এ পর্যন্ত আশুলিয়া সহ ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে চারটি মামলার আসামি হন। বিগত ০৫ অগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে আশুলিয়ায় পুলিশ কর্তৃক ৪৬ টি লাল পুড়িয়ে ফেলার ঘটনার লোম হর্ষক বর্ণনা দিয়ে আদালতে বাংলাদেশ পরিবেশ পরিক্রমা মানবাধিকার সাংবাদিক সোসাইটির পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। যার নং সি আর ১২১৮/২৪. অপর একটি মামলা হয় একই তারিখে যার নং সি আর ১২৬৫/২৪ তাতেও উল্লেখ আছে ছানাউল্লাহ বিদেশী অস্ত্র হাতে নিরস্ত্র মানুষের উপর পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে থেকে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে। উক্ত মামলাটি আশুলিয়া থানায় আদালত থেকে এফ আই আর নেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
একই দিনের ঘটনা নিয়ে গার্মেন্টস কর্মী জাফের আলী সর্দার আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন, যার নং সি আর ১৩১৬/২৪ এই মামলায় উল্লেখ করা হয় ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া ছাত্র জনতাকে উদ্দেশ্য করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সাথে অংশ নিয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে।
শুধু ০৫ ইং অগষ্ট থেকে তার হত্যা যজ্ঞ শুরু হয়নি খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া ১৯ জুলাই ২০২৪ যাত্রাবাড়ী ও কাজলা এলাকায় পুলিশের সাথে একত্রিত হয়ে ছাত্র জনতার উপর এলোপাথাড়ি গুলি করতে থাকেন। ঐ ঘটনায় ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স পড়ুয়া ছাত্র মুজাহিদুল ইসলাম গুলি বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তাকে মুগধা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ আড়াই মাস চিকিৎসা করার পর মোটামুটি একটু সুস্থ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।যার নং সি আর ৭৯৮/২৪। সেদিনের যাত্রাবাড়ীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞে ছানাউল্লাহ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ত্রাশ সৃষ্টি করে হত্যা চালিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় ঐ দিন ছানাউল্লাহ যাত্রাবাড়ীতে সর্বহারা পার্টির নেতা কামালকে সাথে নিয়ে তান্ডব চালান। খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়,কামাল দীর্ঘ একযুগ পূর্বে তার প্রথম স্ত্রীকে হত্যা করে ঢাকায় আত্মগোপন করে একটি সাংবাদিক সংগঠনের ব্যানারে হত্যা, সন্ত্রাস ও ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক জঘন্য অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে ।কামালকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করে আসছে ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া।
নারায়ণগঞ্জের আখি (ছদ্ম নাম) তিয়ানশী বাংলাদেশ লিমিটেডের একটি মোটিভেশনাল প্রোগ্ৰামে উপস্থিত হয়ে ছানাউল্লাহর জৌলুস মিশ্রিত বক্তব্য শ্রবণ করে আকৃষ্ট হয়ে তিয়ানশীর ব্যবসা করে বিদেশে যাওয়ার খায়েশ জাগলে কয়েক লাখ টাকা লগ্নি করে তিয়ানশীতে। ছানাউল্লাহ কলা কৌশল করে ঐ মেয়েকে উচ্চ পর্যায়ের লিডার বানানোর আশ্বাস দিয়ে কাজের মোটিভেশন চেন্জ করে সর্বস্ব লুটে নেয়। এব্যাপারে তিয়ানশীর পরিচালক কামারুজ্জামানের কাছে জানতে চেয়ে মুঠোফোনে কল করলে তিনি জানান, ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া একজন চরিত্রহীন লোক । তিনি আরো জানান , তার সাথে অনেক দিন হলো আমার দেখা নেই।
তার চরিত্র স্থলনের কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমার জানামতে ছানাউল্লাহ ভূঁইয়া প্রাতিষ্ঠানিক কাজের পাশাপাশি বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে সখ্যতা করে প্রভাব খাটিয়ে অনেক লোককে সম্মানহানি করে পথে বসিয়ে দিয়েছে। শত শত মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে উল্টো তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন এমনকি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মেয়েদের দিয়ে হ্যারেসম্যান্ট করেছেন। আপনারা তার বিষয়টি নিয়ে আমাদের কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর অভিযোগ দেন তাহলে প্রতিষ্ঠান থেকে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্ৰহণ করব।
এ সকল বিষয় নিয়ে অভিযুক্ত ছানাউল্লাহ ভূঁইয়ার সাথে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,আপনারা যা শুনেছেন তা পুরোপুরি সত্য নহে। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে অনেকে আমার বিরুদ্ধে অপ প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে । আমি রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত ছিলাম। মেয়েলী ব্যাপারে যা শুনেছেন তাও সঠিক নয়। যে সকল মেয়েরা তার কাছে সতিত্ব হারিয়েছেন তারা শুধু অভিশাপ দিয়ে যাচ্ছেন।