ঢাকা ০৭:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আমন ধান কাটার পর আলু চাষে লাভের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আত্রাইয়ের কৃষকেরা কুমিল্লায় যথাযথ মর্যাদায় সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত উচ্চ আদালতের রায় দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি বেজমেন্ট ব্যবসায়ীদের ভোলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোহাম্মদ সানাউল হকের বিদায় সংবর্ধনা যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক অপসারণ দাবি জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে সুখবর জেলা প্রশাসককে গাছের চারা উপহার দিলেন ইউএনও টঙ্গীতে সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের ফাঁসীর দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের নামে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মমিন মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে লেক ভিউ আবাসিক হোটেলের নামে চলছে নারী জুয়া ও মাদক ব্যবসা

মোহাম্মদপুরের সাব-রেজিস্টার শাহিন আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ।

মোহাম্মদপুরের সাব-রেজিস্টার শাহিন আলমের বিরুদ্ধে সম্প্রতি সহকর্মীদের পক্ষ থেকে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগগুলো অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সরকারি কর্মচারী হিসেবে তাঁর বেতন সীমিত থাকলেও বিভিন্ন অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তুলেছেন।

সাব-রেজিস্টার শাহিন আলমের মোহাম্মদপুরের পদস্থ কর্মকর্তার পদে থাকার সময় বহু সম্পদ গড়ে তোলার তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। আলফাডাঙ্গা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁকাইল এলাকায় তার একটি একতলা বাড়ি রয়েছে। এছাড়া, বাঁকাইলের পাশেই তিনি আরও ২০ শতকের একটি প্লট কিনেছেন, যার মূল্য এক কোটি টাকা।

গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ফিংগলিয়া মৌজায় প্রায় এক একর আয়তনের একটি মৎস্য ঘের কেনার তথ্য পাওয়া গেছে, যার ক্রয়মূল্য ৮০ লক্ষ টাকা। এই জমিটি তাঁর শ্বশুরবাড়ির এলাকায় হওয়ায় তিনি নামে বেনামে সেখানে সম্পদ কিনেছেন।

কামরাঙ্গিরচরে চর কামরাঙ্গি মৌজায়, সাব-রেজিস্টার তার ভাইয়ের নামে ৪২৫ অজুতাংশ জমি ক্রয় করেন এবং সেখানে ছয়তলা ভবন তৈরি করেন। প্রতিটি ফ্লোরের আয়তন প্রায় ১,৫৯০ বর্গফুট। পরবর্তীতে এই ভবন এবং জমি তার ভাইয়ের নাবালক ছেলে-মেয়ের নামে “হেবা মুলে” রেজিস্ট্রেশন করে দেন, যার দলিল নম্বর ৫৯৮২ এবং রেজিস্ট্রি খরচ হিসেবে মাত্র চার লক্ষ টাকা দেখানো হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, শাহিন আলমের ব্যাংকে নামে বেনামে বিভিন্ন এফডিআর এবং সঞ্চয়পত্র রয়েছে, যেগুলোর মোট মূল্য কোটি টাকার অধিক। অথচ আয়কর রিপোর্টে তিনি মাত্র ৩,৮৪,২২৮ টাকা আয়ের তথ্য দিয়েছেন। আরও জানা গেছে, আয়করে তিনি ২,৩৫,২২৮ টাকা ঋণ দেখিয়েছেন এবং ৫০,৩৮,৭৯২ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিয়েছেন।
বেতন হিসেবে শাহিন আলম প্রতি মাসে প্রায় ৩৮ হাজার টাকা পান। তবে এর বিপরীতে তাঁর বিলাসবহুল জীবনযাপনের খবর প্রকাশ পাচ্ছে। তিনি প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকার রেন্ট-এ-কার এবং আসাদ নামে একজন ড্রাইভারকে মাসিক ৩০ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ করেছেন।
সহকর্মীদের অভিযোগ, শাহিন আলম তার পদে থেকে নিয়মিত ঘুষ গ্রহণ এবং অবৈধ কার্যকলাপের মাধ্যমে এসব সম্পদ অর্জন করেছেন। সহকর্মীরা এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শাহিন আলমকে এই অভিযোগগুলোর বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি একটি গুরুতর সমস্যা, যা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতায় আঘাত হানে। মোহাম্মদপুরের সাব-রেজিস্টার শাহিন আলমের বিরুদ্ধে ওঠা এইসব অভিযোগ তদন্তের মাধ্যমে সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন। সাধারণ জনগণের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান সেবা গ্রহীতাদের।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আমন ধান কাটার পর আলু চাষে লাভের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আত্রাইয়ের কৃষকেরা

মোহাম্মদপুরের সাব-রেজিস্টার শাহিন আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ।

আপডেট সময় ০১:২৭:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

মোহাম্মদপুরের সাব-রেজিস্টার শাহিন আলমের বিরুদ্ধে সম্প্রতি সহকর্মীদের পক্ষ থেকে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগগুলো অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সরকারি কর্মচারী হিসেবে তাঁর বেতন সীমিত থাকলেও বিভিন্ন অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তুলেছেন।

সাব-রেজিস্টার শাহিন আলমের মোহাম্মদপুরের পদস্থ কর্মকর্তার পদে থাকার সময় বহু সম্পদ গড়ে তোলার তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। আলফাডাঙ্গা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁকাইল এলাকায় তার একটি একতলা বাড়ি রয়েছে। এছাড়া, বাঁকাইলের পাশেই তিনি আরও ২০ শতকের একটি প্লট কিনেছেন, যার মূল্য এক কোটি টাকা।

গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ফিংগলিয়া মৌজায় প্রায় এক একর আয়তনের একটি মৎস্য ঘের কেনার তথ্য পাওয়া গেছে, যার ক্রয়মূল্য ৮০ লক্ষ টাকা। এই জমিটি তাঁর শ্বশুরবাড়ির এলাকায় হওয়ায় তিনি নামে বেনামে সেখানে সম্পদ কিনেছেন।

কামরাঙ্গিরচরে চর কামরাঙ্গি মৌজায়, সাব-রেজিস্টার তার ভাইয়ের নামে ৪২৫ অজুতাংশ জমি ক্রয় করেন এবং সেখানে ছয়তলা ভবন তৈরি করেন। প্রতিটি ফ্লোরের আয়তন প্রায় ১,৫৯০ বর্গফুট। পরবর্তীতে এই ভবন এবং জমি তার ভাইয়ের নাবালক ছেলে-মেয়ের নামে “হেবা মুলে” রেজিস্ট্রেশন করে দেন, যার দলিল নম্বর ৫৯৮২ এবং রেজিস্ট্রি খরচ হিসেবে মাত্র চার লক্ষ টাকা দেখানো হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, শাহিন আলমের ব্যাংকে নামে বেনামে বিভিন্ন এফডিআর এবং সঞ্চয়পত্র রয়েছে, যেগুলোর মোট মূল্য কোটি টাকার অধিক। অথচ আয়কর রিপোর্টে তিনি মাত্র ৩,৮৪,২২৮ টাকা আয়ের তথ্য দিয়েছেন। আরও জানা গেছে, আয়করে তিনি ২,৩৫,২২৮ টাকা ঋণ দেখিয়েছেন এবং ৫০,৩৮,৭৯২ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিয়েছেন।
বেতন হিসেবে শাহিন আলম প্রতি মাসে প্রায় ৩৮ হাজার টাকা পান। তবে এর বিপরীতে তাঁর বিলাসবহুল জীবনযাপনের খবর প্রকাশ পাচ্ছে। তিনি প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকার রেন্ট-এ-কার এবং আসাদ নামে একজন ড্রাইভারকে মাসিক ৩০ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ করেছেন।
সহকর্মীদের অভিযোগ, শাহিন আলম তার পদে থেকে নিয়মিত ঘুষ গ্রহণ এবং অবৈধ কার্যকলাপের মাধ্যমে এসব সম্পদ অর্জন করেছেন। সহকর্মীরা এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শাহিন আলমকে এই অভিযোগগুলোর বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি একটি গুরুতর সমস্যা, যা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতায় আঘাত হানে। মোহাম্মদপুরের সাব-রেজিস্টার শাহিন আলমের বিরুদ্ধে ওঠা এইসব অভিযোগ তদন্তের মাধ্যমে সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন। সাধারণ জনগণের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান সেবা গ্রহীতাদের।