রুবিনা আক্তার। অনেকের কাছে আবার ভাবি নামেও পরিচিত। উজ্জ্বল শ্যামা বর্ণের চেহারার অধিকারী দেখতে অনেকটা মায়াবী সুন্দরী। এই মায়াধারী রূপকে পুঁজি করে হয়ে উঠেছে বেপরোয়া । যুবকদের রূপের ঝলকানির মায়ায় ফেলে তাদের কাছে সরবরাহ করে মরণনেশা মাদক।
গড়ে তুলেছেন ফেন্সিডিল ব্যবসার স্বর্গরাজ্য। তার এ অবৈধ মাদকের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে সখ্য গড়ে তুলেছেন কতিপয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে। ফলে তার ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দিলে নেমে আসে অনাসায় বিপদ। রুবিনার এই সব অবৈধ মাদক ব্যবসা চালানোয় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এলাকার যুবক, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের মানুষ ।
উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের সিমান্তবর্তী এলাকা ত্রিমহোনী ব্রীজ সংলগ্ন নদীর বাঁধের পাশে দীর্ঘ দিন আগে কিছুটা সহায়সম্বলহীন রুবিনা তার স্বামী ফেরদৌস আলীকে নিয়ে বসবাস শুরু করে। ফেন্সিডিল ব্যবসা করে অল্প কয়েক বছরে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়ে উঠেছে রুবিনা । টিনের ছাউনি দেওয়া বাড়ি।বাড়িঘর দেখে বুঝার উপায় নেই যে সে প্রচুর টাকার মালিক।মাদকের ব্যবসা করে কিনেছেন বিলাশবহুল বাইক। মাদকের টাকায় করেছেন গোয়াল ভর্তি গরু। ব্যাংকে রেখেছেন টাকা।
ফেন্সিডিল বেচেই কেনেছেন বেশ কয়েক বিঘা জমি, মাদকের টাকায় নিয়েছেন বন্ধকি জমি। আর সেই জমিতে বিঘার পর বিঘা লাগিয়েছেন কলা বাগান। আর সেই কলা বাগানের মধ্যেই চলে মাদক সম্রাজ্ঞী রুবিনা সুন্দরীর মাদককারবারী। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে তার কলাবাগানে ফেন্সিডিল বিক্রির মহোৎসব। নওগাঁ শহর, বদলগাছী, পার্শ্ববর্তী আক্কেলপুর উপজেলা সদর, তিলেকপুর, ঘাটতিলেকপুর, থেকে প্রতিদিন অন্তত ৫০টির অধিক বেপরোয়া মটর বাইক নিয়ে তার মাদক রাজ্যে ছুটে আসেন মাদক কিনতে মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা । নেশাকারী ঐ যুবকরা বেশি ভাগই বড় সরো মোটরবাইক নিয়ে এই এলাকায় মাদক খেতে আসে।
আর ওয়ান ফাইভ নামের ৪থেকে ৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে বদলগাছী উপজেলার মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিনিয়ত মাদক সেবন করতে আসে এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। মাদক সেবন শেষে তারা বেপরোয়া গতিতে মটর সাইকেল চালিয়ে এই এলাকার বিভিন্ন বাজারে দুধ চায়ের দোকানে আড্ডায় মেতে উঠে তরুন কিশোর সহ বিভিন্ন বয়সের এই নেশার জগতের বেশ কিছু মানুষ।
রুবিনার এই ত্রাসের রাজত্বে বাড়ির পাশের অনেকেই অসহায়। এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড চালাতে হাতিয়ার হিসেবে নাম ব্যবহার করে কতিপয় প্রভাবশালীদের। যার কারণে কেউ মুখ খোলার সাহস না পাওয়ায় দিনে দিনে রুবিনার অপরাধ জগতের কর্মকাণ্ডের প্রসার বাড়তে থাকে।
প্রভাবশালীদের সঙ্গে রুবিনার সখ্য থাকায় অভিযোগ করেও কাজ হয় না এমন অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী । তার এ অপকর্মের কারণে এলাকায় বেড়ে যায় চুরি,সহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। অবস্থা বেগতিক দেখে এলাকা সাধারণ মানুষ বড্ড হতাশার মধ্যে পড়েছে।
দ্রুত এই মাদক ব্যবসায়ী ফেন্সিডিল সম্রাজ্ঞি রুবিনাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান এলাকার সচেতন মহলের মানুষ। এবং অন্য এলাকা থেকে নেশা করতে আসা বহিরাগত বেপরোয়া যুবকদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রদক্ষেপ নেওয়ার দাবি ও করেন তারা।
এবিষয়েঐ নারী মাদক ব্যবসায়ীকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা জানান, মাদকের কোন ছাড় নেই, মাদকের বিরুদ্ধে জিরোটলারেন্স চলছে। মথুরাপুর ইউনিয়নের সিমান্তবর্তী এলাকা ত্রিমহোনী ব্রীজের পূর্ব পাশে বাঁধ এলাকায় মাদকের মহা আসর জমে উঠে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী এবং মাদক সেবনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এবিষয়ে বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুহা.আতিয়ার রহমান জানান, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।