নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চাওয়া ১২টির মধ্যে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পরবর্তী ধাপের বাছাইয়ের জন্য টিকেছে দুটি দল। এই সময়ের আলোচিত দুই দল গণঅধিকার পরিষদ এবং আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চূড়ান্ত বাছাইয়ের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।
রোববার সকালে, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশনের এক সভা শেষে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তিনি বলেন, প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে যাওয়া ১০টি দলই ছিটকে পড়েছে নিবন্ধন পাওয়ার দৌড় থেকে।
বাদ পড়া দলগুলোর মধ্যে রয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের দল গণঅধিকার পরিষদ ও জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থাকা আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। ফলে এই দুই দল নিবন্ধন পাচ্ছে না।
সচিব জানান, যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) বিষয়ে সোমবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে কারও কোনো আপত্তি থাকলে তা নিষ্পত্তি করে কমিশন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
তিনি বলেন, দলগুলোর বিষয়ে ধাপে ধাপে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে অফিস থাকার কথা, কমিটি থাকার কথা, জনবল থাকার কথা। এগুলো সব যাচাই করেছি। আবারও যাচাই করে দুটি দলের আইন অনুযায়ী সবকিছু থাকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
ইসি সচিব বলেন, এরপরই চূড়ান্ত হবে যে, কারা কারা নিবন্ধন পাবে। বাকি ১০টি দল যে তথ্য দিয়েছে, মাঠ পর্যায়ে যাচাই করে গরমিল পাওয়ায় তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে।
সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন দিতে আবেদন আহ্বানের বিধান রয়েছে। গত বছরের ২৬ মে আবেদন আহ্বান করে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল বর্তমান কমিশন। পরে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অনুরোধে সময় দুমাস বাড়ানো হয়।
ইসির নিবন্ধন পেতে ৯৩টি রাজনৈতিক দল আবেদন করলেও তিন দফা যাচাই শেষে গত ১১ এপ্রিল প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে যাওয়া ১২ দলের তালিকা প্রকাশ করেছিলো আউয়াল কমিশন। এবার দুটি দল টিকলো। দাবি আপত্তি শেষে এ দু’দলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।
নিবন্ধন পাওয়ার দৌড়ে বাদ পড়া ১০ দল
এবি পার্টি, বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি (বিএইচপি), গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি)।
২০০৮ সাল সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শামসুল হুদা কমিশন নবম সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করে। বর্তমানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪২। নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধন দিলে দ্বাদশ ভোটের আগে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা আরও বাড়বে।
এর আগে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়া ও আদালতের নির্দেশে জামায়াতে ইসলামী, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, ফ্রিডম পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি (পিডিপি) ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।