মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বাহিনীটির সাত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার (৩ মে) ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নবম অংশীদারিত্ব সংলাপে এ অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংলাপে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ও মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
সংলাপে পারস্পরিক স্বার্থের গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তরের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ড বাংলাদেশ সরকারের এ বছরের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনা করার ঘোষণার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য শ্রম খাত সংস্কারের সঙ্গে অব্যাহত অগ্রগতির গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
পররাষ্ট্রসচিব মোমেন মার্কিন পক্ষকে স্থানীয় ও জাতীয় উভয় পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে নির্বাচন কমিশনের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেন।
মার্কিন পক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট অঙ্গীকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের যুক্ত করার জন্য প্রশংসা করেছে।
সংলাপে পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশের সম্প্রতি প্রকাশিত ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুকের রূপরেখাও ভাগাভাগি করেন। আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ড নিজ নিজ ইন্দো-প্যাসিফিক নথিতে দুদেশের মধ্যে অভিন্নতার ক্ষেত্র উল্লেখ করেন।
পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশের সাম্প্রতিক মানবাধিকার কর্মকাণ্ডের কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি সংলাপে তুলে ধরেন। উভয়পক্ষ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে ক্রমবর্ধমান ও প্রাণবন্ত ব্যবসায়িক সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম বাড়াতে সাইবার নিরাপত্তা ও ডেটা সুরক্ষায় আরও কাজ চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে।
আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ড মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অসাধারণ উদারতার প্রশংসা করেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অব্যাহত মানবিক সহায়তার আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্রসচিব তাকে রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিলের সর্বশেষ পরিস্থিতি ও সীমিত সংখ্যক রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য নতুন পাইলট প্রকল্প সম্পর্কে অবহিত করেন। উভয়পক্ষ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন কার্যক্রমকে আরও বাড়াতে সম্মত হন।
উভয়পক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের মতামত বিনিময় ও সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেছে।
পররাষ্ট্রসচিব আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ডকে আগামী বছর ঢাকায় অনুষ্ঠাতব্য অংশীদারিত্ব সংলাপের দশম রাউন্ডে আমন্ত্রণ জানান।
সংলাপে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।