তথ্য পরিবর্তন করে ২২ বছর কারারক্ষীর চাকুরী করা প্রতারকের মুখোশ উন্মোচন করলো র্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লা। র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর আভিযানিক দল গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দক্ষিণ শশীদল গ্রামের ভুয়া কারারক্ষী তাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।
এ সময় গ্রেফতারকৃত আসামীর কাছ থেকে তিন সেট কারারক্ষী ইউনিফর্ম, একটি কারারক্ষী জ্যাকেট, এক সেট কারারক্ষী রেইনকোট, ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি-পত্রাদি উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ১০ টার দিকে র্যাব-১১ কার্যালয়ে কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাকিব হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
র্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, ২২ বছর আগে কুমিল্লায় কারারক্ষী পদের নিয়োগ পরীক্ষায় তাজুল ইসলাম অকৃতকার্য হলেও কৃতকার্য হওয়া হবিগঞ্জ জেলার মঈনুদ্দিন খান নামে এক ব্যক্তির পরিচয়, নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য সব কাগজপত্র নকল করে চাকরি নেন তিনি। র্যাব-১১ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাকিব হোসেন জানান, হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার শাহজাহানপুর গ্রামের মো. মঈন উদ্দিন খান ২০০১ সালে কারারক্ষী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজির হয়ে শারীরিক ফিটনেস, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হন। ওই নিয়োগ পরীক্ষায় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া তাজুল ইসলাম অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন।
এদিকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রত্যেকের স্থায়ী ঠিকানায় নিয়োগপত্র পরবর্তীতে ডাকযোগে পাঠানো হবে। পরে কৃতকার্য হবিগঞ্জের মঈনের পরিচয়, নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য সব কাগজপত্র নকল করে চাকরি নেন কুমিল্লার তাজুল ইসলাম। ২০২০ সালের শেষ দিকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে সিলেট বিভাগে প্রায় ২০০ জন কারারক্ষী সিলেটের স্থায়ী বাসিন্দা না হয়েও প্রায় ২০/২২ বছর যাবত চাকরি করে আসছে বলে সংবাদে প্রকাশিত হয়।
এরপরই মঈনের ঘটনাটি সামনে আসে।পরে মঈন এটি নিয়ে আদালতে মামলা করে। মামলার পর তাজুল ইসলাম তাকে ১০ লাখ টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেয়। এতে মঈন রাজি না হলে তাজুল আত্মগোপনে চলে যান। র্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম নামের ভুয়া মইনকে খুঁজতে থাকে। এরমধ্যেই তাজুল লাপাত্তা হয়ে যাওয়ায় র্যাবের সহায়তা চান ওই তদন্ত কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করে তার পরিচয় শনাক্ত করে র্যাব। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। উক্ত বিষয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত পরিচালনাকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে এবং এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।