বিএনপি সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র কাঠামোর যে ২৭ টি রূপরেখা ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে রয়েছে—‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’। এই নীতির মধ্যে প্রত্যেকে ধর্মাবলম্বী তার নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনতা পালন করবে।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি। ‘যারা গায়ের জোরে সরকারে রয়েছে তারা নানান জায়গায় অনাচার সৃষ্টি করেছে’—বলে দাবি করেন খন্দকার মোশাররফ। তিনি বলেন, বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয় মন্দিরে-গির্জায় ইত্যাদি স্থানে হামলা ও লুট করা হচ্ছে। তাদের এসব অপকর্ম বলে শেষ করা যাবে না।
বাংলাদেশকে আমাদের উদ্ধার করতে হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে উদ্ধার করে জনগণের কাছে ফেরত দেব। আওয়ামী লীগের উদ্দেশে এই বিএনপি নেতা বলেন বলেন, তারা আমাদের ধনী এবং গরিবের মধ্যে যে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে, ব্যাংক ডাকাতি করেছে, যারা এসব কাজগুলো করেছে, তারা কখনোই এসব মেরামত করতে পারবে না। এই চিন্তা-চেতনা থেকে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাষ্ট্র কাঠামোর জন্য ২৭ দফা ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন ও আশা সঞ্চার করেছেন।
মোশাররফ বলেন, আমাদের সামনে একটাই চ্যালেঞ্জ এটা হচ্ছে এদেশের মালিক জনগণ। এই জনগণ আমি, আপনি ও সবাই। বাংলাদেশটা এদেশের জনগণের, এই জনগণের দেশকে আওয়ামী লীগের একটি গোষ্ঠী নিজেদের করে নিয়েছে ও লুটপাট করছে। অতএব এই দেশটিকে উদ্ধার করে জনগণকে ফেরত দিতে হবে। সেজন্যই আমাদের ২৭ দফা রূপরেখা। স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে ১০ দফা ঘোষণা করা হয়েছে তার অর্থ হচ্ছে এ সরকারকে আমরা হটাতে চাই। এ সরকারকে না হটাতে পারলে যত অনাচার-অত্যাচার ও অন্যায় রয়েছে, তা আমরা দূর করতে পারব না। গণতন্ত্র না থাকলে কোনো প্রতিষ্ঠানই ঠিকমতো চলতে পারে না। গণতন্ত্রকে হত্যা করে সেটাই আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে। স্বাধীনতার পরেও করেছে বাকশাল গঠন করে, এখন আবার করছে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য, খালেদা জিয়াকে মুক্তি করার জন্য এবং আমাদের নেতা তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা যেই আন্দোলন শুরু করেছি, এই লড়াইয়ে বিজয়ের কোনো বিকল্প নেই। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি কালো অধ্যায় রচিত হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে গিয়েছেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সংখ্যালঘু শব্দ কখনোই ব্যাবহার করে না। দেশে কেউ সংখ্যা লঘু নয়, সবাই সমান। সেই পার্থক্য ঘুচে দিতেই রেইনবো নেশন গঠন করতে চায় বিএনপি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শুকোমল বড়ুয়া, চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও খায়রুল কবির খানমহ আরও অনেকে।