সারাদেশের ন্যায় নওগাঁর সাপাহারে জেঁকে বসেছে শীত। বেশ কয়েকদিন যাবত এইনাগারে শীতের প্রকোপে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিন দিন তাপমাত্রা কমে আসার ফলে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। যার প্রভাব পড়েছে এলাকার খেটে খাওয়া কর্মজীবি মানুষদের উপর।
ফলে কমে গেছে কর্মজীবি অনেক মানুষের কর্মসংস্থান। তবুও শীতের কবল থেকে বাঁচতে উপজেলা সদরের ফুটপাতগুলোতে জমে উঠেছে শীতবস্ত্র কেনাকাটার হিড়িক। শনিবার (১৭ডিসেম্বর) উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্র জিরো পয়েন্টে অবস্থিত ফুটপাতপট্টিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটির উপর পাটি কিংবা চট বিছিয়ে নানা ধরনের কমদামী শীতবস্ত্রের পসরা নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা।
আর কমদামে এই শীতবস্ত্রগুলো কেনার জন্য চারিপাশ ঘিরে ভীড় করছেন ক্রেতারা। ফুটপাতের মাটিতে, ভ্যানে ও টং সাজিয়ে শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে চোখে পড়বে রকমারী নতুন ও পুরনো শীতবস্ত্র। এসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে নতুন ও পুরনো কোট, জ্যাকেট, সোয়েটার, চাদর, বিছানার চাদর সহ মহিলা ও শিশুদের নানা ধরনের বাহারী শীতের পোশাক। টানা কয়েকদিন যাবত শৈত্য প্রবাহ বাড়ার ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত লোকজন এসব দোকানে শীতের কাপড় কেনার জন্য ভিড় করছেন ।
শুধু নিম্ন ও মধ্যবিত্তরাই নয় বরং ধনীরাও খরচ কমাতে কিনছেন এসব শীতবস্ত্র। পুরুষদের পাশাপাশি কমদামে শীতবস্ত্র কেনার সুযোগ হাতছাড়া করছেন না মহিলারাও। এই পট্টিতে শীতবস্ত্র বিক্রয়ের যেন মহা ধুমধাম পড়েছে। ফুটপাতপট্টিতে শীতের কাপড় বেচাকেনা চলে সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। উপজেলা সদরের ফুটপাতপট্টির শীতবস্ত্র বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, আমি এই পট্টিতে সারাবছর নানান ধরনের মৌসুমী কাপড় বিক্রয় করি। অন্যান্য সময় দোকানে কোন কোন দিন ক্রেতার দেখা পর্যন্ত মেলেনা।
কিন্তু শীত মৌসুমে আমার দোকানে হরেক রকমের কালেকশন থাকায় কেনাকাটা বেশ ভালোই হয়। অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীত মৌসুমে দোকানের বিক্রি বাড়ে প্রায় ৩/৪ গুণ। শীতবস্ত্র বিক্রেতা আবদুল বাতেন বলেন, আমরা গরমকালের শেষ দিকে গাট ধরে শীতবস্ত্রগুলো কিনে রাখি। শীত মৌসুমে সেসব কাপড় বের করে স্বল্প লাভে বিক্রয় করি। এতে ক্রেতাসাধারণ যেমন কমদামে কাপড় পায় অপরদিকে আমরা ব্যবসায়ীরাও লাভবান হই। শীতবস্ত্র ক্রেতা ওবাইদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে একটি শীতের কাপড় মার্কেটের ভালো কোন দোকানে কিনতে গেলে সর্বনিম্ন টাকা লাগে ৫’ শ থেকে ১ হাজার।
কিন্তু ফুটপাতে যেমন ভালো কাপড় পাওয়া যায় ঠিক তেমনিভাবে দামটাও সাশ্রয়ী। এতে করে সাধ্যের মধ্যে বাচ্চাদের আবদার সহজেই পূরণ করতে পারি। এছাড়াও পছন্দমতো মানান সই কাপড়গুলোও মিলে এসব ফুটপাতের দোকানে। শীতবস্ত্র ক্রেতা জেবুন্নাহার বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে কেনাকাটা করার জন্য ফুটপাতপট্টিতে এসেছি। দুইটা চাদর কিনেছি সাড়ে ৪শ টাকায়। এই চাদরগুলো অনেকটা মানসম্পন্ন। মার্কেটের কোন দোকানে এই দুটো চাদর কিনতে গেলে ১ হাজারের নিচে পাওয়া যাবে না। শীতের প্রকোপ আরো বাড়লে ফুটপাতপট্টিতে ক্রয়-বিক্রয় আরো বাড়তে পারে। সাশ্রয়ী মূল্যে ক্রয়-বিক্রয়ের ফলে একদিকে ক্রেতারা যেমন খুশি অপরদিকে ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।