বাঙালির আদি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের সামনে নিয়ে আসার প্রত্যয়ে বরগুনায় পালন করা হয়েছে গ্রাম থিয়েটারের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। জমজমাট এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু।
এরপর বিকেলে একটি র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে লঞ্চঘাট থেকে বরগুনার বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া খাকদোন নদীতে রঙিন পতাকা উড়িয়ে ও ঢাকঢোল বাজিয়ে নৌযাত্রা শুরু করে, বিষখালী নদীর মোহনায় গিয়ে তা শেষ হয়। এরপর বড়ই তলা ফেরিঘাটে হয়লা, যাত্রা, নৈলল্লা, পুঁথিপাঠ, রয়নী, রামায়ণ, নীলনৃত্যসহ লোকসংস্কৃতি জমকালোভাবে তুলে ধরেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
আয়োজনে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জানান, হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি দেখে মুগ্ধ তারা। তিথী নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, নৈলল্লা, পুঁথিপাঠ, রয়নী, নীলনৃত্য আমি এর আগে কখনো দেখিনি। সত্যিই অবাক করার মতো অনুষ্ঠান। সাইমা জামান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা গেম-টিভি সিরিয়াল নিয়ে বসে থাকি। অথচ এত সুন্দর সংস্কৃতি আমাদের।
আমরা দাবি জানাই, এমন আয়োজন প্রতি বছর হোক। বরগুনা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুনিরুজ্জামান বলেন, নানা জটিলতায় দিনের পর দিন হারানোর পথে বাঙালি জাতির ৫শ বছরের ঐতিহ্য। বর্তমান সময়ে সেই ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছেন তারা। প্রতি বছরই আয়োজন করা হবে এমন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু সাংবাদিকদের বলেন, গ্রাম্য সংস্কৃতি বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে এমন আয়োজন চলবে দেশজুড়ে।
আমরা গ্রাম থিয়েটারের ৪০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী বরগুনায় উদযাপন করার কারণ হচ্ছে দেশের নদী রক্ষা, পরিবেশ রক্ষাসহ তরুণ প্রজন্মকে আদি সংস্কৃতি ধরে রাখতে উদ্বুদ্ধ করা। এরপর আমরা সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ সারাদেশে এমন আয়োজন করবো। বাঙালির আদি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরে সন্ধ্যা সাতটায় অনুষ্ঠান শেষ করে গ্রাম বাংলা থিয়েটার।