ঢাকা ০৭:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

খালেদা জিয়ার খালাসের দিন হাসিনাকে নিয়ে যা বললেন আইনজীবী

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।  রায় ঘোষণার পর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তার আইনজীবীরা।  আদালতে শুনানি শেষে আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি এবং তার দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ নির্দেশে এ মামলা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাত বছরের সাজা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এই মামলার বাকি দুই আসামির সাজাও বাতিল করেছেন আদালত।

আদালতে শুনানি শেষে আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন। আমাদের লার্নেড সিনিয়র স্যার বলেছেন— এই মামলাটি ছিল মূলত পলিটিক্যাল মুটিভেটের কেস। সেখানে কোনো আইনগত ভিত্তি ছিল না। প্রাইভেট ট্রাস্ট যদি কোনো ডিসপিউপট থাকে; প্রাইভেট ট্রাস্ট অ্যাট দ্বারা তা সলভ করা হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা ওয়াজেদ যিনি বর্তমানে পলাতক আছেন ভারতে এবং আইনের দৃষ্টিতে ফিউজেটিভ তার প্রত্যক্ষ নির্দেশে ও তত্ত্বাবধানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করা জন্য এবং তার দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এ মামলা করা হয়েছিল।

খালেদা জিয়াকে যখন পরীক্ষা করা হয়- আইনি ভাষায় যাকে বলা হয় ৩৪২ যখন দেন; তখন তিনি বলেছিলেন—এ মামলায় আমি নির্দোষ। অনেক বড় একটি লিখিত বক্তব্য তিনি দিয়েছিলেন। এটাও বলেছিলেন, আল্লাহর পরে বিচারকের স্থান। আজকে যদি আমার ওপর অবিচার করা হয়, যারা অবিচার করবেন তারাও একদিন বিচারের মুখোমুখি হবেন। আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ২০১৮ সালের সেই আর্জ আজকে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি সেদিন ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন, তিনি তা পাননি। যারা তার ওপর অবিচার করেছিলেন, তারা কিন্তু এখন আর দেশেই নেই। তাই আইনের শাসনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। খালেদা জিয়ার জন্য আজকে যে শর্ট জার্জমেন্টের কথা আদালত বলেছেন; আপিলে এলাও করেছেন— আমরা সন্তুষ্ট এবং ন্যায়বিচার পেয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া আজকের রায়ের মাধ্যমে।

এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের দণ্ড দিয়েছিলেন আদালত। সেই সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে আজ খালাস দিলেন হাইকোর্ট।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের দেওয়া অর্থদণ্ডের আদেশ স্থগিত করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর গত ৬ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ড মওকুফ করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে করা আপিল শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক তৈরির জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বোরহানউদ্দিনে খাল পরিস্কার – পরিচ্ছন্নতার অভিযানের উদ্বোধন

খালেদা জিয়ার খালাসের দিন হাসিনাকে নিয়ে যা বললেন আইনজীবী

আপডেট সময় ০৩:১৩:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।  রায় ঘোষণার পর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তার আইনজীবীরা।  আদালতে শুনানি শেষে আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি এবং তার দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ নির্দেশে এ মামলা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাত বছরের সাজা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এই মামলার বাকি দুই আসামির সাজাও বাতিল করেছেন আদালত।

আদালতে শুনানি শেষে আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন। আমাদের লার্নেড সিনিয়র স্যার বলেছেন— এই মামলাটি ছিল মূলত পলিটিক্যাল মুটিভেটের কেস। সেখানে কোনো আইনগত ভিত্তি ছিল না। প্রাইভেট ট্রাস্ট যদি কোনো ডিসপিউপট থাকে; প্রাইভেট ট্রাস্ট অ্যাট দ্বারা তা সলভ করা হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা ওয়াজেদ যিনি বর্তমানে পলাতক আছেন ভারতে এবং আইনের দৃষ্টিতে ফিউজেটিভ তার প্রত্যক্ষ নির্দেশে ও তত্ত্বাবধানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করা জন্য এবং তার দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এ মামলা করা হয়েছিল।

খালেদা জিয়াকে যখন পরীক্ষা করা হয়- আইনি ভাষায় যাকে বলা হয় ৩৪২ যখন দেন; তখন তিনি বলেছিলেন—এ মামলায় আমি নির্দোষ। অনেক বড় একটি লিখিত বক্তব্য তিনি দিয়েছিলেন। এটাও বলেছিলেন, আল্লাহর পরে বিচারকের স্থান। আজকে যদি আমার ওপর অবিচার করা হয়, যারা অবিচার করবেন তারাও একদিন বিচারের মুখোমুখি হবেন। আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ২০১৮ সালের সেই আর্জ আজকে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি সেদিন ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন, তিনি তা পাননি। যারা তার ওপর অবিচার করেছিলেন, তারা কিন্তু এখন আর দেশেই নেই। তাই আইনের শাসনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। খালেদা জিয়ার জন্য আজকে যে শর্ট জার্জমেন্টের কথা আদালত বলেছেন; আপিলে এলাও করেছেন— আমরা সন্তুষ্ট এবং ন্যায়বিচার পেয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া আজকের রায়ের মাধ্যমে।

এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের দণ্ড দিয়েছিলেন আদালত। সেই সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে আজ খালাস দিলেন হাইকোর্ট।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের দেওয়া অর্থদণ্ডের আদেশ স্থগিত করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর গত ৬ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ড মওকুফ করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে করা আপিল শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক তৈরির জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।