বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রভাব পড়েছে রাজনীতি, প্রশাসন, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে। পাল্টে যাচ্ছে চিরচেনা রূপ। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী ঘরনার সুবিধা ভোগী কিছু কর্মকর্তাগণ রাতারাতি দল পরিবর্তনের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। দখলে রেখেছেন পুর্বাঞ্জল রেলওয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ।
আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের বাজেট পায় রেলওয়ে। যার ৯০ শতাংশ নতুন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই অর্থ তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী এমপিদের লুটপাটের সহযোগী হিসেবে ছিলেন রেলের আওয়ামী ঘরানার কিছু উদ্ধতর্ন কর্মকর্তাগণ। এদের প্রভাবে রেলের বাকি কর্মকর্তারা ছিলেন একপ্রকার অসহায়, বঞ্চিত ও নির্যাতিত।
রেলওয়ে পুর্বাঞ্জলে আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের মধ্যে সবচেয়ে সুবিধাভোগী এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হলেন রেলওয়ে পুর্বাঞ্জলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া। ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানায় বাড়ি হওয়ায় তিনি ক্ষমতার প্রভাব দেখাতে শুরু করেন। প্রধান প্রকৌশলী(পূর্ব) চট্টগ্রাম হিসেবে পদায়িত হওয়ার পর থেকে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করে যাচ্ছেন তিনি। তার মনোনীত ঠিকাদার ছাড়া অন্য কেউ টেন্ডারে অংশ নিতে পারে না বা নেওয়ার সাহস পায় না।যারা কাজ পাই মোহাম্মদ আবু জাফর মিয়া আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠান এস এ কর্পোরেশন সহ এক বিশাল সিন্ডিকেট ঠিকাদার সদস্যরা। সরকারের অত্যন্ত বিশ্বস্ত কর্মকর্তা হওয়ায় তাকে ভারতের পূর্বাঞ্চলে করিডোর হিসেবে ব্যবহারের জন্য নির্মিত আখাউড়া -আগরতলা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। জানা যায় যে, শেখ হাসিনার সাথে জাফর মিয়া যতবার দেখা করতেন ততবারই তার পদধূলি মাথায় নিতেন। তার পদে কোন কর্মকর্তা আসার চিন্তা করলেই তাকে তিনি বিএনপি জামাত হিসেবে চিহ্নিত করে তার পদায়ন ঠেকিয়ে দিতেন। এই কর্মকর্তা আখাউড়া -আগরতলা প্রকল্প এবং গেট কিপার নিয়োগে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। সবর্শেষ ১লা আগস্ট ২০২৪ এ প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু জাফর মিয়া চট্টগ্রামের মার্শালিং ইয়াডে Saloon shed নির্মাণের জন্য দরপত্র আহব্বান করেন, এবং কাজটি পায় তার বিশ্বত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। অথচ কোন প্রয়োজন ছাড়াই চট্টগ্রামের এই মার্শালিং ইয়াডে Saloon shed নির্মাণের জন্য দরপত্র আহব্বান করেন তিনি। প্রয়োজন ছাড়া এই কাজ বর্তমানে সরকারের টাকা অপচয় করার প্রকল্প। এভাবে তিনি প্রয়োজন ছাড়া অনেকগুলো প্রকল্প তৈরি লক্ষ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। নিজের এলাকায় শত শত বিঘা জমি ক্রয়ের পাশাপাশি তিনি অবৈধ বড় একটা অংশ বিদেশে পাচার করেছেন বলে তথ্য আছে। এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় চীফ কমার্শিয়াল বাণিজ্যিক বিভাগ পূর্ব কার্যালয়ে থেকে দরপত্র পত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবৈধভাবে অন বোর্ড ও ক্যাটারিং,প্রতিটি রেলস্টেশনে নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধভাবে দোকান,হোটেল,আবাসিক হোটেল,গোডাউন সহ বাংলাদেশ রেলওয়ে কে ফ্রি ওয়াশিং নামে করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিয়ে লক্ষ কোটি টাকা হরি লোড করছে এস এ কর্পোরেশন সহ এক বিশাল সিন্ডিকেট সদস্যরা আর অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে । সূত্রে আরও জানা যায় প্রধান ভৃ-সম্পত্তি কর্মকর্তা পূর্ব বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম থেকে এক বছরের জন্য ইজারা নিয়ে আইস ফ্যাক্টরি রোডে এক বিশাল মার্কেট নির্মাণ করেন অবৈধভাবে (শাহ আমানত রেলওয়ে সুপার মার্কেট)চট্টগ্রাম নতুন ও পুরাতন স্টেশনের দরপত্র মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবৈধভাবে পরিচালনা করতেছে এস এ কর্পোরেশনসহ এক বিশাল সিন্ডিকেট আর অর্থনৈতিকভাবে প্রতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।৷
রেলওয়ের গোপন সূত্রে জানা যায় আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি ফ্লোর অবৈধভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে কম মূল্য দেখিয়ে লিজ নিয়ে নেন এস এ কর্পোরেশন। এই এক কর্মকর্তা ছাড়াও রেলওয়েতে আছে আরো অনেক আওয়ামী সুবিধাবী এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও সিন্ডিকেট ঠিকাদার সদস্যরা।