ঢাকা ০৬:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশ ও জাতির কল্যাণে ছাত্রজনতার বিজয় নিশ্চিত করতে জামায়াত বদ্ধপরিকর ডা: শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর জননেতা ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশ ও জাতির কল্যাণে ছাত্রজনতার বিজয় নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বদ্ধপরিকর। একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ছাত্রজনতা ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দূর্বার ছাত্র অন্দোলন গড়ে তুলে।

হাজারো ছাত্রজনতার শাহাদাত, জেল জুুলুম, হামলা-মামলা ও অসংখ্য মানুষের রক্ত সিঁড়ি মাড়িয়ে গত ৫ আগষ্ট ছাত্রজনতা ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে এবং দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত করে। এটি একটি বড় বিজয়। এ বিজয়ের মাধ্যমে ছাত্রজনতা একটি বৈষম্য বিরোধী দূনীতিমুক্ত সুখী সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখে। দীর্ঘ ১৫ বছরের ভোট বিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে যে দু:শাসন তারা কায়েম করেছিল তার বিপরীতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যামে সরকার গঠন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সমূহকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত ও বৈষম্যমুক্ত করণ, বিচারপ্রার্থীদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, দূর্নীতিমুক্ত সকল রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির জন্য দায়ী ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের মূল্যেৎপাটন, দেশের সর্বত্র চাঁদাবাজ লুন্ঠন ও নৈরাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যামে দেশের আপামর জনতার কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে।

সরকারকে অতি দ্রুত দেশের জন্য গণতন্ত্রের জন্য হুমকি এমন ব্যক্তি ও দলকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একটি সুখী সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র গড়তে হলে দেশপ্রেমিক সৎ ও যোগ্য লোকদের রাষ্টীয় দায়িত্ব অর্পন করতে হবে, যারা দেশ ও জনগণের সম্পদ রক্ষায় অতন্ত্র প্রহরীর ভ‚মিকা পালন করবে। যারা নৈতিক অবস্থান থেকে জনগণের সম্পদের আমানতদার হবে। আল্লাহর দরবারে কঠিন জবাবদিহির ভয় লালন করবে। শুধু মুখের কথা ও শ্লোগানে নয়, সত্যিকার অর্থে মানব কল্যাণ ও দেশ সেবায় পরীক্ষিত সৎ ও যোগ্য লোকদের সাহসিকতার সাথে অংশগ্রহণ করতে প্রস্তত থাকতে হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম জেলা উক্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।

চট্টগ্রাম নগরীর সুপরিসর আর.বি কনভেশন হল এ আয়োজিত চট্টগ্রাম অঞ্চলের টীম সদস্য ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জননেতা অধ্যাপক আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারী যখাক্রমে অধ্যাপক আলাউদ্দীন সিকদার ও অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল জননেতা মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম অঞ্চল র্টীম সদস্য অধ্যক্ষ আমিরুজ্জামান, অধ্যাপক জাফর সাদেক, চটগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের আমীর জননেতা অধ্যক্ষ নুরুল আমিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর জননেতা আনোয়ারুল আলম চৌধুরী। সম্মেলনে উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলার কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দসহ দুইসহ¯্রাধিক সদস্য (রুকন) উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল জনাব মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, জামায়াত একটি অত্যন্ত সুশৃংখল আর্দশবাদী দল, এ দলের সদস্যরা ইসলামী আর্দশের মূর্ত প্রতীক হবে। দেশের প্রয়োজনে মানবতার কল্যাণে জামায়াতের সদস্যরা সার্বক্ষনিক সজাগ ও সচেতন থেকে দায়িত্ব পালন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফ্যাসিবাদী হাসিনার দীর্ঘ পনের বছরের দু:শাসনে জামায়াত হামলা মামলাসহ নির্মম জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছে, শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দিয়েছে, দেশের কোথাও প্রকাশ্যে মিছিল সমাবেশে করতে দেয়নি। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও প্রশাসন ব্যবস্থাকে জিম্মি করে এদেশের মুক্তিকামী দেশপ্রেমিক জনতাকে তৃতীয় শ্রেনীর নাগরিকে পরিণত করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। এরপরও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ও সংগ্রাম থেকে পিছু হটেননি। আগামী দিনেও ইসলাম প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামীর সদস্যগণকে সর্বোচ্চ কুরবানীর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ আমিরুজ্জামান বলেন, মানুষের কল্যাণের জন্য সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠাই জামায়াতের মূল লক্ষ্য। দূর্নীতি, অশান্তি ও বিশৃংখলা সৃষ্টির মূল কারণ অসৎ নেতৃত্ব। তিনি জামায়াতের সদস্যরা অসৎ নেতৃত্বের বিপরীতে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রামে এগিয়ে আসার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথি অধ্যাপক জাফর সাদেক বলেন, জামায়াতের সদস্যরা আখেরাতের সফলতাকে চ‚ড়ান্ত সফলতা হিসাবে তাদের সমস্ত তৎপরতা পরিচালিত করবে। দুনিয়ার লোভ, পদ-পদবীর প্রত্যাশা, যশ-খ্যাতির মোহ যাতে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে বাধা হয়ে দাড়াতে না পারে সেজন্য নিজেকে সার্বক্ষনিক পাহারাদারিত্ব করতে হবে। একজন সদস্যের নির্ধারিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করার মধ্য দিয়ে আতশুদ্ধির পথে নিজেকে এগিয়ে নিতে হবে।
উত্তর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন সুসংগঠিত ইসলামী দল। এদলের সদস্যদের আনুগত্য শৃংখলা ও সংগঠনের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রæতির প্রতি একনিষ্ট দৃঢ়তা সংগঠনকে সাফল্যের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে ইনশাল্লাহ।
দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর জননেতা আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশের তাওহীদি জনতার প্রাণের সংগঠন। স্বাধীনতা পরবর্তী সকল আন্দোলন সংগ্রামে এই সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শহীদের রক্তাত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এদেশের তাওহীদ জনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের আশা আকাংখার চারণভুমি। অতীতের মত ভবিষ্যতেও দক্ষিণ চট্টগ্রামের শহীদি ময়দানে যেকোন সংগ্রাম ও নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনকে বিজয় করার জন্য জামায়াতের রুকন ভাইদের অগ্রণী ভুমিকা পালন উদাত্ত আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে জননেতা অধ্যাপক আহসান উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে ঐতিহাসিক সুশৃংখল ও মডেল সংগঠন। এই সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে সদস্যদের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ভোটে হয়ে থাকে। নেতৃত্ব নির্বাচনের মূলভিত্তি হলো তাকওয়া। জামায়াতের সদস্যরা নেতৃত্ব নির্বাচনের ব্যাপারে অবশ্যই যোগ্য, দক্ষ, সৎ ও দায়িত্বের প্রতি লোভহীন ব্যক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়েই নেতৃত্ব নির্বাচন করে থাকেন। এই সম্মেলনে ও জামায়াতে সদস্য ভাইয়েরা অবশ্যই এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে নেতৃত্ব নির্বাচনের ব্যাপারে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য, সদস্য সম্মেলনে উপস্থিত দুইসহস্রাধিক পুরুষ ও মহিলা ভাই-বোনদের প্রত্যক্ষ ভোটে আগামী ২০২৫-২০২৬ সেশনের চটগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলার আমীর নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা অর্থাৎ ভোটগ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক আহসান উল্লাহ ও জাফর সাদেক নির্বাচন কমিশন হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ জাকারিয়া, অধ্যক্ষ মাওলানা জহিরুল ইসলাম, ড. ছাবের আহমদ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক ফজলুল করিম, জেলা সাংগঠনিক সেক্রেটারি যথাক্রমে জনাব আনোয়ার ছিদ্দিক চৌধুরী ও এডভোকেট আবু নাছের প্রমুখ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

দেশ ও জাতির কল্যাণে ছাত্রজনতার বিজয় নিশ্চিত করতে জামায়াত বদ্ধপরিকর ডা: শফিকুর রহমান

আপডেট সময় ০২:৫৪:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর জননেতা ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশ ও জাতির কল্যাণে ছাত্রজনতার বিজয় নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বদ্ধপরিকর। একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ছাত্রজনতা ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দূর্বার ছাত্র অন্দোলন গড়ে তুলে।

হাজারো ছাত্রজনতার শাহাদাত, জেল জুুলুম, হামলা-মামলা ও অসংখ্য মানুষের রক্ত সিঁড়ি মাড়িয়ে গত ৫ আগষ্ট ছাত্রজনতা ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে এবং দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত করে। এটি একটি বড় বিজয়। এ বিজয়ের মাধ্যমে ছাত্রজনতা একটি বৈষম্য বিরোধী দূনীতিমুক্ত সুখী সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখে। দীর্ঘ ১৫ বছরের ভোট বিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে যে দু:শাসন তারা কায়েম করেছিল তার বিপরীতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যামে সরকার গঠন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সমূহকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত ও বৈষম্যমুক্ত করণ, বিচারপ্রার্থীদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, দূর্নীতিমুক্ত সকল রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির জন্য দায়ী ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের মূল্যেৎপাটন, দেশের সর্বত্র চাঁদাবাজ লুন্ঠন ও নৈরাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যামে দেশের আপামর জনতার কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে।

সরকারকে অতি দ্রুত দেশের জন্য গণতন্ত্রের জন্য হুমকি এমন ব্যক্তি ও দলকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একটি সুখী সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র গড়তে হলে দেশপ্রেমিক সৎ ও যোগ্য লোকদের রাষ্টীয় দায়িত্ব অর্পন করতে হবে, যারা দেশ ও জনগণের সম্পদ রক্ষায় অতন্ত্র প্রহরীর ভ‚মিকা পালন করবে। যারা নৈতিক অবস্থান থেকে জনগণের সম্পদের আমানতদার হবে। আল্লাহর দরবারে কঠিন জবাবদিহির ভয় লালন করবে। শুধু মুখের কথা ও শ্লোগানে নয়, সত্যিকার অর্থে মানব কল্যাণ ও দেশ সেবায় পরীক্ষিত সৎ ও যোগ্য লোকদের সাহসিকতার সাথে অংশগ্রহণ করতে প্রস্তত থাকতে হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম জেলা উক্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।

চট্টগ্রাম নগরীর সুপরিসর আর.বি কনভেশন হল এ আয়োজিত চট্টগ্রাম অঞ্চলের টীম সদস্য ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জননেতা অধ্যাপক আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারী যখাক্রমে অধ্যাপক আলাউদ্দীন সিকদার ও অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল জননেতা মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম অঞ্চল র্টীম সদস্য অধ্যক্ষ আমিরুজ্জামান, অধ্যাপক জাফর সাদেক, চটগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের আমীর জননেতা অধ্যক্ষ নুরুল আমিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর জননেতা আনোয়ারুল আলম চৌধুরী। সম্মেলনে উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলার কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দসহ দুইসহ¯্রাধিক সদস্য (রুকন) উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল জনাব মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, জামায়াত একটি অত্যন্ত সুশৃংখল আর্দশবাদী দল, এ দলের সদস্যরা ইসলামী আর্দশের মূর্ত প্রতীক হবে। দেশের প্রয়োজনে মানবতার কল্যাণে জামায়াতের সদস্যরা সার্বক্ষনিক সজাগ ও সচেতন থেকে দায়িত্ব পালন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফ্যাসিবাদী হাসিনার দীর্ঘ পনের বছরের দু:শাসনে জামায়াত হামলা মামলাসহ নির্মম জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছে, শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দিয়েছে, দেশের কোথাও প্রকাশ্যে মিছিল সমাবেশে করতে দেয়নি। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও প্রশাসন ব্যবস্থাকে জিম্মি করে এদেশের মুক্তিকামী দেশপ্রেমিক জনতাকে তৃতীয় শ্রেনীর নাগরিকে পরিণত করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। এরপরও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ও সংগ্রাম থেকে পিছু হটেননি। আগামী দিনেও ইসলাম প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামীর সদস্যগণকে সর্বোচ্চ কুরবানীর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ আমিরুজ্জামান বলেন, মানুষের কল্যাণের জন্য সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠাই জামায়াতের মূল লক্ষ্য। দূর্নীতি, অশান্তি ও বিশৃংখলা সৃষ্টির মূল কারণ অসৎ নেতৃত্ব। তিনি জামায়াতের সদস্যরা অসৎ নেতৃত্বের বিপরীতে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রামে এগিয়ে আসার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথি অধ্যাপক জাফর সাদেক বলেন, জামায়াতের সদস্যরা আখেরাতের সফলতাকে চ‚ড়ান্ত সফলতা হিসাবে তাদের সমস্ত তৎপরতা পরিচালিত করবে। দুনিয়ার লোভ, পদ-পদবীর প্রত্যাশা, যশ-খ্যাতির মোহ যাতে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে বাধা হয়ে দাড়াতে না পারে সেজন্য নিজেকে সার্বক্ষনিক পাহারাদারিত্ব করতে হবে। একজন সদস্যের নির্ধারিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করার মধ্য দিয়ে আতশুদ্ধির পথে নিজেকে এগিয়ে নিতে হবে।
উত্তর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন সুসংগঠিত ইসলামী দল। এদলের সদস্যদের আনুগত্য শৃংখলা ও সংগঠনের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রæতির প্রতি একনিষ্ট দৃঢ়তা সংগঠনকে সাফল্যের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে ইনশাল্লাহ।
দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর জননেতা আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশের তাওহীদি জনতার প্রাণের সংগঠন। স্বাধীনতা পরবর্তী সকল আন্দোলন সংগ্রামে এই সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শহীদের রক্তাত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এদেশের তাওহীদ জনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের আশা আকাংখার চারণভুমি। অতীতের মত ভবিষ্যতেও দক্ষিণ চট্টগ্রামের শহীদি ময়দানে যেকোন সংগ্রাম ও নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনকে বিজয় করার জন্য জামায়াতের রুকন ভাইদের অগ্রণী ভুমিকা পালন উদাত্ত আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে জননেতা অধ্যাপক আহসান উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে ঐতিহাসিক সুশৃংখল ও মডেল সংগঠন। এই সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে সদস্যদের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ভোটে হয়ে থাকে। নেতৃত্ব নির্বাচনের মূলভিত্তি হলো তাকওয়া। জামায়াতের সদস্যরা নেতৃত্ব নির্বাচনের ব্যাপারে অবশ্যই যোগ্য, দক্ষ, সৎ ও দায়িত্বের প্রতি লোভহীন ব্যক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়েই নেতৃত্ব নির্বাচন করে থাকেন। এই সম্মেলনে ও জামায়াতে সদস্য ভাইয়েরা অবশ্যই এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে নেতৃত্ব নির্বাচনের ব্যাপারে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য, সদস্য সম্মেলনে উপস্থিত দুইসহস্রাধিক পুরুষ ও মহিলা ভাই-বোনদের প্রত্যক্ষ ভোটে আগামী ২০২৫-২০২৬ সেশনের চটগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলার আমীর নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা অর্থাৎ ভোটগ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক আহসান উল্লাহ ও জাফর সাদেক নির্বাচন কমিশন হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ জাকারিয়া, অধ্যক্ষ মাওলানা জহিরুল ইসলাম, ড. ছাবের আহমদ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক ফজলুল করিম, জেলা সাংগঠনিক সেক্রেটারি যথাক্রমে জনাব আনোয়ার ছিদ্দিক চৌধুরী ও এডভোকেট আবু নাছের প্রমুখ।