মাদারীপুরের শিবচরে মাদক কিনতে আসা ৪ যুবককে জুতাপেটা ও লাঠিপেটাসহ কান ধরে উঠবসের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দুই পিরজাদার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবারের ঘটনা হলেও রোববার দুপুরে বিষয়টি জানাজানি হয়। এর মধ্যে এ ঘটনার দুটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
স্থানীয়দের ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবককে কান ধরে উঠবস করানো হচ্ছে। পরে তাকে লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে। এমনকি ওই যুবকের দুই গালে জুতাপেটা করতে বাধ্য করা হয়।
অপর ভিডিওতে দেখা যায়, একে একে ৩ যুবককে লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধর করছেন এক ব্যক্তি। পরে তাদের সবাইকে কান ধরে উঠসব করানোর নির্দেশ দিচ্ছেন আরেকজন। এ ঘটনার ভিডিও করতে সবাইকে উৎসাহ করেন অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি। ভবিষ্যতে কেউ এলাকায় মাদক কিনতে এলে উলঙ্গ করে ঝুলিয়ে রাখার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকালে মাদারীপুরের শিবচরের বাহাদুরপুরে মাদক কিনতে আসেন শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল গ্রামের শামসুল মোল্লার ছেলে শহিদুল ইসলাম। এ সময় শহিদুলকে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে খবর দেওয়া হয় শিবচরের বাহাদুরপুরের পির সাহেব মাওলানা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান সাহেবের ছোটভাই পিরজাদা হাফেজ মাওলানা মো. মোহসেন ও চাচাতো ভাই পিরজাদা হাফেজ মাওলানা হানজালাকে।
এরপর মোহসেন ও হানজালা কানধরে উঠসব করান শহিদুলকে। একপর্যায়ে শহিদুলকে লাঠিপেটা ও জুতাপেটা করানোর অভিযোগ ওঠে ওই দুই পিরজাদার বিরুদ্ধে। কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যায় একই এলাকায় আরও তিন যুবক মাদক কিনতে আসছেন- এমন অভিযোগে আটক করেন এলাকাবাসী। পরে একইভাবে ওই তিন যুবককে লাঠিপেটা ও জুতাপেটা করা হয়। এ ঘটনার দুটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে জেলাজুড়ে।
অভিযোগ অস্বীকার করে পিরজাদা হাফেজ মাওলানা মো. মোহসেন বলেন, আমরা কাউকে মারধর করিনি ও জুতাপেটাও করিনি। তবে যারা মাদক কিনতে এসেছিল তাদের ভয় দেখাইছি। বিষয়টি নিয়ে এলাকার মাদবররা উঠেপড়ে লেগেছেন, কারণ তারা মাদক বিক্রির টাকা থেকে কমিশন পান। আমরা চাই, এলাকায় কোনো মাদক সংশ্লিষ্ট কাজ হবে না। তাই এমন উদ্যোগ নিয়েছি।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. মারুফুর রশীদ খান বলেন, আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারো নেই। কাউকে প্রকাশ্যে এমন বিচার করা আইনবিরোধী। ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।