ঢাকা ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পটুয়াখালী-৩ আসনে নুরকে সহযোগিতার নির্দেশ বিএনপির পটুয়াখালীতে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ রেজিষ্ট্রি অফিসের দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেট ভাঙতে পদক্ষেপ, কর্মকর্তাকে বেকায়দায় ফেলার অপচেষ্টা ছাত্র-জনতার অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করবে যুবদল: মঈন খান ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১১৯৭ ডিএমসিআরএস এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মুখপাত্র হলেন আবিদ দুর্গাপুরে ইউএনও সাবরিনা শারমিনের সাহসী ভূমিকায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পাবনা র‍্যাবের অভিযানে ২১ গ্রাম হেরোইনসহ ০১জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ভোলায় জেলে চাল চুরির দায়ে যুবদল নেতা বহিষ্কার, তদন্ত কমিটি গঠন

সিলেটে পানিবন্দি তিন লাখ মানুষ. হুমকির মুখে নগরী

filter: 0; fileterIntensity: 0.0; filterMask: 0; captureOrientation: 0; module: photo; hw-remosaic: false; touch: (-1.0, -1.0); modeInfo: ; sceneMode: 8; cct_value: 0; AI_Scene: (-1, -1); aec_lux: 75.0; aec_lux_index: 0; hist255: 0.0; hist252~255: 0.0; hist0~15: 0.0; albedo: ; confidence: ; motionLevel: 0; weatherinfo: null; temperature: 36;

উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সিলেটের নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে। জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্লাবিত হয়েছে শতাধিক গ্রাম। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার ৫ হাজার ৬০১ হেক্টর জমির ফসল। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সিলেটের সব পর্যটন কেন্দ্র।

সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সিলেট-তামাবিল সড়ক। জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ অনেকটা বন্ধ হয়ে পড়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে।

সিলেট নগরীর বেশকিছু এলাকাতে ও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। নগরীর মাছিমপুর, মেন্দিবাগ, আলমপুরে গতকালই বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। ঝুঁকিতে আছে নগরীর কালিঘাট, শেখঘাট, কাজির বাজারসহ বাণিজ্যিক এলাকাসমূহ।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন জানান, চলতি মাসে সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। গত বছরের মে মাসে ৩৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। এবার মে মাসে হয়েছে ৭০৫ মিলিমিটার। এর আগে ২০২২ সালের প্রলয়ঙ্করী বন্যার সময়ে মে মাসে সিলেটে ৮৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল।

পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, সুরমা, কুশিয়ারা, সারি ও গোয়াইন নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বাড়ছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৪২ হাজার ৯০০টি পরিবার দুর্যোগ কবলিত। প্রায় আড়াই লাখ মানুষ দুর্ভোগে। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ২ হাজার ৩৫৬ জন আশ্রয় নিয়েছেন।

তিনি জানান, মানুষের পাশাপাশি ৬৪৫টি গবাদিপশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপজেলায় ১০টি মেডিকেল টিম চালু করা হয়েছে। কৃষি জমি তলিয়ে গেছে ১ হাজার ৬৬০ হেক্টর।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে ও নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। জেলার পাঁচটি উপজেলায় জরুরি ভিত্তিতে প্রায় ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনে তা বাড়ানো হবে।

জেলা প্রশাসন জানায়, জেলায় জরুরি ভিত্তিতে ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এরমধ্যে গোয়াইনঘাটে ৫৬টি, জৈন্তাপুরে ৪৮টি, কানাইঘাটে ১৮টি, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫টি, জকিগঞ্জে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। বাকি আশ্রয়কেন্দ্রগুলো অন্যান্য উপজেলায় রয়েছে।

সিলেটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মোহাম্মদ আনিছুজ্জামান জানান, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জে মোট ৫ হাজার ৬০১ হেক্টর আউশ ধান, আউশ বীজতলা ও সবজিখেত তলিয়ে গেছে। তবে এখনই ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা যাচ্ছে না।

জৈন্তাপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানান, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য আপাতত শুকনো খাবার জরুরি। আমরা তাই করছি। চাল বরাদ্দ থাকলেও রান্না করে খাওয়ার মতো শুকনো জায়গা নেই।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসাইন জানান, বন্যা পরিস্থিতি গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি খারাপ। সেখানে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।

গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন জানায়, আকস্মিক বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, ফায়ারসার্ভিস, আনসার ভিডিপি ছাড়াও জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক কর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সামাজিক সংগঠন কাজ করছে।

এদিকে বন্যাকবলিত জৈন্তাপুর পরিদর্শন করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা আক্তার সিমুল। এ সময় সঙ্গে ছিলেন- জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া, সহকারী কমিশনার ভূমি ফাতেমা তুজ জোহরা সানিয়া, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া জানান, সেনাবাহিনী বিজিবি ফায়ার সার্ভিস পুলিশ উদ্ধার কাজ করছে, আমি সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পটুয়াখালী-৩ আসনে নুরকে সহযোগিতার নির্দেশ বিএনপির

সিলেটে পানিবন্দি তিন লাখ মানুষ. হুমকির মুখে নগরী

আপডেট সময় ১১:১৯:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪

উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সিলেটের নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে। জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্লাবিত হয়েছে শতাধিক গ্রাম। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার ৫ হাজার ৬০১ হেক্টর জমির ফসল। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সিলেটের সব পর্যটন কেন্দ্র।

সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সিলেট-তামাবিল সড়ক। জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ অনেকটা বন্ধ হয়ে পড়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে।

সিলেট নগরীর বেশকিছু এলাকাতে ও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। নগরীর মাছিমপুর, মেন্দিবাগ, আলমপুরে গতকালই বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। ঝুঁকিতে আছে নগরীর কালিঘাট, শেখঘাট, কাজির বাজারসহ বাণিজ্যিক এলাকাসমূহ।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন জানান, চলতি মাসে সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। গত বছরের মে মাসে ৩৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। এবার মে মাসে হয়েছে ৭০৫ মিলিমিটার। এর আগে ২০২২ সালের প্রলয়ঙ্করী বন্যার সময়ে মে মাসে সিলেটে ৮৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল।

পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, সুরমা, কুশিয়ারা, সারি ও গোয়াইন নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বাড়ছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৪২ হাজার ৯০০টি পরিবার দুর্যোগ কবলিত। প্রায় আড়াই লাখ মানুষ দুর্ভোগে। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ২ হাজার ৩৫৬ জন আশ্রয় নিয়েছেন।

তিনি জানান, মানুষের পাশাপাশি ৬৪৫টি গবাদিপশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপজেলায় ১০টি মেডিকেল টিম চালু করা হয়েছে। কৃষি জমি তলিয়ে গেছে ১ হাজার ৬৬০ হেক্টর।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে ও নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। জেলার পাঁচটি উপজেলায় জরুরি ভিত্তিতে প্রায় ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনে তা বাড়ানো হবে।

জেলা প্রশাসন জানায়, জেলায় জরুরি ভিত্তিতে ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এরমধ্যে গোয়াইনঘাটে ৫৬টি, জৈন্তাপুরে ৪৮টি, কানাইঘাটে ১৮টি, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫টি, জকিগঞ্জে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। বাকি আশ্রয়কেন্দ্রগুলো অন্যান্য উপজেলায় রয়েছে।

সিলেটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মোহাম্মদ আনিছুজ্জামান জানান, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জে মোট ৫ হাজার ৬০১ হেক্টর আউশ ধান, আউশ বীজতলা ও সবজিখেত তলিয়ে গেছে। তবে এখনই ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা যাচ্ছে না।

জৈন্তাপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানান, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য আপাতত শুকনো খাবার জরুরি। আমরা তাই করছি। চাল বরাদ্দ থাকলেও রান্না করে খাওয়ার মতো শুকনো জায়গা নেই।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসাইন জানান, বন্যা পরিস্থিতি গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি খারাপ। সেখানে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।

গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন জানায়, আকস্মিক বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, ফায়ারসার্ভিস, আনসার ভিডিপি ছাড়াও জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক কর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সামাজিক সংগঠন কাজ করছে।

এদিকে বন্যাকবলিত জৈন্তাপুর পরিদর্শন করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা আক্তার সিমুল। এ সময় সঙ্গে ছিলেন- জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া, সহকারী কমিশনার ভূমি ফাতেমা তুজ জোহরা সানিয়া, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া জানান, সেনাবাহিনী বিজিবি ফায়ার সার্ভিস পুলিশ উদ্ধার কাজ করছে, আমি সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।