ঢাকা ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া গণপূর্তের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ছয় প্রকল্প বাতিল দাউদকান্দিতে অবৈধভাবে এলপিজি গ্যাস বোতলজাতকরণের দায়ে ৩ জনকে সাজা প্রদান চাঁপাইনবাবগঞ্জে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবসে আলোচনা সভা বোরহানউদ্দিনে উত্তর-টবগী রাস্তার মাথা জামে মসজিদের সভাপতি বাচ্চু পন্ডিত- সম্পাদক- আলম ফরাজি তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই ট্রাকে অভিনব কায়দায় লুকানো ১৯৮ বোতল ফেনসিডিলসহ ০৩ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১৩ মোবাইল চার্জে দিয়ে ঘুম, বিস্ফোরণে চিকিৎসকের মৃত্যু। দেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ড. ইউনূস নাম-পরিচয় গোপন করেও রক্ষা হলোনা বিএনপি নেতা চুন্নুর! মুরাদনগরে অর্থ আত্নসাতের অভিযোগ:প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ

রোহিঙ্গা গণহত্যা : বিচারে ওআইসির সহ‌যো‌গিতা চাইল বাংলা‌দেশ

রোহিঙ্গা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) চলমান মামলা পরিচালনায় ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা চে‌য়ে‌ছে বাংলা‌দেশ।

বৃহস্প‌তিবার (১০ নভেম্বর) জেদ্দায় রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতার বিষয়ে ওআইসি মন্ত্রী পর্যায়ের অ্যাডহক কমিটির বৈঠকে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এ সহযোগিতা চান।

সভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এবং গাম্বিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রী দাওদা জালো।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ সীমিত সাধ্যের মধ্যে ইতোমধ্যে আইসিজেতে মামলা পরিচালনার জন্য স্বেচ্ছাসেবী তহবিলে ইতিমধ্যেই ৫ লাখ ডলার দিয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি আরও দুই লাখ ডলার দেওয়ার পথে রয়েছে।

রাষ্ট্রদূত আইসিজেতে মামলা পরিচালনার জন্য সৌদি আরব, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, কুয়েত, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, আফগানিস্তান এবং ইসলামিক সলিডারিটি ফান্ডসহ কয়েকটি দেশের স্বেচ্ছামূলক অবদান এবং অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, অনেক দেশের সাহায্য সহযোগিতা পাওয়ার পরও প্রাপ্ত অর্থ প্রয়োজনীয় পরিমাণ থেকে অনেক কম, তাই তিনি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা পরিচালনার জন্য উদারভাবে অবদান রাখার আহ্বান জানান।

রোহিঙ্গা গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজেতে মামলা দায়েরের জন্য গাম্বিয়ার প্রতিনিধিদল, ওআইসি সদস্য রাষ্ট্র এবং ওআইসি সচিবালয়ের প্রতি রাষ্ট্রদূত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মাধ্যমে এর সমাধান একটি দীর্ঘমেয়াদী বিষয় এবং আমাদের অবশ্যই এর প্রতি নিবিড় কার্যক্রম বজায় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, গাম্বিয়ার দায়ের করা এ মামলার প্রতি আমাদের সবার পূর্ণ সংহতি, সমর্থন এবং সহযোগিতা প্রয়োজন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে ২০১৭ সালে তিনটি চুক্তি স্বাক্ষরের পর ও মিয়ানমারে আমরা একজন শরণার্থীও ফেরত পাঠাতে পারিনি এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর জন্য মিয়ানমারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারিনি। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হলে তার সুদূরপ্রসারী স্থানীয় ও আঞ্চলিক নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে উপস্থিত সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাষ্ট্রদূত।

জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ওআইসিসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সার্বক্ষণিক সমর্থন কামনা করে। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা এবং তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়ার জন্য আইনি সহায়তা প্রদান করা আমাদের দায়িত্ব। এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে সবাইকে একস‌ঙ্গে কাজ করার এবং মানবতার উন্নতির জন্য দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।

সভার শুরুতে গাম্বিয়ার মন্ত্রী আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বিচারাধীন এই মামলাটির বর্তমান অবস্থা, এর বিভিন্ন দিক ও সামনের পরিকল্পনা সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করেন।

তিনি বলেন, এই মামলাটি ওআইসি ও বিশ্বের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। তিনি প্রত্যাশা করেন, আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে এই মামলাটি নিষ্পত্তি হবে। তিনি ওআইসির সব সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন ও মামলা পরিচালনার জন্য সহায়তা কামনা করেন।

ওআইসি মহাসচিব তার বক্তব্যে বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা প্রদান, তাদের অধিকার আদায়ে একযোগে কাজ করা ওআইসির নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তিনি এ বিষয়ে ওআইসি সচিবালয়ের সার্বক্ষণিক সহায়তা আশ্বাস দেন ও এর সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সমর্থন ও সহায়তার অনুরোধ জানান।

বৈঠকে সৌদি আরব, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ক্যামেরুন, ফিলিস্তিন, মালদ্বীপসহ অন্যান্য দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া গণপূর্তের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ছয় প্রকল্প বাতিল

রোহিঙ্গা গণহত্যা : বিচারে ওআইসির সহ‌যো‌গিতা চাইল বাংলা‌দেশ

আপডেট সময় ০৭:৩৭:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ নভেম্বর ২০২২

রোহিঙ্গা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) চলমান মামলা পরিচালনায় ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা চে‌য়ে‌ছে বাংলা‌দেশ।

বৃহস্প‌তিবার (১০ নভেম্বর) জেদ্দায় রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতার বিষয়ে ওআইসি মন্ত্রী পর্যায়ের অ্যাডহক কমিটির বৈঠকে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এ সহযোগিতা চান।

সভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এবং গাম্বিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রী দাওদা জালো।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ সীমিত সাধ্যের মধ্যে ইতোমধ্যে আইসিজেতে মামলা পরিচালনার জন্য স্বেচ্ছাসেবী তহবিলে ইতিমধ্যেই ৫ লাখ ডলার দিয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি আরও দুই লাখ ডলার দেওয়ার পথে রয়েছে।

রাষ্ট্রদূত আইসিজেতে মামলা পরিচালনার জন্য সৌদি আরব, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, কুয়েত, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, আফগানিস্তান এবং ইসলামিক সলিডারিটি ফান্ডসহ কয়েকটি দেশের স্বেচ্ছামূলক অবদান এবং অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, অনেক দেশের সাহায্য সহযোগিতা পাওয়ার পরও প্রাপ্ত অর্থ প্রয়োজনীয় পরিমাণ থেকে অনেক কম, তাই তিনি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা পরিচালনার জন্য উদারভাবে অবদান রাখার আহ্বান জানান।

রোহিঙ্গা গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজেতে মামলা দায়েরের জন্য গাম্বিয়ার প্রতিনিধিদল, ওআইসি সদস্য রাষ্ট্র এবং ওআইসি সচিবালয়ের প্রতি রাষ্ট্রদূত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মাধ্যমে এর সমাধান একটি দীর্ঘমেয়াদী বিষয় এবং আমাদের অবশ্যই এর প্রতি নিবিড় কার্যক্রম বজায় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, গাম্বিয়ার দায়ের করা এ মামলার প্রতি আমাদের সবার পূর্ণ সংহতি, সমর্থন এবং সহযোগিতা প্রয়োজন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে ২০১৭ সালে তিনটি চুক্তি স্বাক্ষরের পর ও মিয়ানমারে আমরা একজন শরণার্থীও ফেরত পাঠাতে পারিনি এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর জন্য মিয়ানমারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারিনি। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হলে তার সুদূরপ্রসারী স্থানীয় ও আঞ্চলিক নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে উপস্থিত সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাষ্ট্রদূত।

জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ওআইসিসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সার্বক্ষণিক সমর্থন কামনা করে। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা এবং তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়ার জন্য আইনি সহায়তা প্রদান করা আমাদের দায়িত্ব। এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে সবাইকে একস‌ঙ্গে কাজ করার এবং মানবতার উন্নতির জন্য দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।

সভার শুরুতে গাম্বিয়ার মন্ত্রী আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বিচারাধীন এই মামলাটির বর্তমান অবস্থা, এর বিভিন্ন দিক ও সামনের পরিকল্পনা সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করেন।

তিনি বলেন, এই মামলাটি ওআইসি ও বিশ্বের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। তিনি প্রত্যাশা করেন, আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে এই মামলাটি নিষ্পত্তি হবে। তিনি ওআইসির সব সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন ও মামলা পরিচালনার জন্য সহায়তা কামনা করেন।

ওআইসি মহাসচিব তার বক্তব্যে বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা প্রদান, তাদের অধিকার আদায়ে একযোগে কাজ করা ওআইসির নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তিনি এ বিষয়ে ওআইসি সচিবালয়ের সার্বক্ষণিক সহায়তা আশ্বাস দেন ও এর সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সমর্থন ও সহায়তার অনুরোধ জানান।

বৈঠকে সৌদি আরব, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ক্যামেরুন, ফিলিস্তিন, মালদ্বীপসহ অন্যান্য দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।