শীতের শুরুতেই আপনাকে খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এসময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়া খুব স্বাভাবিক। গলা ব্যথা, কাশি, ঠান্ডা লাগা, নাক দিয়ে পানি পড়ার মতো সমস্যা এই ঋতুতেই বেশি হয়। তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়ার কারণে আপনি আরও অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। হঠাৎ তাপমাত্রা কমে গেলে আর্দ্রতার পরিমাণও কমে যায়। এটি ভাইরাসকে শক্তিশালী এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। ফলে অসুখ-বিসুখ সহজেই আমাদের পেয়ে বসে। ঠান্ডা আবহাওয়ার ভাইরাস আরও বেশি কার্যকরী হয়ে ওঠে। এসময় ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে সহজেই। ফলে অনেকেই ঠান্ডাজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়।
তাপমাত্রা হঠাৎ কমে গেলে অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণ সম্পর্কে ভারতীয় চিকিৎসক গীতা প্রকাশ বলেন, ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠান্ডা অনুভূত হলে আমরা গরম পোশাক ব্যবহার করি। যখন গরম অনুভূত হয়, সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন করে ফেলি। ঘনঘন এভাবে করতে থাকলে অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এছাড়াও এ সময়ে যেসব ভাইরাস আগে থেকে শরীরে ছিল না, সেগুলোও খুব দ্রুত ছড়াতে শুরু করে। ফলে আমরা আরও বেশি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকি।
হঠাৎ তাপমাত্রার পরিবর্তনে অসুখ থেকে করণীয় সম্পর্কে জানিয়েছেন ডাঃ গীতা প্রকাশ-
১. ফ্লু ভ্যাকসিন নিন। এটি ভাইরাল ইনফেকশন থেকে আপনাকে দূরে রাখতে কাজ করবে।
২. এসময় আবহাওয়ার ধরন বুঝে পোশাক পরুন। গরম পোশাক পরার পর হালকা আরাম বোধ করার সঙ্গে সঙ্গেই আবার খুলে রাখবেন না। তাপমাত্রা বাড়লে তার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময় দিতে হবে শরীরকে।
৩. খুব সকালে কিংবা সন্ধ্যায় জরুরি না হলে বাইরে যাবেন না। এসময় দিনের অন্যান্য সময়ের তুলনায় দূষণের মাত্রা বেশি এবং তাপমাত্রা কম থাকে।
৪. পুরো শরীর আবৃত রাখে এবং আপনাকে উষ্ণতা দিতে পারে এমন পোশাক পরুন।
৫. বেশি বেশি তরল খাবার ও ফলমূল খান। এগুলোরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হলে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় হঠাৎ অসুখে পড়ার ভয় কম থাকে।
এ সময়ে অসুখ প্রতিরোধে আরও কিছু পরামর্শ
১. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কিংবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এমন খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। সাইট্রাস জাতীয় ফল, ব্রকোলি, আদা, রসুন, সবুজ শাক, দই, বাদাম ও তৈলাক্ত মাছ যোগ করুন খাবারের তালিকায়।
২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন। নিয়মিত হাত ধোওয়ার অভ্যাস করুন। জীবাণু সাধারণত একজনের মাধ্যমে অন্যজনের কাছে ছড়ায়। নিয়মিত হাত পরিষ্কার করলে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
৩. সঙ্গে সব সময় টিস্যু রাখুন। কাশি বা সর্দি মোছার জন্য টিস্যু ব্যবহার করুন। ফলে বাতাসের মাধ্যমে জীবাণু ছড়ানোর ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।