ঢাকা ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইথিওপিয়ায় বিদ্রোহী ও সরকারের মধ্যে শান্তি চুক্তি

ইথিওপিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধ বন্ধে তাইগ্রে বিদ্রোহী এবং সরকারের মধ্যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

দুই বছর ধরে তাইগ্রে বিদ্রোহীদের সঙ্গে ইথিওপিয়ার সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষ চলছিল। এ সংঘর্ষে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তাছাড়া দেশটিতে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব বন্ধে চুক্তি হয়। সংবাদ সংস্থা এএফপি বলেছে, শান্তি চুক্তিটিকে নতুন সূর্যোদয় হিসেবে উল্লেখ করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)।

এ চুক্তির পর তাইগ্রে অঞ্চলে এখন মানবিক সহায়তা সরবরাহ শুরু হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, তাইগ্রে অঞ্চলে থাকা সাধারণ মানুষের মধ্যে ৯০ ভাগেরই জরুরিভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। এ অঞ্চলের চারভাগের তিন ভাগ শিশু বর্তমানে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। এদিকে যদিও এই শান্তি চুক্তি বড় একটি সাফল্য। তবুও এটিকে কিছটা সতর্কতার সহিতই নেওয়া হবে।

কারণ ইথিওপিয়ায় যুদ্ধ বন্ধে এটিই প্রথম শান্তি চুক্তি না। আগেও বিদ্রোহী ও সরকারের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু কয়েক মাস যেতে না যেতেই গত আগস্টে দুইপক্ষ এটি ভঙ্গ করে। তবে এবারের চুক্তিটি আরও দৃঢ়ভাবে করা হয়েছে। ইথিওপিয়ার সরকারি কর্মকর্তা এবং তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের প্রতিনিধিরা নিরস্ত্রীকরণ পরিকল্পনা এবং খাদ্য সহায়তাসহ জরুরি সেবা পুনর্বহাল করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ চুক্তিটিকে ‘বিরাট’ সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং এটি কার্যকরে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা জানিয়েছেন। নাইজেরিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওলুসেগুন ওবাসানজো এ চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় কয়েক সপ্তাহব্যাপী চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। ওলুসেগুন ওবাসানজো বলেছেন, এটি শান্তি প্রক্রিয়ার শুরু।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘এটি প্রথম ধাপ’, যার মাধ্যমে আমরা আশা করতে পারি যে লাখ লাখ ইথিওপিয়ান এ দ্বন্দ্বের মধ্যে কষ্ট করেছেন  তারা শান্তি পাবেন। তাইগ্রে অঞ্চলটি গত দুই বছর ধরে বহিঃবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। হাসপাতালে ওষুধ নেই। তাছাড়া বিদ্যুৎ, ফোন এবং ব্যাংকিং সেবা ও ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

সরকার ও এবং তাইগ্রে বিদ্রোহী দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে। এদিকে তাইগ্রে ও ইথিওপিয়ার সরকারি বাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় ২০২০ সালের ৪ নভেম্বরের একটি ঘটনা নিয়ে।

এদিন তাইগ্রের ক্ষমতাসীন দলের প্রতি অনুগত বাহিনী, তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট সেনাবাহিনীর একটি ব্যারাকে আক্রমণ করে, এর জবাবে ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনী তাইগ্রে দখল করে, যদিও পরবর্তীতে তাদের পিছু হটতে বাধ্য করা হয়।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইথিওপিয়ায় বিদ্রোহী ও সরকারের মধ্যে শান্তি চুক্তি

আপডেট সময় ১০:৩৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর ২০২২

ইথিওপিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধ বন্ধে তাইগ্রে বিদ্রোহী এবং সরকারের মধ্যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

দুই বছর ধরে তাইগ্রে বিদ্রোহীদের সঙ্গে ইথিওপিয়ার সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষ চলছিল। এ সংঘর্ষে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তাছাড়া দেশটিতে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব বন্ধে চুক্তি হয়। সংবাদ সংস্থা এএফপি বলেছে, শান্তি চুক্তিটিকে নতুন সূর্যোদয় হিসেবে উল্লেখ করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)।

এ চুক্তির পর তাইগ্রে অঞ্চলে এখন মানবিক সহায়তা সরবরাহ শুরু হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, তাইগ্রে অঞ্চলে থাকা সাধারণ মানুষের মধ্যে ৯০ ভাগেরই জরুরিভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। এ অঞ্চলের চারভাগের তিন ভাগ শিশু বর্তমানে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। এদিকে যদিও এই শান্তি চুক্তি বড় একটি সাফল্য। তবুও এটিকে কিছটা সতর্কতার সহিতই নেওয়া হবে।

কারণ ইথিওপিয়ায় যুদ্ধ বন্ধে এটিই প্রথম শান্তি চুক্তি না। আগেও বিদ্রোহী ও সরকারের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু কয়েক মাস যেতে না যেতেই গত আগস্টে দুইপক্ষ এটি ভঙ্গ করে। তবে এবারের চুক্তিটি আরও দৃঢ়ভাবে করা হয়েছে। ইথিওপিয়ার সরকারি কর্মকর্তা এবং তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের প্রতিনিধিরা নিরস্ত্রীকরণ পরিকল্পনা এবং খাদ্য সহায়তাসহ জরুরি সেবা পুনর্বহাল করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ চুক্তিটিকে ‘বিরাট’ সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং এটি কার্যকরে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা জানিয়েছেন। নাইজেরিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওলুসেগুন ওবাসানজো এ চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় কয়েক সপ্তাহব্যাপী চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। ওলুসেগুন ওবাসানজো বলেছেন, এটি শান্তি প্রক্রিয়ার শুরু।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘এটি প্রথম ধাপ’, যার মাধ্যমে আমরা আশা করতে পারি যে লাখ লাখ ইথিওপিয়ান এ দ্বন্দ্বের মধ্যে কষ্ট করেছেন  তারা শান্তি পাবেন। তাইগ্রে অঞ্চলটি গত দুই বছর ধরে বহিঃবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। হাসপাতালে ওষুধ নেই। তাছাড়া বিদ্যুৎ, ফোন এবং ব্যাংকিং সেবা ও ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

সরকার ও এবং তাইগ্রে বিদ্রোহী দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে। এদিকে তাইগ্রে ও ইথিওপিয়ার সরকারি বাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় ২০২০ সালের ৪ নভেম্বরের একটি ঘটনা নিয়ে।

এদিন তাইগ্রের ক্ষমতাসীন দলের প্রতি অনুগত বাহিনী, তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট সেনাবাহিনীর একটি ব্যারাকে আক্রমণ করে, এর জবাবে ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনী তাইগ্রে দখল করে, যদিও পরবর্তীতে তাদের পিছু হটতে বাধ্য করা হয়।