ঢাকা ১০:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শরীয়তপুরে বিদ্যুৎ কেড়ে নিলো বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির প্রান কুমিল্লায় ভারতীয় মদসহ ৩ জনকে আটক করেছে বিজিবি রোটারি ক্লাব অব পাবনার উদ্যোগে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষদের মাঝে পূজা বস্ত্র বিতরণ কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়ায় যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ আটক ১ সরকারি ব্যবস্থায় দুর্নীতি বন্ধ চান এনজিও নেতারা কাবা শরিফের গিলাফ উপহার পেলেন ধর্ম উপদেষ্টা সেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বরখাস্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুজা মন্ডবে শেষ প্রতিমা তৈরীর কাজ, চলছে শেষ সময়ে প্রস্তুতি লালমনিরহাটে মধ্যরাতে আগুনে পুড়ল ১৪ দোকান, কোটি টাকার ক্ষতি কুমিল্লা জেলা দেবিদ্বার থানা গ্রাম পুলিশের নির্দেশে রাতের অন্ধকারে অবৈধ গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ।

দেওয়ানগঞ্জ বড়খালে রাতারাতি যমুনার নদীতে বিলীন বসত ভিটা

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার যমুনা নদীতে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙ্গন। দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নদী পাড়ের মানুষ।

সকালে তন্দ্রা ঘুম ভাঙছে বসতভিটার ভাঙ্গন কম্পনে। চলতি বছর চতুর্থবারের মতো দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা যমুনা নদীতে পানি বেড়েছে।

সর্বশেষ বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদ সীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে শতাধিক একর ফসলের জমি ও বসতভিটা আবারো পানিবন্দী হয়ে আছে।

সাথে পূর্বের তুলনায় এবার ভাঙ্গন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চিকা জানি ইউনিয়নের বড়খাল এলাকার হলকা চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেলোয়ার হোসেন হাই স্কুল, দেলোয়ার হোসেন এবতেদায়ী মাদ্রাসা সহ বড় খাল জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠান ৪টি যেকোনো সময় নদীতে চলে যাবে এবং ৪ কোটি টাকার ব্যয়ে সদ্য নির্মাণ করা হরিণ ধরা বাঁধটি ও রয়েছে হুমকির মুখে। বাঁধের সুইচগেট সহ বিভিন্ন জায়গা ঢলে গিয়েছে।

নদীর থেকে স্থাপনা গুলো ও বাঁধটির দুরত্ মাত্র৩০-৪০মিটার। আরো জানা যায়, ফসলের জমির পাশাপাশি ইতিমধ্যে বড়খাল এলাকার ৫০ টি এবং মাঝি পাড়ার এলাকার দশটি বসতভিটা সম্পূর্ণরূপে যমুনার গর্ভে।

এছাড়াও ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে এই ইউনিয়নের পলাশপুর খান পাড়া এলাকার বাসিন্দারা।

যমুনায় বসতভিটা হারানো তোতা মিয়া বলেন, আমার বাড়ি থেকে নদী দূরে ছিল। গত বৃহস্পতিবার ভোরবেলা ঘুমের ভিতর বুঝতে পারি আমার ঘর ডুবে যাচ্ছে। চিৎকার দিয়ে ঘরের বাইরে আসি। দেখি ভিটার অর্ধেক নদীতে চলে গেছে।

চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এসে আমার স্ত্রী ছেলে-মেয়ে সহ সবাইকে উদ্ধার করে। একই সময়ে আমার আপন ভাই এরশাদের বসতভিটাও নদীতে যায়।

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা বারেক সেও কয়েকদিন আগে ভোরবেলা বিছানা থেকে বুঝতে পারে থাকার ঘর ডুবে যাচ্ছে।

চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এসে পরিবারের লোকজন সহ মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করে।

বোরখাল বাসিন্দা আলী হায়দার বাবুল, শফিকুল ইসলাম, রসুল মিয়া, সাদিকুল, সুমন ও ওয়ার্ড মেম্বার শেখ আতিকুল ইসলাম আলম জানান, ভাঙ্গনের শিকার পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছে হলকা চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাম বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র। আবার অনেকেই ঠাঁই গুজেছে আত্মীয়র বাড়িতে।

প্রতিবছর বসতভিটাসহ ফসলি জমির নদী গর্ভে যাচ্ছে। স্থানীয় নদী শাসন ব্যবস্থা ছাড়া এই ভাঙ্গন রোধ সম্ভব হবে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন্নাহার শেফা এই প্রতিবেদক কে জানান, বড়খাল এলাকায় যমুনার ভাঙ্গন রোধে জিও ডাম্পিং কাজ চলমান আছে। গত কয়েকদিন থেকে ভাঙ্গন বেড়ে গেছে।

খবর পেয়ে সরে জমিনে গিয়ে তদন্ত করছি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ হয়েছে সেখানে ভাঙ্গন রোধের বাজেট বৃদ্ধি করায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শরীয়তপুরে বিদ্যুৎ কেড়ে নিলো বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির প্রান

দেওয়ানগঞ্জ বড়খালে রাতারাতি যমুনার নদীতে বিলীন বসত ভিটা

আপডেট সময় ০৪:৪৯:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার যমুনা নদীতে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙ্গন। দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নদী পাড়ের মানুষ।

সকালে তন্দ্রা ঘুম ভাঙছে বসতভিটার ভাঙ্গন কম্পনে। চলতি বছর চতুর্থবারের মতো দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা যমুনা নদীতে পানি বেড়েছে।

সর্বশেষ বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদ সীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে শতাধিক একর ফসলের জমি ও বসতভিটা আবারো পানিবন্দী হয়ে আছে।

সাথে পূর্বের তুলনায় এবার ভাঙ্গন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চিকা জানি ইউনিয়নের বড়খাল এলাকার হলকা চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেলোয়ার হোসেন হাই স্কুল, দেলোয়ার হোসেন এবতেদায়ী মাদ্রাসা সহ বড় খাল জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠান ৪টি যেকোনো সময় নদীতে চলে যাবে এবং ৪ কোটি টাকার ব্যয়ে সদ্য নির্মাণ করা হরিণ ধরা বাঁধটি ও রয়েছে হুমকির মুখে। বাঁধের সুইচগেট সহ বিভিন্ন জায়গা ঢলে গিয়েছে।

নদীর থেকে স্থাপনা গুলো ও বাঁধটির দুরত্ মাত্র৩০-৪০মিটার। আরো জানা যায়, ফসলের জমির পাশাপাশি ইতিমধ্যে বড়খাল এলাকার ৫০ টি এবং মাঝি পাড়ার এলাকার দশটি বসতভিটা সম্পূর্ণরূপে যমুনার গর্ভে।

এছাড়াও ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে এই ইউনিয়নের পলাশপুর খান পাড়া এলাকার বাসিন্দারা।

যমুনায় বসতভিটা হারানো তোতা মিয়া বলেন, আমার বাড়ি থেকে নদী দূরে ছিল। গত বৃহস্পতিবার ভোরবেলা ঘুমের ভিতর বুঝতে পারি আমার ঘর ডুবে যাচ্ছে। চিৎকার দিয়ে ঘরের বাইরে আসি। দেখি ভিটার অর্ধেক নদীতে চলে গেছে।

চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এসে আমার স্ত্রী ছেলে-মেয়ে সহ সবাইকে উদ্ধার করে। একই সময়ে আমার আপন ভাই এরশাদের বসতভিটাও নদীতে যায়।

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা বারেক সেও কয়েকদিন আগে ভোরবেলা বিছানা থেকে বুঝতে পারে থাকার ঘর ডুবে যাচ্ছে।

চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এসে পরিবারের লোকজন সহ মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করে।

বোরখাল বাসিন্দা আলী হায়দার বাবুল, শফিকুল ইসলাম, রসুল মিয়া, সাদিকুল, সুমন ও ওয়ার্ড মেম্বার শেখ আতিকুল ইসলাম আলম জানান, ভাঙ্গনের শিকার পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছে হলকা চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাম বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র। আবার অনেকেই ঠাঁই গুজেছে আত্মীয়র বাড়িতে।

প্রতিবছর বসতভিটাসহ ফসলি জমির নদী গর্ভে যাচ্ছে। স্থানীয় নদী শাসন ব্যবস্থা ছাড়া এই ভাঙ্গন রোধ সম্ভব হবে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন্নাহার শেফা এই প্রতিবেদক কে জানান, বড়খাল এলাকায় যমুনার ভাঙ্গন রোধে জিও ডাম্পিং কাজ চলমান আছে। গত কয়েকদিন থেকে ভাঙ্গন বেড়ে গেছে।

খবর পেয়ে সরে জমিনে গিয়ে তদন্ত করছি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ হয়েছে সেখানে ভাঙ্গন রোধের বাজেট বৃদ্ধি করায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।