ভৈরবে সাত মুখী বিলে সরকারি খাস জমি লীজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ছিদ্দিক মিয়া ও আতাউল্লাহ মিয়ার মাঝে চরম বিরোধ চলছে । বিরোধের জেরে গত শনিবার সকালে আতাউল্লাহর নেতৃত্বে ৩/৪শ যুবক ও কিশোর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছিদ্দিক মিয়ার ভাড়া বাসার ১৫ টি পরিবারকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে । পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে । বর্তমানে ও আতাউল্লাহর লোকজন প্রতিদিন বাড়িতে গিয়ে ভাড়াটিয়াদের নানা ভয়ভীতি ও হুমকি –ধমকি দিচ্ছে । তাই তাদের ভয়ে ভাড়াটিয়ারা ঘরে ঢুকতে না পরায় রান্না-বান্না ও খাওয়া -দাওয়া ও কাজ কর্ম করতে না পারায় মানবেতর জীবন –যাপন করছে । ভাড়াটিয়ারা দিন –আনে দিন খায় আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে অন্য কোথা ও বাসা ভাড়া নিতে পারছেনা বলে ভোক্ত ভুগী পরিবারগুলোর । ঘটনার পর খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে ২ দিন পর ঘরের তালা খুলে দেয় আতাউল্লার লোকজন। স্থানীয়রা জানান, সাতমূখী বিল সরকারি ভূমিহীনদের অধিকার । কিন্ত বর্তমানে কতিপয় প্রভাব শালীরা বন্দোবস্ত এনে তারা নিজেরা দখলে করে জমি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ।
এ বিষয়ে বন্দোবস্তকারি ছিদ্দিক মিয়া জানান, তিনি ১৯ ৮২ সালে সরকারের কাছ থেকে সাতমূখী বিলের ৪ একর ভূমি লিজ নিয়েছেন । যার দাগ নং ও কলমি নকশা করা আছে । পরে স্থাপনা করে ভূমিহীনদের কে মাসিক ৫শ টাকা বাড়ি ভাড়া দিয়েছেন । অসহায় মানুষ কম টাকায় ভাড়া নিয়ে থাকছেন। কিন্ত পরবর্তীতে ভূমি দস্যু আতাউল্লাহ মিয়া একই দাগে লিজ নিয়ে ১৯৮৫ সালে মাঠ রেকর্ড করে তার চিহ্নিত করা কলমি নকশার জমি দখল নিতে আদালতে ৩ টি মামলা দায়ের করেছে । এর মধ্যে ২টি মামলার রায় আমার পক্ষে এসেছে । আর অন্য একটি মামলা চলমান রয়েছে । মামলা চলমান অবস্থায় সে আমার নামে ভৈরব থানায় একটি অভিযোগ করলে আমি জমির সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে থানায় ওসির সাথে দেখা করেছি । ওসি আমার কাগজ দেখে পরে সমস্ত কাগজপত্র আমাকে ফেরত দিয়েছে । এর পর গত শনিবার আতাউল্লাহ মিয়া ৩/৪শ লোকজন নিয়ে আমার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবী করে । টাকা দিলে নাকি আমার ঝামেলা শেষ । এতে আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সঙ্গে সঙ্গে তার নেতৃত্বে তার লোকজন আমার ভাড়াটিয়াদেরকে মারধোর করে জোর করে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা দিয়ে দেয় । পরে আমি ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ এসে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় । বর্তমানে আমার ভাড়াটিয়াদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে । তারা ঘরে ঢুকতে পারছেনা। নিরাপত্তাহীনতায় আছে । আমি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আতাউল্লাহ মিয়া বলেন, মাঠ রেকর্ড,পরচা,নকশা,খাজনা অনুযায়ী জমির মালিক তিনি । তার ঘরে তিনি তালা দিয়েছেন । ভাড়াটিয়াদের কে অন্য কোথা ও ভাড়া নিতে বলেছেন বলে ও জানান তিনি । এ সময় তিনি আরো জানান, কাগজ পত্র অনুযায়ী যদি প্রমাণ হয় জমি ছিদ্দিক মিয়ার তাহলে তাকে জমি দিয়ে দিবো । এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সায়দুল্লাহ মিয়ার বাসায় ২ বার সালিশী বৈঠকে কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করে আমার পক্ষে রায় এসেছে । কিন্ত ছিদ্দিক মিয়া রায় মানে না ।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম জানান, ২ পক্ষের কাগজ পত্র দেখেছি । তবে আতাউল্লাহর ও তার লোকজন নিয়ে ছিদ্দিক মিয়ার ভাড়াটিয়াদের ঘর থেকে বের করে তালা দেয়ার খবর পেয়ে সাথে সাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি । তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ।