তিনি ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের ৮ই নভেম্বর পযর্ন্ত উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনে মানবিক পুলিশিং এর পাশাপাশি
সাড়ে সাত হাজার স্কয়ারফিটের অফিস ভবনের প্রায় পাঁচ হাজার স্কয়ারফিটের ছাদে ১০২০ টি বিভিন্ন সাইজের টব এবং ড্রাম দিয়ে, বীজতলা তৈরী করে, ছাদের কার্নিশে গাছ লাগিয়ে বিজ্ঞানসম্মতভাবে ছোট্ট একটা সবুজ অরণ্য সৃজন করেছেন। এই ছাদ বাগান সৃজনে তার বৃক্ষ প্রেম, শখ, ছাদ বাগান সৃজনে আধুনিক চিন্তা-ভাবনা, একাডেমিক শিক্ষা এবং প্রচেষ্টা একাকার হয়েছে। ছাদে রোপন করেছেন ১২ প্রজাতির বনজ, ৪৮ প্রজাতির ফলদ,৩০ প্রকার ভেসজ,৭৭ প্রজিতির শোভাবর্ধনকারী,১৫ প্রজাতির দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় ,২১ প্রজাতির সব্জি ও অন্যান্য, ১২ প্রজাতির বিরল/অন্যান্য সহ বিভিন্ন
মশলা এবং ঔষধি গাছ। তিনি ছাদেই বীজতলা তৈরী করতেন।বীজতলার সেই চারা দিয়েই বিভিন্ন শাক-সব্জির ফলন ফলাতেন। তিনি নিজে জৈব সার তৈরী করে বিষমুক্ত নিরাপদ শাক-সব্জি চাষ করেছেন। ছুটির দিনে এবং অবসর সময়ে ছাদে কাজ করেছেন, গাছের যত্ন করেছেন। ছাদ বাগানের বিভিন্ন গাছে পাখির আশ্রয়স্থল স্থাপন, কৃত্রিম ঝর্ণা স্থাপন, ছোট্ট একটা চৌবাচ্চায় পদ্ম পাতা দিয়ে শোভিত করে মাছ চাষ, দৃষ্টিনন্দন মাচায় দেশীয় সব্জি চাষ তার সৃজিত ছাদ বাগানকে বৈচিত্র্যময় এবং দৃষ্টিনন্দন করেছে। প্রতিদিন তিনি ছাদে নতুন নতুন গাছ সংযোজন করেছেন।
বছরব্যাপী টাটকা শাক-সব্জি, মৌসুমী ফল,ঔষধী-মশলা জাতীয় গাছ আর অসংখ্য বাহারী ফুলের সমারোহ ঐ ডিভিশনের পুলিশের সব সদস্যদের যেমন অফুরন্ত আনন্দ দিয়েছে তেমনি ছাদ বাগানে ফলিত শাক-সব্জি-ঔষধি গাছ-ফল উপহার হিসাবে সহকর্মীদের দিতে পেরে তিনি নিজেও মানসিক শান্তি পেয়েছেন। তার সৃজিত ছাদ বাগান পরিদর্শনের ব্যবস্থা করে পরিচিতজনদের ছাদ বাগান করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তার বৈচিত্র্যময় ছাদ বাগান Rtv,Gtv, CNI সহ বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রচারিত হয়েছে। বৃক্ষরোপণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরষ্কার -২০২১ এর জন্য তিনি তার সৃজিত ছাদ বাগানের সচিত্র তথ্য দিয়ে আবেদন করেন। বিভিন্ন ধাপে যাচাই-বাছাই শুরু হয়। বনবিভাগের বিভিন্ন কমিটি পর্যায়ক্রমে সরেজমিনে পরিদর্শন করে। পরিশেষে “বৃক্ষরোপণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরষ্কার -২০২১” এর ঙ- শ্রেণিতে বাড়ীর ছাদে বাগান সৃজন(ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান) ক্যাটাগরিতে হামিদা পারভীন পিপিএম এর সৃজিত “উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন” এর ছাদ বাগান প্রথম স্থান অধিকার করে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বনির্ভর কৃষি নিশ্চিতে এক ইঞ্চি জমিও পতিত কিংবা অনাবাদী রাখা যাবেনা মর্মে অনুশাসন দিয়েছেন। এই অনুশাসন বাস্তবায়নে হামিদা পারভীন উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের ছাদে বিভিন্ন ধরণের ফলদ, বনজ , শাক-সব্জি ও ফুলগাছ রোপণের পদক্ষেপ নেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ছাদবাগানে বৈচিত্র্যময় বাগান সৃজন করে স্বনির্ভর কৃষি তথা স্বনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মানে স্বীয় অঙ্গীকার অটুট রেখে তিনি তার বতর্মান কর্মস্থলের পতিত এবং অব্যবহৃত জমিতে শুরু করেছেন বৃক্ষ রোপন অভিযান।
সবুজে ভরা গ্রাম বাংলায় বেড়ে উঠা প্রকৃতিপ্রেমী এই কর্মকর্তা শৈশব থেকে অদ্যাবধি একান্ত নিজস্ব ভাবনা, গাছের প্রতি মমতা, ভালোবাসা আর প্রচেষ্টায় টুকরো টুকরো ফাঁকা জায়গাতেও ছোট পরিসরে বাগান করেছেন। তার চাকরীজীবনের প্রতিটি কর্মস্থলে তিনি আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে অগনিত ফুল-ফলের টব দিয়ে বারান্দা-ব্যালকনি-ছাদ কে একটুকরো অরণ্য বানিয়ে যান্ত্রিক জীবনে স্নিগ্ধতা আনার পাশাপাশি চাকরির স্ট্রেস ম্যানেজ করেছেন।
পুলিশের মত চ্যালেঞ্জিং পেশায় থেকেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তথা বাংলাদেশ পুলিশের জন্যে “বৃক্ষরোপণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরষ্কার -২০২১” অর্জনের সম্পূর্ণ কৃতিত্বের অধিকারী হামিদা পারভীন পিপিএম কে অভিনন্দন।