ঢাকা ১০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

দেশের রিজার্ভ কমে আবারও ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে

ডলার-সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আবারও ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে এসেছে। আজ দিনের শুরুতে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৯৩ কোটি ডলার। এরপর ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করা হয় ৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ফলে দিন শেষে রিজার্ভ আরও কমেছে।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) মার্চ-এপ্রিল সময়ের আমদানি বিল বাবদ ১১৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ৩০ বিলিয়নের নিচে নেমেছিল। এরপর বিশ্বব্যাংকের ঋণের টাকা আসায় তা খানিকটা বাড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

বৈদেশিক মুদ্রার সর্বশেষ মজুত নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জানান, বাজারে এখনো ডলারের ঘাটতি রয়ে গেছে। ডলারের চাহিদা যতটা, সরবরাহ তার তুলনায় কম। তাই প্রতিদিন ডলার বিক্রি করে জোগান দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপাতত আর কোনো বিকল্প হাতে নেই।

২০২০ সালে কোভিড মহামারি শুরু হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত বাড়তে থাকে। বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় ওই সময় সব প্রবাসী আয় বৈধ পথে তথা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আসে। আবার আমদানিও কমে যায়। ফলে রিজার্ভ বেড়ে ২০২১ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ে। ফলে বাড়ে দেশের আমদানি খরচও। তবে সেই তুলনায় বাড়েনি প্রবাসী ও রপ্তানি আয়। এই কারণে আমদানি দায় মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। তারপর থেকেই দেশের রিজার্ভ কমতে থাকে।

ব্যাংকিং খাতের বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ডলার-সংকট কাটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপগুলো কাজ না করায় সংকট বরং আরও গভীর হয়েছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি একক দাম নির্ধারণের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মার্চ মাসে অন্তত ২২ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারের নিট রিজার্ভ রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে ওই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। আগামী জুনে মজুতের পরিমাণ বাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার শর্ত রয়েছে সংস্থাটির।

এ ছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরে নিট রিজার্ভের পরিমাণ বাড়িয়ে ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার এবং ডিসেম্বরে ২৬ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য ঠিক করে দিয়েছে আইএমএফ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইমরান খানের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে বড় অভিযান চালানোর শঙ্কা

দেশের রিজার্ভ কমে আবারও ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে

আপডেট সময় ০১:২৩:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩

ডলার-সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আবারও ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে এসেছে। আজ দিনের শুরুতে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৯৩ কোটি ডলার। এরপর ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করা হয় ৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ফলে দিন শেষে রিজার্ভ আরও কমেছে।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) মার্চ-এপ্রিল সময়ের আমদানি বিল বাবদ ১১৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ৩০ বিলিয়নের নিচে নেমেছিল। এরপর বিশ্বব্যাংকের ঋণের টাকা আসায় তা খানিকটা বাড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

বৈদেশিক মুদ্রার সর্বশেষ মজুত নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জানান, বাজারে এখনো ডলারের ঘাটতি রয়ে গেছে। ডলারের চাহিদা যতটা, সরবরাহ তার তুলনায় কম। তাই প্রতিদিন ডলার বিক্রি করে জোগান দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপাতত আর কোনো বিকল্প হাতে নেই।

২০২০ সালে কোভিড মহামারি শুরু হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত বাড়তে থাকে। বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় ওই সময় সব প্রবাসী আয় বৈধ পথে তথা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আসে। আবার আমদানিও কমে যায়। ফলে রিজার্ভ বেড়ে ২০২১ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ে। ফলে বাড়ে দেশের আমদানি খরচও। তবে সেই তুলনায় বাড়েনি প্রবাসী ও রপ্তানি আয়। এই কারণে আমদানি দায় মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। তারপর থেকেই দেশের রিজার্ভ কমতে থাকে।

ব্যাংকিং খাতের বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ডলার-সংকট কাটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপগুলো কাজ না করায় সংকট বরং আরও গভীর হয়েছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি একক দাম নির্ধারণের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মার্চ মাসে অন্তত ২২ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারের নিট রিজার্ভ রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে ওই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। আগামী জুনে মজুতের পরিমাণ বাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার শর্ত রয়েছে সংস্থাটির।

এ ছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরে নিট রিজার্ভের পরিমাণ বাড়িয়ে ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার এবং ডিসেম্বরে ২৬ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য ঠিক করে দিয়েছে আইএমএফ।