দেশের ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) জন্য আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ব্যয় বাবদ ১২ হাজার ২৬২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে ইউজিসি। রোববার ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে ১৬৫তম পূর্ণ কমিশন সভায় এ বাজেট অনুমোদিত হয়। বাজেটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য ১২ হাজার ১৮৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং ইউজিসির জন্য ৭৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল বাজেটে ৬ হাজার ১০৯ কোটি ১০ লাখ টাকার রাজস্ব বাজেট এবং ৩১টি প্রকল্পের অনুকূলে ৬ হাজার ৭৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার উন্নয়ন বাজেট রয়েছে।
সভার কার্যপত্র তুলে ধরেন ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান। সভায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটের বিস্তারিত দিক তুলে ধরেন ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশোধিত বাজেটে ৯ হাজার ২৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বরাদ্দ বেড়েছে ২ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব বাজেট পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৫৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং গবেষণা খাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সবচেয়ে বেশি ১৫ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
উচ্চশিক্ষায় ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল বাজেটে ১৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরের তুলনায় বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ২৪ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে গবেষণা খাতে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল বাজেট (পরিচালন) বরাদ্দ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে ৫৫টি গাইডলাইন ও কৃচ্ছতা সাধনের একটি নির্দেশাবলি দেওয়া হয়।
বাজেট বরাদ্দ বিষয়ে প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালন ও উন্নয়নের জন্য ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ব্যয়ের ক্ষেত্রে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে সর্বোচ্চ কৃচ্ছতা সাধনের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, বাজেটে এ বছর গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি গবেষণা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। বাজেটে বরাদ্দ টাকা নির্দিষ্ট খাতে ব্যবহার এবং আন্তঃখাতে বাজেট সমন্বয় না করাসহ বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহারে পরিপত্রে উল্লিখিত গাইডলাইনগুলো অনুসরণের আহ্বান জানান প্রফেসর কাজী শহীদুল্লাহ।
সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের ভাইস চ্যান্সেলর মেজর জেনারেল মো. মাহবুব-উল আলম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব এডুকেশনের ডিন অধ্যাপক সুফিয়া বেগম এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সভায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (আর্থসামাজিক অবকাঠোমো) ও সিনিয়র সচিব মোসামাৎ নাসিমা বেগম এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় নব প্রতিষ্ঠিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করার বিষয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশ এবং ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্গীভূত স্কুল/স্কুল ও কলেজ পরিচালনা নীতিমালা ২০২৩’ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়াও কমিশনের ১নং বাছাই কমিটির সুপারিশে ইউজিসির পরিচালক হিসেবে জাফর আহম্মদ জাহাঙ্গীর ও ড. দূর্গা রানী সরকার এবং অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে মোহাম্মদ কবিরুল হাসান ও শাহ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলামের নিয়োগ সুপারিশ অনুমোদন দেওয়া হয়।
আমাদের মাতৃভূমি/মাজহারুল