রাজধানীর কেরানীগঞ্জের চারটি বহুতল ভবনের ৬৮টি ফ্ল্যাটের সবগুলোতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ওই এলাকার ছোট কয়েকটি কারখানায় গ্যাসের অবৈধ সংযোগের প্রমাণ মিলেছে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কর্মীদের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করে সরকারের লাখ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছিল ব্যবহারকারীরা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সরজমিন অভিযানে এমন প্রমাণ পাওয়ার পর এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধান করার অনুমতি চেয়েছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম। শনিবার (১৫ অক্টোবর) দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক টিম গত ১৩ অক্টোবর অভিযান পরিচালনা করে। আমাদের টিম কমিশনে প্রতিবেদন পেশ করবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।
অভিযানের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি জিঞ্জিরা জোন-৫ এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে অবৈধ সংযোগ দেওয়া সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্যের দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। এসময় তিতাস গ্যাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সঙ্গে ছিল। অভিযানে টিম কেরানীগঞ্জ উপজেলার আগানগর এলাকার চারটি বহুতল ভবনের ৬৮টি ফ্ল্যাটে অবৈধ গ্যাস সংযোগের খোঁজ পায়। দুদকের উপস্থিততে তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা ওই সংযোগগুলো বিচ্ছিন্ন করেছে। এসময় উপস্থিত এলাকাবাসী জানায়, অবৈধ সংযোগ দেওয়ার আগে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে মাসোহারার বিনিময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত তিতাসের কর্মকর্তারা এমন অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। সেই সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করতে দুদক আরও অনুসন্ধান করবে বলে জানা গেছে।
অন্য একটি সূত্র জানায়, দুদকের হটলাইন-১০৬ এ দেওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়েছে টিম। ওই অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড কোম্পানির জিঞ্জিরা জোন অফিস-৫ এর আওতাধীন হাসনাবাদ এলাকায় গড়ে ওঠা অসংখ্য ছোট ছোট শিল্প কারখানা অবৈধভাবে রাস্তা থেকে গাসের লাইন নিয়ে গ্যাস ব্যবহার করে সরকারি অর্থ লুণ্ঠন করে চলেছে। এসব অপকর্মের সঙ্গে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জড়িত। তারা ওই সব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কাছ থেকে মাসোহারার বিনিময়ে গ্যাস চুরি করছে। এ বিষয়ে অভিযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। মাঝে মাঝে লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করে কিছু অবৈধ গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও কিছুদিনের মধ্যেই অবৈধ সংযোগকারীরা পুনরায় গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করা শুরু করে। অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করে তারা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে।