কথায় বলে ‘মাঘ মাসে বাঘ কাঁপে’। তবে এবার বোধ হয় পৌষেই বাঘ কাঁপতে শুরু করেছে। আজ বৃহস্পতিবার পৌষের ২৩ তারিখ। বাঘ কাঁপা মাঘ আসতে এখনো বাকি নয় দিন। ক’দিন ধরে রামগঞ্জে শীত অনুভূত হলেও এর প্রভাব ছিল মূলত রাতে। দিন থেকেছে রৌদ্রকরোজ্জ্বল। ফলে শীতটা সেভাবে টের পাওয়া যায়নি। কিন্তু মঙ্গলবার রাত থেকে রামগঞ্জেও কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে।
কুয়াশা ও মেঘের কারণে রোদের দেখা মিলছে না। কিন্তু এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস। মূলত উত্তর দিক থেকে আসা বাতাসে শীতে কাঁপছে সারা দেশ। ঠাণ্ডা জুবুথুবু হয়ে পড়েছেন কর্মমুখী সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। পৌষের শেষে এসে শীতে কাঁপছে সারাদেশ। রাতে বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির। রামগঞ্জে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সঙ্গে রয়েছে ঘন কুয়াশাও। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বুধবার সকাল থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি দেশের অধিকাংশ স্থানে। শীতে থেমে থাকেননি স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শির্ক্ষার্থীরাও। হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের লোকজন শীতবস্ত্রের অভাবে এবং শীতের দাপটে কাহিল হয়ে পড়েছেন। পাড়া-মহল্লা ও রাস্তাঘাটের লোকজন আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
সরেজমিনে রামগঞ্জে বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, ঘনকুয়াশা রাত থেকে সকাল পর্যন্ত এবং দিনভর উত্তর-পশ্চিম থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় কনকনে শীতে সাধারণ মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে। শীতের কারণে জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে পরিবারের চাহিদা মেটাতে অনেকেই শীত উপেক্ষা করেই কাজের সন্ধানে ছুটছেন। দিনের বেলা সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ না থাকায় কনকনে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। ভোরে ঘনকুয়াশা থাকার কারণে অধিকাংশ সড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। ফলে দুর্ভোগের পড়ছেন যাত্রীরা। প্রচন্ড শীতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। শীতে হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক বাড়ছে। ফসলের বীজতলা ঠিকমতো পরিচর্যা করা যাচ্ছে না। দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের লোকজন খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। গরম কাপড়ের অভাবে অনেক দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের লোকজন বাড়ি থেকে বের হতে না পারায় কাজেও যোগ দিতে পারছেন না তারা। কাজ করতে না পারায় তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ঠাণ্ডা অনেকটাই বেড়েছে। বাতাসের কারণে হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় চলাচল করা যাচ্ছে না। পেটের তাগিদে শীতের মধ্যে আমাদের প্রতিদিন কাজের জন্য বের হতে হয়। রিক্সা চালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঠাণ্ডায় অনেকেই বাড়ি থেকে না বের হাওয়ায় লোকজন তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। তবে যে হারে ঠাণ্ডা বাতাস তাতে সবার চলাচল করতে খুব সমস্যা হচ্ছে। সিএনজি চালক আক্তার হোসেন বলেন, ভোরে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি আয়ের জন্য। কিন্তু ঘন কুয়াশা থাকায় যাত্রীরা বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। যাত্রী না থাকায় ভাড়াও পাচ্ছি না। আমরা খুব কষ্টে দিনযাপন করছি। সরকার যদি আমাদেরকে সহায়তা করে তা হলে ভালো হয়।