ইতিহাস গড়া বিশ্বকাপ জয় শেষে মঙ্গলবার ভোরে আর্জেন্টিনায় ফিরেছেন লিওনেল মেসি-এমিলিয়ানো মার্টিনেজরা। বুয়েনস আইরেসে পা দিতেই তাদের অভ্যর্থনা জানাতে রাস্তায় ঢল নামে হাজারো মানুষের।
ইজিজা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ট্রফি হাতে নামলেন মেসি ঠিক যেন ডিয়াগো মারাডোনার মত। তার পাশে ছিলেন কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি।
মেসিদের আগমণ উপলক্ষে অনেকেই খাওয়া-ঘুম ছেড়ে দিয়েছিলেন। স্থানীয় গনমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় ২ লক্ষ মানুষ অ্যাপের মাধ্যমে বিমান অবতরণের দিকে নজর রেখেছিলেন।
বিমানবন্দরের ঠিক বাইরে মেসিদের জন্য অপেক্ষা করছিল সেই বহুল কাঙ্ক্ষিত ছাদখোলা বাস। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন লেখা এই বাসে চড়ার কতোই না স্বপ্ন ছিল মেসির। এই বাসে চড়েই বিমানবন্দরের বাইরে আসে আর্জেন্টিনা দল।
৩৬ বছরের আক্ষেপের অবসান ঘটিয়ে বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফিরেছেন ফুটবলাররা। এমন বীরদেরই তো মানায় এই অভ্যর্থনা।
মেসিরা ছাদখোলা বাসে ওঠার পর পরই বাঁশি-ভেঁপু বাজিয়ে শুরু হয় আনন্দ উদযাপন। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রে বেজে ওঠে মিশ্র সুর।
ছাদখোলা বাস এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে বুয়েন্স আইরেসের রাস্তাঘাট। নীল-সাদা পতাকায় ঢেকে যায় শহরের আকাশ।
গায়ে-মুখে আর্জেন্টিনার পতাকা আঁকা মানুষের স্রোত হাঁটতে থাকে মেসিদের বাসের পাশে পাশে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় তাদের লক্ক্য করে ছোঁড়া হয় ফুল-মালা। জায়গায় জায়গায় মাইকে চালানো হয় সে দেশের জাতীয় সঙ্গীত।
শহরের মাঝামাঝি থাকা বিখ্যাত ওবেলিস্ক মিনারে আরও একটি চমক অপেক্ষা করছিল মেসিদের জন্য। সারা মিনারের গায়ে লেজার রশ্মি দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয় বিশ্বকাপজয়ীদের ছবি।
ধীরে ধীরে ওবেলিস্ক মিনারের কাছে মানুষের ভিড় আরও বাড়ে। উৎফুল্ল মানুষের ভিড়ে বেশ কিছুক্ষণ বাস থেমেছিল এই জায়গায়। বাস এবং ওবেলিস্ককে ঘিরে এসময় গোল হয়ে নাচতে শুরু করেন ভক্তরা। কয়েক জন সমর্থক তো এগিয়ে এসে মেসিদের বাসেই উঠে গিয়েছিলেন। তবে আনন্দের এই মুহূর্তে তাদেরকে হতাশ করে নামিয়ে দেওয়া হয়নি বাস থকে।
লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার বিশ্ব অঙ্গনে অন্যতম পরিচয় ফুটবল। সেই ফুটবলে তারা শেষ বিশ্বকাপ যেতে ৩৬ বছর আগে। এরপর কয়েকবার কাছে গিয়েও হতাশ হতে হয়েছে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের। এবার সেসব গেরো কাটিয়ে বিশ্বকাপটা নিজেদের করেই নিল মেসিরা।