লিওনেল মেসির দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে শেষ চারে উঠেছে আর্জেন্টিনা। মেসিদের সামনে সুযোগ আছে ৩৬ বছর পর দলটির বিশ্বকাপ খরা ঘোচানোর। সেক্ষেত্রে মেসি-মার্টিনেজদের পেরোতে হবে আরও দুটি ধাপ। তবে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে বেশ সফলই বলা চলে দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।
মেসিদের এমন সফলতার দিনে পৃথিবীতে নেই আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা। দুই বছর আগেই তিনি পাড়ি দিয়েছেন পারাপারের দেশে। অর্থাৎ ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর এটিই আর্জেন্টিনার প্রথম বিশ্বকাপ। ম্যারাডোনাকে ছাড়া প্রথম বিশ্বকাপে অনেকেই মিস করছেন প্রয়াত এ কিংবদন্তিকে। কিন্তু ব্যতিক্রম মেসি। কারণ সাত বারের ব্যালন ডি অর জয়ী এ তারকা মনে করেন স্বর্গ থেকেই তাদের সঙ্গে রয়েছেন ম্যারাডোনা।
মেসির বিশ্বাস, স্বর্গ থেকেই তাদের সাফল্য উপভোগ করছেন ম্যারাডোনা। শুক্রবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালে জয়ের পর এসব কথা বলেছেন পিএসজির এ ফরোয়ার্ড।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে দিয়াগো ম্যারাডোনাকে স্মরণ করে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন মেসি। ’৮৬ বিশ্বকাপের নায়ককে মনে করে মেসি বলেন, ‘ডিয়েগো স্বর্গ থেকে আমাদের দেখছেন। তিনি আমাদের প্রেরণা দিচ্ছেন এবং আমি সত্যিই আশা করি এটা শেষ পর্যন্ত থাকবে।’
এর আগে গতকাল রাতে ডাচদের ট্রাইবেকারে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা। ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর লিড ধরে রাখতে পারেনি আর্জেন্টিনা। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সমতা ফিরিয়ে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। শেষ পর্যন্ত পেনাল্টিতে ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়। টাইব্রেকারে মেসিদের নায়ক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, প্রথম দুটো পেনাল্টি ঠেকিয়েই ডাচদের মনোবল ভেঙে দেন এ গোলরক্ষক।
টাইব্রেকারের পঞ্চম শটে নিশ্চিত হয় আর্জেন্টিনার সেমিফাইনালের টিকিট। শেষ শটটি নিয়েছিলেন লাউতারো মার্টিনেজ।আগের ম্যাচেই কয়েকটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া করায় চাপ ছিল তার ওপর। ডাচদের বিপক্ষেও তার নেওয়া শট ভাঙতে পারেনি রক্ষণদূর্গ। তবে স্পটকিকে ভুল করেননি ইন্টার মিলানের এ ফরোয়ার্ড। গোল করেই জিতিয়েছেন দলকে।
শেষ মুহূর্তে নিজের অনুভূতি কেমন ছিল তা জানাতে গিয়ে মেসি বলেছেন, ‘যখন লাউতারো গোল করল এবং আমরা সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলাম সেটা বেশ উপভোগ্য ছিল। সে আমাদের বুক থেকে ওজন নামিয়ে দিয়েছে। ম্যাচটা বেশ কঠিন ছিল। শুরু থেকেই বেশ প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়েছে। আমরা জানতাম এভাবেই ম্যাচটা খেলতে হবে।’
তারকা এ ফুটবলার আরও বলেন, ‘ডাচ খেলোয়াড়রা লং বলে আমাদের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছে এবং তাদের অনেক খেলোয়াড় আমাদের অঞ্চলে ছিল। শেষ পর্যন্ত তারা ড্র করেছিল যা আমাদের ভুগিয়েছে। কিন্তু আমরা নিজেদেরকে স্থির রেখে ঠিকই সেমিফাইনালে নিয়ে গেছি যা আমরা শুরু থেকে চেয়েছিলাম।’