ঢাকা ১১:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউয়ের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ আয়োজন করল বাংলাদেশ। আজ বুধবার কক্সবাজারের ইনানীতে তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই নৌবাহিনীর প্রথা অনুযায়ী ‘শিপস বেল’ বাজিয়ে ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আগত বিভিন্ন দেশের নৌসদস্যদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াড্স সমুদ্রে একটি বিশেষ মহড়া প্রদর্শন করে।

এর আগে সকালে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে কক্সবাজারে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ইনানীতে বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশের নৌবাহিনীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অঙ্গনে সামুদ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীসমূহ ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউর আয়োজন করে থাকে। বন্ধুপ্রতিম দেশের নৌবাহিনীর অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউর আয়োজন বিশ্বশান্তি ও পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মিতার বহিঃপ্রকাশ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আয়োজনে/সার্বিক তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আইএফআর ২০২২। এতে বিশ্বের মোট ২৮টি দেশের নৌবাহিনীর প্রধান/উচ্চপদস্থ নৌ প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ বিশ্বের সাত দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যুদ্ধজাহাজ, মেরিটাইম পেট্রল এয়ারক্রাফট ও হেলিকপ্টার আইএফআর অংশগ্রহণ করছে।

বঙ্গবন্ধুর প্রণীত পররাষ্ট্র মূলনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এই মূলমন্ত্র ধারণ করে আইএফআর ২০২২-এর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সীমানা ছাড়িয়ে বন্ধুত্ব’।

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে দৃষ্টিনন্দন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা হয়। জাতির পিতার স্মৃতি অবলম্বনে নির্মিত চিত্র প্রদর্শনী ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ অবলোকন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে আইএফআর ২০২২ উপলক্ষে নির্মিত অত্যাধুনিক কজওয়ে ও জেটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধুকন্যা জেটিতে অবস্থান করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ আগত বন্ধুপ্রতিম দেশসমূহের নৌবাহিনীর জাহাজ, উড়োজাহাজ, হেলিকপ্টার ও বিশেষায়িত বোটের অংশগ্রহণে একটি মনোজ্ঞ ফ্লিট রিভিউ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় জাহাজসমূহ থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান প্রদর্শন করা হয়।

আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিদের পাশাপাশি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সেনা ও বিমানবাহিনীর প্রধানসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং কূটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

আইএফআর ২০২২-এ অংশগ্রহণকারী ২৮টি দেশ হলো বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, মিশর, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, নেদারল্যান্ডস, ওমান, প্যালেস্টাইন, সুদান, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। এসব দেশের নৌবাহিনী প্রধান/উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিগণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

আইএফআর অনুষ্ঠান বিশ্বের বন্ধুপ্রতিম দেশসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক এবং পারস্পরিক সহযোগিতা উন্নয়নের পথকে আরও সুগম করবে বলে অনুষ্ঠানে আশা করা হয়। আরও বলা হয়, এই বিশাল আয়োজন কক্সবাজারকে একটি আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে নতুনভাবে উপস্থাপন করবে, যা বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউয়ের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৬:৩২:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ আয়োজন করল বাংলাদেশ। আজ বুধবার কক্সবাজারের ইনানীতে তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই নৌবাহিনীর প্রথা অনুযায়ী ‘শিপস বেল’ বাজিয়ে ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আগত বিভিন্ন দেশের নৌসদস্যদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াড্স সমুদ্রে একটি বিশেষ মহড়া প্রদর্শন করে।

এর আগে সকালে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে কক্সবাজারে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ইনানীতে বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশের নৌবাহিনীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অঙ্গনে সামুদ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীসমূহ ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউর আয়োজন করে থাকে। বন্ধুপ্রতিম দেশের নৌবাহিনীর অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউর আয়োজন বিশ্বশান্তি ও পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মিতার বহিঃপ্রকাশ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আয়োজনে/সার্বিক তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আইএফআর ২০২২। এতে বিশ্বের মোট ২৮টি দেশের নৌবাহিনীর প্রধান/উচ্চপদস্থ নৌ প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ বিশ্বের সাত দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যুদ্ধজাহাজ, মেরিটাইম পেট্রল এয়ারক্রাফট ও হেলিকপ্টার আইএফআর অংশগ্রহণ করছে।

বঙ্গবন্ধুর প্রণীত পররাষ্ট্র মূলনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এই মূলমন্ত্র ধারণ করে আইএফআর ২০২২-এর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সীমানা ছাড়িয়ে বন্ধুত্ব’।

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে দৃষ্টিনন্দন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা হয়। জাতির পিতার স্মৃতি অবলম্বনে নির্মিত চিত্র প্রদর্শনী ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ অবলোকন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে আইএফআর ২০২২ উপলক্ষে নির্মিত অত্যাধুনিক কজওয়ে ও জেটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধুকন্যা জেটিতে অবস্থান করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ আগত বন্ধুপ্রতিম দেশসমূহের নৌবাহিনীর জাহাজ, উড়োজাহাজ, হেলিকপ্টার ও বিশেষায়িত বোটের অংশগ্রহণে একটি মনোজ্ঞ ফ্লিট রিভিউ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় জাহাজসমূহ থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান প্রদর্শন করা হয়।

আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিদের পাশাপাশি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সেনা ও বিমানবাহিনীর প্রধানসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং কূটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

আইএফআর ২০২২-এ অংশগ্রহণকারী ২৮টি দেশ হলো বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, মিশর, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, নেদারল্যান্ডস, ওমান, প্যালেস্টাইন, সুদান, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। এসব দেশের নৌবাহিনী প্রধান/উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিগণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

আইএফআর অনুষ্ঠান বিশ্বের বন্ধুপ্রতিম দেশসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক এবং পারস্পরিক সহযোগিতা উন্নয়নের পথকে আরও সুগম করবে বলে অনুষ্ঠানে আশা করা হয়। আরও বলা হয়, এই বিশাল আয়োজন কক্সবাজারকে একটি আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে নতুনভাবে উপস্থাপন করবে, যা বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।