ফজরের নামাজ পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম একটি। অন্য চার ওয়াক্তের চেয়ে ফজরের নামাজ অধিক গুরুত্বপূর্ণ। ফজর নামাজ আদায় করলে বহু সওয়াব ও পুরস্কারের কথা হাদিসে উল্লেখ হয়েছে। প্রিয়নবী (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল সে মহান আল্লাহর রক্ষণাবেক্ষণের অন্তর্ভুক্ত হলো…।-(মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৯)
ফজর নামাজ আদায়ের জাগতিক বহু উপকার রয়েছে। রাসুল (সা.) এক হাদিসে বলেন, ‘তোমাদের কেউ ঘুমিয়ে পড়লে, শয়তান তার ঘাড়ের পেছনে তিনটি গিঁট দেয়। প্রতি গিঁটে সে এই কথা বলে, তোমার সামনে দীর্ঘ রাত অপেক্ষা করছে; অতএব তুমি শুয়ে থাকো। অতঃপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে একটি গিঁট খুলে যায়। অজু করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। অতঃপর নামাজ আদায় করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। তখন তার সকাল হয় উত্ফুল্ল চিত্তে ও প্রফুল্ল মনে। না হয়, সে সকালে কলুষ কালিমা ও আলস্য নিয়ে ওঠে।’ -(বুখারি, হাদিস : ১১৪২)
নামাজের জন্য মসজিদে প্রবেশের সঙ্গেসঙ্গে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদের নামাজ আদায়ের কথা বলেছেন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন দুই রাকাত নামাজ আদায় করা পর্যন্ত না বসে।’ -(সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৬৭)
জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খুতবারত অবস্থায় সুলাইক গাতফানি (রা.) এলেন। নবী (সা.) তাঁকে বলেন, তুমি কি এখানে আসার আগে দুই রাকাত নামাজ পড়েছ? সে বলল, না। তিনি বলেন, তুমি সংক্ষেপে দুই রাকাত পড়ে নাও। -(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১১৪)
তবে কেউ ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে প্রবেশ করলে সে আলাদা করে তাহিয়্যাতুল মসজিদের নামাজ আদায় করবে না। কারণ হাদিস শরিফে এসেছে, হাফসা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সময় হলে সংক্ষিপ্ত দু’রাকাত ছাড়া অন্য কোন নামাজ আদায় করতেন না। -(সহিহ মুসলিম ১৫৫১)
এ কারণেই ফকিহগণ বলেছেন, এই সময় স্বতন্ত্রভাবে তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামাজ আদায় করা মাকরূহ। (আলবাহরুর রায়িক ১/২৫২)
তবে স্বতন্ত্রভাবে আদায় না করে যদি মসজিদে ঢুকে সঙ্গে সঙ্গে ফজরের দু’ রাকাত সুন্নত আদায় করে নেয় কিংবা ফজর নামাজের জামাতে শরিক হয়ে যায় তাহলে তা তাহিয়্যাতুল মসজিদের স্থলাভিষিক্ত হয়ে যাবে। -(কিতাবুল ফাতাওয়া ২/৩৫৯)