বয়স ৩৪ হয়ে গেছে, সময়টা এখন ফুরিয়ে যাওয়ার। রবার্ট লেভান্ডভস্কি অবশ্য আছেন দারুণ ফর্মেই। এই বিশ্বকাপেও তো করলেন ২ গোল। তবে পরের বিশ্বকাপটা যখন আসবে, তখন তার বয়স হয়ে যাবে ৩৮। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন, নাকি জাতীয় দলের জার্সিটা তুলে রাখবেন, এমন প্রশ্ন ধেয়ে এসেছিল বার্সেলোনা তারকার কাছে। তার জবাবে নিজের আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতি টানার ইঙ্গিতই দিয়েছেন তিনি।
বার্সেলোনা স্ট্রাইকারের ভাষ্য, ‘শারীরিক দিক থেকে আমি ভয় পাই না মোটেও। কিন্তু ফুটবলের বাইরেও অনেক কিছুই আছে, আপনি এখানে সুখি কি না, চারপাশে কী হচ্ছে এসব ব্যাপার। আর তাই এখনই বলে দেওয়াটা কঠিন। খেলার দিক থেকে আমি মোটেও ভীত নই, তবে ভিন্ন ভিন্ন কিছু বিষয় আছে, সবকিছু একসঙ্গে ভাবনায় এনে তবেই বলতে পারব এই ম্যাচটাই শেষ কি না।’
মূলত ‘এখানে আপনি সুখি কি না’ কথাটাতেই লুকিয়ে আছে যত প্রশ্ন। জাতীয় দলে কি তাহলে সুখি নন লেভান্ডভস্কি? এমন প্রশ্নও উঠে আসছে বেশ। তবে নিজেদের ২০২২ বিশ্বকাপ যাত্রাটাকে সফল বলেই ধরে নিয়েছেন তিনি।
ফ্রান্সের কাছে হেরে বিশ্বকাপের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেওয়া পোলিশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা বিশ্বকাপে আরও কিছুক্ষণ থাকতে চেয়েছিলাম, কিন্তু দিনশেষে আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণ করে ফেলেছি। আমরা গ্রুপ পর্বের বাইরেও খেলতে চেয়েছিলাম। আপনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে খেলছেন, এটা সবসময়ই কঠিন। কিন্তু দল হিসেবে আমরা জানতাম আমাদের অভাবটা কীসের।’
ক্লাব ফুটবলে লেভান্ডভস্কি যতটা ভয়ঙ্কর, জাতীয় দলের জার্সিতে ঠিক ততটা নন। এর কারণ হিসেবে পোল্যান্ড কোচ চেসওভ মিখনিয়েভিচ দেখছেন নিজেদের ‘বড় দল’ না হওয়াটাকেই। তার ধারণা, বড় কোনো দলে খেললে জাতীয় দলের ক্যারিয়ারটাও ক্লাব ফুটবলের মতোই ঝলমলে হতো।
তিনি বলেন, ‘এমবাপে, মেসিদের মতো শীর্ষ মানের খেলোয়াড়দের দিকে প্রত্যাশাটা সবসময় বেশিই থাকে। তার (লেভান্ডভস্কির) পরিস্থিতিটা কঠিন, কারণ পর্তুগাল বা ফ্রান্সের মতো দলের খেলার ধরনটা তাদের ফরোয়ার্ডদের জন্য বেশি উপকারী।’
পোল্যান্ডের রক্ষণাত্মক খেলার ধরনের কথাটা এরপরই মনে করিয়ে দিলেন কোচ। বললেন, ‘আমাদের ভিন্ন রকমের খেলার ধরন। আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যে দলে মেসি বা এমবাপের মতো খেলোয়াড় আছেন, তাদের বিপক্ষে সে সীমাবদ্ধতা ঘোচাতে আমাদের বেশ কিছু কৌশল বেছে নিতে হয়।’
মিখনিয়েভিচের আশা, এখনই অবসর নেবেন না লেভা। বললেন, ‘সে দলের অধিনায়ক। তার ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটা সে নিজেই বেছে নেবে। তবে যেভাবে সে খেলে চলেছে, তাতে আমার মনে হয় সে আরও অনেক বছর ধরে দলের অধিনায়ক থাকবে।’