ঢাকা ০৭:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেসি-জাদুতে বিশ্বকাপে টিকে রইল আর্জেন্টিনা

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ আশার নিউক্লিয়াস যে লিওনেল মেসি, তা আর নতুন করে বলে দিতে হয় না। আজ যখন দলের ভাগ্যটা ঝুলছে সুতোয়, তখন সেই মেসিই হলেন ত্রাতা। মহাগুরুত্বপূর্ণ গোলে আর্জেন্টিনার ফিকে হয়ে যাওয়া আশাটাকে বাঁচিয়ে রাখলেন, এরপর সতীর্থ এনজো ফের্নান্দেজকে দিয়ে করালেন আরও একটি গোল। এই দুই গোলে ভর করেই মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানের মহাগুরুত্বপূর্ণ জয়টা পেয়ে গেছে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপে দলটির আশাও টিকে রইল সঙ্গে সঙ্গে।

অথচ এই মেসিকেই প্রথমার্ধে তেমন খুঁজেই পাওয়া যায়নি, যেমন যায়নি তার দল আর্জেন্টিনাকেও। প্রথমার্ধে বলের দখলে মেসিরা এগিয়ে ছিলেন বটে। কিন্তু গোলমুখে শট নিয়ে প্রতিপক্ষ গিলের্মো ওচোয়াকে তেমন বিপদে ফেলতেই পারেননি কেউ। যে দলে মেসির সঙ্গে আনহেল ডি মারিয়া, লাওতারো মার্টিনেজরা আছেন, সেই দলকে দ্বিতীয় সেরা বানিয়ে প্রতিপক্ষ গোলমুখে শটে এগিয়ে ছিল মেক্সিকো, ভাবা যায়! শুরুর ৪৫ মিনিটে তাই অবধারিতভাবেই গোল পায়নি আর্জেন্টিনা। যেভাবে খেলছিল, তাতে ক্রমে ফিকে হয়ে আসছিল দলটির শেষ ষোলোর আশাও।

এমন সব মুহূর্তে ফেলে আসা দিনে মেসি দলের ত্রাতা হয়ে এসেছেন বহুবার। কিন্তু তার যে এখন বয়স হয়েছে! আজও তো, বেশ ক’বার ড্রিবল করতে গিয়েও ব্যর্থ হলেন, ভুল পাস খেললেন, আরও কত কী যে করলেন, কিন্তু সব হলো ভুল! তার এমন দিনে আর আর্জেন্টিনার আশা থাকে কী করে!

এমন ধারণাকে মেসি ভুল প্রমাণ করলেন ম্যাচের ঘণ্টার কাটা পেরোনোর পর। বক্সের বাইরে বল পেয়ে সঙ্গে একটু স্পেসও পেয়ে গিয়েছিলেন। জাদুটা দেখালেন তখনই। সামনে ছিল মেক্সিকোর পুরো রক্ষণ, গোলরক্ষক গিলের্মো ওচোয়া তো বটেই। রক্ষণের জটলায় একটু ফাঁকা দেখলেন যেন, ট্রিগারটা চেপে বসলেন সঙ্গে সঙ্গে। মেক্সিকান রক্ষণ আর ওচোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বলটা গিয়ে জড়ায় জালে। মহাগুরুত্বপূর্ণ গোলের দেখাটা পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় মেসিদের দ্বিতীয় রাউন্ডের আশাটাও।

তবে স্রোতের বিপরীতে গোলের শঙ্কাটা তখনও উড়িয়ে দেওয়া চলছিল না কিছুতেই। আরও একটা গোল করে ম্যাচটা শেষ করে দিতে হতো আর্জেন্টিনাকে। এক গোলের লিড যে কর্পূরের মতো উবে যেতে পারে, তার প্রমাণ যে আর্জেন্টিনা পেয়ে গেছিল সৌদি আরব ম্যাচেই! আজ সে ভুলটা করল না মেসির দল।

এনজো ফের্নান্দেজের দুর্দান্ত এক গোলে ব্যবধানটা দ্বিগুণ করল নির্ধারিত সময় শেষের ৩ মিনিট আগে। সে গোলের যোগানটাও এলো মেসির পা থেকে। মহাতারকার পাস পেয়ে বক্সে একটু স্পেস পেয়ে গিয়েছিলেন এনজো। প্রথম ম্যাচে সালেম আলদাওসারি যে জায়গাটা থেকে গোলটা করলেন, প্রায় সেখান থেকে একই রকম একটা শট নিয়ে বসলেন ফারপোস্টে, ওচোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বলটা গিয়ে আছড়ে পড়ল জালে। মেসি গিয়ে চড়ে বসলেন এনজোর কোলে, লুসাইল স্টেডিয়ামে তখন কান পাতা দায়! হবেই বা না কেন? বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় পৌঁছানোর আশাটা যে দারুণভাবেই টিকিয়ে রাখা গেছে ২-০ গোলের জয়ে!

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মেসি-জাদুতে বিশ্বকাপে টিকে রইল আর্জেন্টিনা

আপডেট সময় ০৩:৩৪:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ আশার নিউক্লিয়াস যে লিওনেল মেসি, তা আর নতুন করে বলে দিতে হয় না। আজ যখন দলের ভাগ্যটা ঝুলছে সুতোয়, তখন সেই মেসিই হলেন ত্রাতা। মহাগুরুত্বপূর্ণ গোলে আর্জেন্টিনার ফিকে হয়ে যাওয়া আশাটাকে বাঁচিয়ে রাখলেন, এরপর সতীর্থ এনজো ফের্নান্দেজকে দিয়ে করালেন আরও একটি গোল। এই দুই গোলে ভর করেই মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানের মহাগুরুত্বপূর্ণ জয়টা পেয়ে গেছে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপে দলটির আশাও টিকে রইল সঙ্গে সঙ্গে।

অথচ এই মেসিকেই প্রথমার্ধে তেমন খুঁজেই পাওয়া যায়নি, যেমন যায়নি তার দল আর্জেন্টিনাকেও। প্রথমার্ধে বলের দখলে মেসিরা এগিয়ে ছিলেন বটে। কিন্তু গোলমুখে শট নিয়ে প্রতিপক্ষ গিলের্মো ওচোয়াকে তেমন বিপদে ফেলতেই পারেননি কেউ। যে দলে মেসির সঙ্গে আনহেল ডি মারিয়া, লাওতারো মার্টিনেজরা আছেন, সেই দলকে দ্বিতীয় সেরা বানিয়ে প্রতিপক্ষ গোলমুখে শটে এগিয়ে ছিল মেক্সিকো, ভাবা যায়! শুরুর ৪৫ মিনিটে তাই অবধারিতভাবেই গোল পায়নি আর্জেন্টিনা। যেভাবে খেলছিল, তাতে ক্রমে ফিকে হয়ে আসছিল দলটির শেষ ষোলোর আশাও।

এমন সব মুহূর্তে ফেলে আসা দিনে মেসি দলের ত্রাতা হয়ে এসেছেন বহুবার। কিন্তু তার যে এখন বয়স হয়েছে! আজও তো, বেশ ক’বার ড্রিবল করতে গিয়েও ব্যর্থ হলেন, ভুল পাস খেললেন, আরও কত কী যে করলেন, কিন্তু সব হলো ভুল! তার এমন দিনে আর আর্জেন্টিনার আশা থাকে কী করে!

এমন ধারণাকে মেসি ভুল প্রমাণ করলেন ম্যাচের ঘণ্টার কাটা পেরোনোর পর। বক্সের বাইরে বল পেয়ে সঙ্গে একটু স্পেসও পেয়ে গিয়েছিলেন। জাদুটা দেখালেন তখনই। সামনে ছিল মেক্সিকোর পুরো রক্ষণ, গোলরক্ষক গিলের্মো ওচোয়া তো বটেই। রক্ষণের জটলায় একটু ফাঁকা দেখলেন যেন, ট্রিগারটা চেপে বসলেন সঙ্গে সঙ্গে। মেক্সিকান রক্ষণ আর ওচোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বলটা গিয়ে জড়ায় জালে। মহাগুরুত্বপূর্ণ গোলের দেখাটা পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় মেসিদের দ্বিতীয় রাউন্ডের আশাটাও।

তবে স্রোতের বিপরীতে গোলের শঙ্কাটা তখনও উড়িয়ে দেওয়া চলছিল না কিছুতেই। আরও একটা গোল করে ম্যাচটা শেষ করে দিতে হতো আর্জেন্টিনাকে। এক গোলের লিড যে কর্পূরের মতো উবে যেতে পারে, তার প্রমাণ যে আর্জেন্টিনা পেয়ে গেছিল সৌদি আরব ম্যাচেই! আজ সে ভুলটা করল না মেসির দল।

এনজো ফের্নান্দেজের দুর্দান্ত এক গোলে ব্যবধানটা দ্বিগুণ করল নির্ধারিত সময় শেষের ৩ মিনিট আগে। সে গোলের যোগানটাও এলো মেসির পা থেকে। মহাতারকার পাস পেয়ে বক্সে একটু স্পেস পেয়ে গিয়েছিলেন এনজো। প্রথম ম্যাচে সালেম আলদাওসারি যে জায়গাটা থেকে গোলটা করলেন, প্রায় সেখান থেকে একই রকম একটা শট নিয়ে বসলেন ফারপোস্টে, ওচোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বলটা গিয়ে আছড়ে পড়ল জালে। মেসি গিয়ে চড়ে বসলেন এনজোর কোলে, লুসাইল স্টেডিয়ামে তখন কান পাতা দায়! হবেই বা না কেন? বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় পৌঁছানোর আশাটা যে দারুণভাবেই টিকিয়ে রাখা গেছে ২-০ গোলের জয়ে!