ঢাকা ০৮:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল পটুয়াখালীতে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত শহীদ জিয়া স্মৃতি পদক পেলেন জাতীয়তাবাদী বিএনপির রাজশাহী জেলার সদস্য সচিব গণতন্ত্রের স্বার্থেই নির্বাচন জরুরি : যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না তাঁতীলীগের সভাপতি ইকবালের যত কান্ড, জনমনে প্রশ্ন কে এই ইকবাল? সিএমপির পাহাড়তলী থানার মাদক বিরোধী অভিযানে ভুয়া সাংবাদিক ফারুক মাদকসহ গ্রেফতার অন্তর্বতী সরকারের ১শ দিন পার হলেও সচিবালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরের এখনও আওয়ামী লীগের দোসরা বহাল পূর্বাচলে দুর্নীতির রাজত্ব গড়েছেন নায়েব আলী শরীফ ডঃ মোশাররফ ফাউন্ডেশন কলেজ নবীনবরণ উৎসব ২০২৪ পালিত। মুগদায় ১০ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার

আমাদের থেকে রোহিঙ্গারা অনেক ভালো আছে

আমাদের থেকে রোহিঙ্গারা অনেক ভালো আছে। গত ৭০ বছর ধরে জঙ্গলে পাহাড় কেটে বসবাস করেও আমাদের আজ ভূমির ওপর কোনো অধিকার নেই। 

এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের চা বাগানের শ্রমিকেরা কেন পেছনে পড়ে আছে?’ শীর্ষক সংলাপে এভাবে নিজের হতাশার কথা বলছিলেন চা শ্রমিক খায়রুন্নাহার।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের মজুরি ১৭০ টাকা। আমরা ৩০০ টাকার জন্য আন্দোলনে নেমেছিলাম। দ্রব্যমূল্যের যে অবস্থা, তাতে ১৭০ টাকায় কিছুই হবে না। ১২০ টাকা মজুরিতে যে লাউ, ১৭০ টাকা মজুরিতে সেই কদু। ওই টাকায় আমাদের কিছুই হয় না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আমাদের ৫০০-১০০০ টাকা মজুরি দিলেও লাভ হবে না। তাছাড়া এতদিন আন্দোলনের পর আমাদের মজুরি মাত্র ১৭০ টাকা হয়েছে। আমাদের মতো মানুষদের মানুষই মনে করা হয় না। যদি আমাদের মানুষ মনে করা হতো, তাহলে ৩০০ টাকা ধরে মজুরি দেওয়া হতো।

আজ (বুধবার) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার অডিটোরিয়ামে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

খায়রুন্নাহার আরও বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা এখন শিক্ষিত হচ্ছে। অথচ তারা কোথাও কোনো ভালো চাকরি পাচ্ছে না। মালিক পক্ষ থেকে বলা হয় আমাদের নাকি বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। এই সুযোগ-সুবিধাগুলো কী সে বিষয়ে আমিও কিছু জানি না। তারা যে চিকিৎসা সুবিধার কথা বলে থাকে, সেখানে শুধু প্যারাসিটামল ওষুধ ছাড়া আর কিছুই পাই না। যখন কোনো শ্রমিক অসুস্থ হয়, তখন চা পরিবহন ট্রাক্টরের সাহায্য নিয়ে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। একটি অ্যাম্বুলেন্সও কপালে জোটে না। আমাদের কারণে আপনারা (মালিকপক্ষ) কোর্ট-টাই পরে বসে আছেন, অথচ আপনারা চাইলে প্রতিটি চা বাগানে একটি করে অ্যাম্বুলেন্স দিতে পারেন।

নারী চা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে তিনি আরও বলেন, চা বাগানে নারী শ্রমিক ৮০ শতাংশেরও বেশি। তারা সারাদিন বাগানে কাজ করে। অথচ বাগানে কোনো শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। ফলে সেখানে নারীরা মারাত্মক স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া গর্ভকালীন ছুটিসহ অনেক ক্ষেত্রেই অবহেলা রয়েছে।

সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড মো. আব্দুস শহীদ ও হাফিজ আহমদ মজুমদার, ইউএন বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি গুইন লুইস এবং আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন উপস্থিত ছিলেন।

সংলাপে বক্তরা বলেন, বাংলাদেশে চা বাগানের শ্রমিকেরা পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি। সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও সুরক্ষা নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। অন্যান্য চা উৎপাদনকারী দেশের তুলনায় আমাদের দেশের চা শ্রমিকেরা সবচেয়ে কম বেতন পায়। এছাড়াও তাদের যে সব জনসেবা দেওয়া হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। যদিও চা বাগানের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি ও আনুতোষিক সমন্বয়ের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল

আমাদের থেকে রোহিঙ্গারা অনেক ভালো আছে

আপডেট সময় ০৭:৪৯:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ নভেম্বর ২০২২

আমাদের থেকে রোহিঙ্গারা অনেক ভালো আছে। গত ৭০ বছর ধরে জঙ্গলে পাহাড় কেটে বসবাস করেও আমাদের আজ ভূমির ওপর কোনো অধিকার নেই। 

এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের চা বাগানের শ্রমিকেরা কেন পেছনে পড়ে আছে?’ শীর্ষক সংলাপে এভাবে নিজের হতাশার কথা বলছিলেন চা শ্রমিক খায়রুন্নাহার।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের মজুরি ১৭০ টাকা। আমরা ৩০০ টাকার জন্য আন্দোলনে নেমেছিলাম। দ্রব্যমূল্যের যে অবস্থা, তাতে ১৭০ টাকায় কিছুই হবে না। ১২০ টাকা মজুরিতে যে লাউ, ১৭০ টাকা মজুরিতে সেই কদু। ওই টাকায় আমাদের কিছুই হয় না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আমাদের ৫০০-১০০০ টাকা মজুরি দিলেও লাভ হবে না। তাছাড়া এতদিন আন্দোলনের পর আমাদের মজুরি মাত্র ১৭০ টাকা হয়েছে। আমাদের মতো মানুষদের মানুষই মনে করা হয় না। যদি আমাদের মানুষ মনে করা হতো, তাহলে ৩০০ টাকা ধরে মজুরি দেওয়া হতো।

আজ (বুধবার) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার অডিটোরিয়ামে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

খায়রুন্নাহার আরও বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা এখন শিক্ষিত হচ্ছে। অথচ তারা কোথাও কোনো ভালো চাকরি পাচ্ছে না। মালিক পক্ষ থেকে বলা হয় আমাদের নাকি বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। এই সুযোগ-সুবিধাগুলো কী সে বিষয়ে আমিও কিছু জানি না। তারা যে চিকিৎসা সুবিধার কথা বলে থাকে, সেখানে শুধু প্যারাসিটামল ওষুধ ছাড়া আর কিছুই পাই না। যখন কোনো শ্রমিক অসুস্থ হয়, তখন চা পরিবহন ট্রাক্টরের সাহায্য নিয়ে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। একটি অ্যাম্বুলেন্সও কপালে জোটে না। আমাদের কারণে আপনারা (মালিকপক্ষ) কোর্ট-টাই পরে বসে আছেন, অথচ আপনারা চাইলে প্রতিটি চা বাগানে একটি করে অ্যাম্বুলেন্স দিতে পারেন।

নারী চা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে তিনি আরও বলেন, চা বাগানে নারী শ্রমিক ৮০ শতাংশেরও বেশি। তারা সারাদিন বাগানে কাজ করে। অথচ বাগানে কোনো শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। ফলে সেখানে নারীরা মারাত্মক স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া গর্ভকালীন ছুটিসহ অনেক ক্ষেত্রেই অবহেলা রয়েছে।

সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড মো. আব্দুস শহীদ ও হাফিজ আহমদ মজুমদার, ইউএন বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি গুইন লুইস এবং আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন উপস্থিত ছিলেন।

সংলাপে বক্তরা বলেন, বাংলাদেশে চা বাগানের শ্রমিকেরা পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি। সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও সুরক্ষা নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। অন্যান্য চা উৎপাদনকারী দেশের তুলনায় আমাদের দেশের চা শ্রমিকেরা সবচেয়ে কম বেতন পায়। এছাড়াও তাদের যে সব জনসেবা দেওয়া হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। যদিও চা বাগানের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি ও আনুতোষিক সমন্বয়ের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।