নাটোরের বড়াইগ্রামে বিএনপি নেতা—কর্মীদের বেধড়ক মারপিটে আহত আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী উজ্জ্বল কুমার মন্ডল (২৫)—এর বাড়ি পরিদর্শন করেন বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রোববার দুপুরে তিনি স্বল্প সংখ্যক নেতা—কর্মীদের সাথে নিয়ে আকস্মিক উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর শ্মশানপাড়া এলাকায় উজ্জ্বল কুমার মন্ডলের বাড়িতে যায়। এ সময় তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উজ্জ্বলের মা ছায়া রানী’র সাথে কথা বলেন।
তিনি চিকিৎসাধীন উজ্জ্বলের শারিরীক অবস্থার খোঁজ—খবর নেন এবং উজ্জ্বলের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যেনো না ঘটে তার জন্য পুলিশ প্রশাসন সহ দলীয় নেতা—কর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। উজ্জ্বলের মা ছায়া রানী জানান, হঠাৎ বাড়ির সামনে পুলিশের গাড়ি সহ ৫টি গাড়ি এসে দাঁড়ায়। পরে জানতে পারলাম বিএনপি’র বড় নেতা এসেছেন।
তিনি আমার ছেলে উজ্জ্বলের খোঁজ—খবর নেন। আমাদের সকলের খোঁজ—খবরও নেন। উজ্জ্বলের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় এজাহার করার কথা বলেন। এছাড়া আমাদের পরিবারের ওপর হামলা হলে বা কেউ হুমকি দিলে নেতাদের তাৎক্ষনিক জানাতে বলেন। উজ্জ্বলের বাবা বিশু মন্ডল জানান, আমরা অনেক খুশি। আমরা হিন্দু মানুষ। অনেক ভয়তে ছিলাম। ভয়ে আমার ৭ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা বউমা (উজ্জ্বলের বউ)কে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। বিএনপি’র ওই বড় নেতা সহ এলাকার আরও বিএনপি নেতা আমাদের বাড়িতে আসার পর এখন শান্তি পাচ্ছি। ভয় দূর হয়েছে।
বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব রিজভীর সাথে ওই সময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুর রহমান, বড়াইগ্রাম উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক ও মাঝগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রভাষক আব্দুল আলীম, বনপাড়া পৌর বিএনপি’র সদস্য সচিব সরদার রফিকুল ইসলাম, বনপাড়া পৌর যুবদলের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ সালমান, বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ সহ অন্যান্যরা।
উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের পর পালিয়ে থাকা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বাড়িতে এসেছে এ খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর শ্মশানপাড়ার বাড়িতে আসে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতা জালাল ভঁুইয়া, যুবদলের নেতা জাহাঙ্গীর আলম সহ ৭/৮ জন বিএনপি নেতা—কর্মী। আওয়ামীলীগের শাসনামলে চাঁদাবাজি ও মাস্তানি করার অভিযোগ তুলে তারা বৃদ্ধ মা—বাবা ও অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী’র সামনে উজ্জ্বলকে বেধড়ক মারপিট করে এবং পরে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা ও টেলিভিশনে নিউজ প্রচার হয়। এ সংবাদ বিএনপি’র উচ্চ পর্যায়ে দৃষ্টিগোচর হলে কেন্দ্রীয় জেষ্ঠ্য নেতা রুহুল কবির রিজভী নির্যাতিত উজ্জ্বলের বাড়িতে আসেন এবং খেঁাজ—খবর নেন।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম জানান, উজ্জ্বলের বাড়িতে আসার আগে সম্মানিত জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব থানায় আসেন এবং উপজেলার সার্বিক আইন—শৃঙ্খলা নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেন।