ময়মনসিংহের ভালুকার ১৩৯ নং কাদিগড় নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ শামসুন্নাহারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও বিদ্যালয়ের নানা ক্ষতি সাধনের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে শতাধিক এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা দাবী জানালেও প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নের ১৩৯ নং কাদিগড় নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ শামসুন্নাহার বিভিন্ন অনিয়ম, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, বিদ্যালয়ের নানা ক্ষতি সাধনের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। বিদ্যালয়ের পাশেই তার বাড়ির অবস্থান থাকায় তিনি খেয়ালখুশি মত বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করেন, বিভিন্ন সময় ক্লাসেও অনুপস্থিত থাকেন।
এমনকি বিদ্যালয় মাঠে তাহার নিজস্ব ছাগল, গরু চড়ানো থেকে শুরু করে ধান মাড়াই করে খড় রেখে মাঠের পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগও রয়েছে তার নামে, এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটি বা অন্য কারও কথা শুনেন না তিনি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী এবং প্রধান শিক্ষক ও সাবেক ম্যানেজিং কমিটির নিষেধ স্বত্বেও শ্রেণীকক্ষে বেত ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে তার নামে। এমনকি কিছুদিন আগে খালিদ নামে ২য় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে প্রহারের ঘটনায় খালিদের বাবা বাদি হয়ে তার নামে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগও দিয়েছিলেন যা এখনও তদন্তাধীন।
অভিযুক্ত শিক্ষিকার স্বামী শফিকুল ইসলাম প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য হওয়ার সুযোগ নিয়ে রাতের আঁধারে বিদ্যালয় মাঠে চারা লাগিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করে। সেই ঘটনায় বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবঃপ্রাপ্ত সার্জেন্ট সিরাজুল ইসলাম বাঁধা প্রদান করলে তার বিরুদ্ধে উল্টো থানায় অভিযোগ করে অভিযুক্তরা।
সর্বশেষ অভিযুক্ত শিক্ষিকা শামছুন্নাহার ও তার স্বামী শফিকুল ইসলাম কারও অনুমতি ছাড়াই রাত্রিবেলা বিক্রির উদ্দেশ্যে বিদ্যালয়ের একটি কাঁঠাল গাছ কেটে ফেললে তা এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা আটক করে রেখেছে। এরকম নানা অনিয়ম ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে তার প্রত্যাহারের দাবীতে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অন্তত ২ শতাধিক অভিভাবক ও এলাকাবাসি স্বাক্ষর করে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের অনুলিপি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ও সেনাবাহিনী কমান্ডার, ভালুকা বরাবর ও জমা দিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষিকা মোছাঃ শামছুন্নাহার এর সাথে কথা বললে তিনি এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন। এসময় তিনি আরও বলেন, উনার শ্বশুরবাড়ির পারিবারিক দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে বিষয়টিকে স্কুলের সাথে জড়ানোর চেষ্টা করছে একটি মহল।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আহমদ জানান, ইতিপূর্বে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত চলমান আছে, নতুন করে ২ শতাধিক অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগের কপি তিনি পেয়েছেন। উপরোক্ত দুই বিষয়েই সরেজমিনে তদন্ত করতে আগামীকাল উক্ত বিদ্যালয়ে যাবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এসময় তিনি ওই শিক্ষিকার স্বামী এসব অপকর্মের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
উক্ত অভিযোগের সত্যতা যাচাই পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী নূর খান।