বরগুনার তালতলীতে কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে হদিস মিলছে না একটি সেতুর। অথচ সেতু নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করা টাকা তুলে নিয়েছেন ঠিকাদার। ফলে সেতু না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের।
ওই ঠিকাদার তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা এলজিইডি অফিসের সার্ভেয়ারের যোগসাজশে টাকা আত্মসাৎ করেছেন ছাত্রলীগ নেতা। জানা যায়, বরগুনার তালতলীর কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর ঝাড়াখালি গ্রামের খালের ওপর একটি লোহার সেতু নির্মাণের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এছাড়া সেতুটি নির্মাণের জন্য একই ইউনিয়নের অন্য আরেকটি সেতুর পুরোনো উপকরণও বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেতু নির্মাণের কাজটি পান আকন্দ ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে চুক্তিতে কাজটি নেন তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠু ও তার সহযোগী সোহেল। সেতু নির্মাণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ছিলেন উপজেলা এলজিইডি অফিসের সার্ভেয়ার মুরাদ হোসেন। তবে বাস্তবে ওই স্থানে কোনো সেতুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
এদিকে কাগজে-কলমে সেতু নির্মাণ শেষ হয়েছে বলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিলের পুরো টাকা তুলে নিয়েছেন তারা। তবে বাস্তবে সেতুর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অভিযোগ রয়েছে, সার্ভেয়ার মুরাদ হোসেনের যোগসাজশে সেতু নির্মাণ না করেই বিল তুলে নিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠু ও সোহেল। খালের ওপরে সেতু না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
আলম, রুহুল আমিন নেসার উদ্দিনসহ কয়েকজন স্থানীয় বলেন, এই খালে ব্রিজ না থাকায় আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। সেতু হবে কি না তাও আমাদের জানা নেই। স্থানীয়রা আরও বলেন, খালের ভেতরে ছোট্ট একটা বাঁধের মতো আছে। সেখান দিয়েই আমরা পারাপার হই। বর্ষাকালে পার হতে গিয়ে ভিজে যেতে হয়। আমাদের দাবি শিগগিরই এই খালের ওপর সেতু নির্মাণ করা হোক। তাহলে আমাদের ভোগান্তি লাঘব হবে। ছেলে-মেয়েরা স্বাচ্ছন্দ্যে স্কুলে যেতে পারবে।
তালতলী এলজিইডি কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মুরাদ হোসেন এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন অজুহাতে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। ঠিকাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠু বলেন, আমরা সেতু নির্মাণের বরাদ্দের বিল তুলেছি। এর বিপরীতে উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা পে অর্ডার রেখেছেন। করোনার কারণে সময় মতো কাজ করা যায়নি। এখন আমরা সেতু নির্মাণ করব।
এলজিইডির তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী ইমতিয়াজ হোসেন রাসেল বলেন, আমি ৩ সপ্তাহ হলো এখানে যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।