হাইকোর্টের আদেশের পর শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অবশেষে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। সংস্থার সহকারী পরিচালক সিলভিয়া ফেরদৌস ও সহকারি পরিচালক শহিদুল ইসলামের সমন্বয়ে যৌথ তদন্ত কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফ সাদিক।
এর আগে শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অনিয়মের বিষয়ে দুদকে দেওয়া আবেদন নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আবেদনটি নিষ্পত্তি করে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে এ আবেদনটি নিষ্পত্তি না করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, এবং ড. তাজুল ইসলামকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
জনস্বার্থে গণমাধ্যমকর্মী মনজুরুল বারী নয়নের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৫ মে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
তাজুল ইসলাম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অর্জিত শত কোটি টাকার সম্পত্তির বিষয়ে আমাদের মাতৃভূমিসহ বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
২০২১ সাল থেকেই দুদকে ড. তাজুলের বিরুদ্ধে আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জন, শত শত কোটি টাকার জায়গা জমি, বহুতল ভবন নির্মানসহ মাছের ঘের, মার্কেট, দোকানপাট গড়ে তোলার অভিযোগ তদন্তাধীন ছিল। কিন্তু আগের দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা সবকিছু ধামাচাপা দিয়ে রাখার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে দুদক এর কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক গতকাল আমাদের মাতৃভূমিকে জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশ পাওয়া মাত্র দু’জন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে দ্রুত তদন্ত কার্যক্রম চালানোর জরুরি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা ছয় সপ্তাহের মধ্যে অভিযুক্ত কর্মকর্তা, তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের অবৈধ সহায়-সম্পদ অর্জনের বিস্তারিত উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। তার প্রেক্ষিতে দুদক পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। এক প্রশ্নের জবাবে দুদক কমশিনার (তদন্ত) বলেন, দুই বছর আগে দাখিলকৃত অভিযোগ অনুসন্ধানে গাফিলতি থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপর প্রশ্নের জবাবে জহুরুল হক বলেন, অনেক বড় বড় রাঘব বোয়ালের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে আইনের আওতায় আনতে দুদক কোনরকম কার্পণ্য করেনি- এর বহু নজির রয়েছে। সেক্ষেত্রে কাস্টমস এর একজন কর্মকর্তার দুর্নীতি, লুটপাটের বিষয় ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।