ঢাকা ০৭:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গৃহবধূ হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন শেখ হাসিনা ১৬ বছরে ফ্যাসিবাদের জন্ম দিয়েছে বলেন জামান কামাল নুরুদ্দিন মোল্লা জামালপুর জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা বিরোধী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ইবি ছাত্রদলের প্রতিবাদ নবীনগর পূর্ব ৬ ইউনিয়নে সরিষা চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে পাংশায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ কিশোরের মৃত্যু সুন্দরবনে প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়া ধরার অপরাধে ২ জেলে আটক কমলনগরে ইউপি চেয়ারম্যান জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন না করলেও নিজে দু’টি ব্রিকফিল্ডের মালিক জবিতে অনলাইন সার্টিফিকেট এটেস্টেশন সুবিধা পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা মিঠাপুকুরে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার আইনে মামলা প্রেসক্লাবের নিন্দা ও প্রতিবাদ

আতঙ্কিত না হ‌লে দেশে দুর্ভিক্ষ হ‌বে না : খাদ্যমন্ত্রী

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশে ‌যে প‌রিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন হ‌চ্ছে ও মজুদ র‌য়ে‌ছে, জনগণ যদি হতাশাগ্রস্ত ও আতঙ্ক না হয় তাহ‌লে দে‌শে কো‌নো দুর্ভিক্ষ হ‌বে না।

রোববার (১৩ ন‌ভেম্বর) কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানির জন্য ‘হেলথ সার্টিফিকেট’ প্রদান অনুষ্ঠা‌নে খাদ্যমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) প‌ণ্যের এ স্বাস্থ্য সনদ প্রদান করে। প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে দু‌টি প্র‌তিষ্ঠান‌কে প‌ণ্যের স্বাস্থ্য সনদ প্রদান করা হয়। এগু‌লো হ‌লো—ইএসএল বাংলা‌দেশ লি‌. ও ট্রাস্ট অ্যান্ড ট্রেড এম ইম‌পেক্স।

উদাহরণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, গত সপ্তাহে ডাক্তারের চেম্বারে এক লোক চালসহ খাদ্যদ্রব্য মজুদ ক‌রে রাখ‌তে সবাইকে পরামর্শ দিচ্ছেন। ওই লোক জানান তিনি দেড় বছরের জন্য চাল-ডালসহ নিত্যপণ্য মজুদ করে রেখেছেন। তার মতো আতঙ্কিত না হয়ে সবাই খাদ্যদ্রব্য মজুদ না করে তাহলে দেশে খাদ্য সংকট হবে না। এছাড়া দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই।

প‌ণ্যের স্বাস্থ্য সনদ প্রস‌ঙ্গে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমাদেরকে সার্টিফিকেট দিয়ে প্রমাণ করতে হচ্ছে রপ্তানির জন্য নিরাপদ খাদ্য দরকার। এখন আমা‌দের সবার উচিত সচেতন হওয়া। আমরা য‌দি সব খাদ্য নিরাপদ কর‌তে পা‌রি তাহ‌লে এত সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে না। নি‌জে‌দের সু-স্বাস্থ্য ও খাদ্যদ্রব্য রপ্তা‌নির জন্য নিরাপদ খা‌দ্যের একটা অবস্থা তৈরি করতে হ‌বে। যাতে করে সার্টিফিকেট নয়, আমাদের নাম শুনলেই বিদেশিরা যেন খাদ্যদ্রব্য আমদানিতে আগ্রহ হন।

তিনি আরও বলেন, এতদিন খাদ্যদ্রব্য রপ্তা‌নির জন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান দেশ-বিদেশের ল্যাব থেকে পণ্যের মান পরীক্ষা করে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কাছে দিতো। ওইসব পরীক্ষা নিরীক্ষার সব কাজ এখন থেকে বিএফএসএ নিজেই করবে। এতে করে একদিকে রপ্তানিকারকদের ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে পণ্যের মানের বিষয়েও কম্পোমাইজ করার সুযোগ থাকবে না।

খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের কাজের যাতে ওভারলেপিং না হয়, তা আমরা বসে সমাধানের চেষ্টা করবো। তিনি খাদ্যদ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সর্বজনস্বীকৃত স্বাস্থ্য সনদ প্রদান করার জন্য আস্থা তৈরির ওপর জোর দেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায়িত্ব যথাযথ ও নির্ভুলভাবে প্রদান করবে বলে আশা প্রকাশ করেন করেন।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, খাদ্যদ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিএফএসএ কর্তৃক প্রদেয় স্বাস্থ্য সনদ দেশের সামগ্রিক রপ্তানি বৃদ্ধি করবে।

স্বাস্থ্য সনদ প্রদান অনুষ্ঠা‌নের আগে সকালে শুরু হওয়া কর্মশালায় নিরাপদ খাদ্য আইন ও বিধি সম্পর্কে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফএসএর সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমদ। তাতে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর বিভিন্ন ধারা ও অধ্যায়, খাদ্য দূষণকারী, সংযোজন দ্রব্য ব্যবহার, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ সংরক্ষণ, খাদ্য স্পর্শক, ব্যবসায়ীর বাধ্যবাধকতা, দূষণ, টক্সিন ও ক্ষতিকর অবশিষ্টাংশ, ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ ও বিষাক্ত পদার্থযুক্ত খাদ্যদ্রব্য প্রত্যাহার বিষয়ক প্রবিধানমালার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

কর্মশালায় জানানো হয়, বিশ্বে প্রতিবছর ১০ জনে একজন খাদ্যজনিত অসুস্থতায় ভোগেন এবং ৪ লাখ ২০ হাজার জন মারা যান। প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন শিশু মারা যায় খাদ্যজনিত অসুস্থতায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ১৫০ মিলিয়ন মানুষ অসুস্থ হচ্ছেন এই কারণে। যার মধ্যে মারা যান ১ লাখ ৭৫ হাজার, যার মধ্যে ৫০ হাজার শিশু রয়েছে।

জানা যায়, আমদানিকারক দেশের চাহিদা অনুযায়ী রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান পণ্যের ল্যাব টেস্ট রিপোর্ট আনলে ইপিবি তা দেখে সার্টিফিকেট ইস্যু করতো। যেসব রপ্তানিকারকের সার্টিফিকেট দরকার, বন্দর থেকে তাদের পণ্যের নমুনা এনে পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট প্রদানের সবগুলো কাজই করবে বিএফএসএ। তবে ল্যাব টেস্টে কোনো পণ্যে হেলথ হ্যাজার্ড পাওয়া গেলে তা আর রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে না।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বিএফএসএ’র আইন কর্মকর্তা জনাব শেখ মো. ফেরদৌস আরাফাত। বিএফএসএর সদস্য আব্দুল আলীম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গৃহবধূ হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

আতঙ্কিত না হ‌লে দেশে দুর্ভিক্ষ হ‌বে না : খাদ্যমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৫:৫৩:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশে ‌যে প‌রিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন হ‌চ্ছে ও মজুদ র‌য়ে‌ছে, জনগণ যদি হতাশাগ্রস্ত ও আতঙ্ক না হয় তাহ‌লে দে‌শে কো‌নো দুর্ভিক্ষ হ‌বে না।

রোববার (১৩ ন‌ভেম্বর) কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানির জন্য ‘হেলথ সার্টিফিকেট’ প্রদান অনুষ্ঠা‌নে খাদ্যমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) প‌ণ্যের এ স্বাস্থ্য সনদ প্রদান করে। প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে দু‌টি প্র‌তিষ্ঠান‌কে প‌ণ্যের স্বাস্থ্য সনদ প্রদান করা হয়। এগু‌লো হ‌লো—ইএসএল বাংলা‌দেশ লি‌. ও ট্রাস্ট অ্যান্ড ট্রেড এম ইম‌পেক্স।

উদাহরণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, গত সপ্তাহে ডাক্তারের চেম্বারে এক লোক চালসহ খাদ্যদ্রব্য মজুদ ক‌রে রাখ‌তে সবাইকে পরামর্শ দিচ্ছেন। ওই লোক জানান তিনি দেড় বছরের জন্য চাল-ডালসহ নিত্যপণ্য মজুদ করে রেখেছেন। তার মতো আতঙ্কিত না হয়ে সবাই খাদ্যদ্রব্য মজুদ না করে তাহলে দেশে খাদ্য সংকট হবে না। এছাড়া দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই।

প‌ণ্যের স্বাস্থ্য সনদ প্রস‌ঙ্গে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমাদেরকে সার্টিফিকেট দিয়ে প্রমাণ করতে হচ্ছে রপ্তানির জন্য নিরাপদ খাদ্য দরকার। এখন আমা‌দের সবার উচিত সচেতন হওয়া। আমরা য‌দি সব খাদ্য নিরাপদ কর‌তে পা‌রি তাহ‌লে এত সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে না। নি‌জে‌দের সু-স্বাস্থ্য ও খাদ্যদ্রব্য রপ্তা‌নির জন্য নিরাপদ খা‌দ্যের একটা অবস্থা তৈরি করতে হ‌বে। যাতে করে সার্টিফিকেট নয়, আমাদের নাম শুনলেই বিদেশিরা যেন খাদ্যদ্রব্য আমদানিতে আগ্রহ হন।

তিনি আরও বলেন, এতদিন খাদ্যদ্রব্য রপ্তা‌নির জন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান দেশ-বিদেশের ল্যাব থেকে পণ্যের মান পরীক্ষা করে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কাছে দিতো। ওইসব পরীক্ষা নিরীক্ষার সব কাজ এখন থেকে বিএফএসএ নিজেই করবে। এতে করে একদিকে রপ্তানিকারকদের ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে পণ্যের মানের বিষয়েও কম্পোমাইজ করার সুযোগ থাকবে না।

খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের কাজের যাতে ওভারলেপিং না হয়, তা আমরা বসে সমাধানের চেষ্টা করবো। তিনি খাদ্যদ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সর্বজনস্বীকৃত স্বাস্থ্য সনদ প্রদান করার জন্য আস্থা তৈরির ওপর জোর দেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায়িত্ব যথাযথ ও নির্ভুলভাবে প্রদান করবে বলে আশা প্রকাশ করেন করেন।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, খাদ্যদ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিএফএসএ কর্তৃক প্রদেয় স্বাস্থ্য সনদ দেশের সামগ্রিক রপ্তানি বৃদ্ধি করবে।

স্বাস্থ্য সনদ প্রদান অনুষ্ঠা‌নের আগে সকালে শুরু হওয়া কর্মশালায় নিরাপদ খাদ্য আইন ও বিধি সম্পর্কে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফএসএর সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমদ। তাতে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর বিভিন্ন ধারা ও অধ্যায়, খাদ্য দূষণকারী, সংযোজন দ্রব্য ব্যবহার, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ সংরক্ষণ, খাদ্য স্পর্শক, ব্যবসায়ীর বাধ্যবাধকতা, দূষণ, টক্সিন ও ক্ষতিকর অবশিষ্টাংশ, ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ ও বিষাক্ত পদার্থযুক্ত খাদ্যদ্রব্য প্রত্যাহার বিষয়ক প্রবিধানমালার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

কর্মশালায় জানানো হয়, বিশ্বে প্রতিবছর ১০ জনে একজন খাদ্যজনিত অসুস্থতায় ভোগেন এবং ৪ লাখ ২০ হাজার জন মারা যান। প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন শিশু মারা যায় খাদ্যজনিত অসুস্থতায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ১৫০ মিলিয়ন মানুষ অসুস্থ হচ্ছেন এই কারণে। যার মধ্যে মারা যান ১ লাখ ৭৫ হাজার, যার মধ্যে ৫০ হাজার শিশু রয়েছে।

জানা যায়, আমদানিকারক দেশের চাহিদা অনুযায়ী রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান পণ্যের ল্যাব টেস্ট রিপোর্ট আনলে ইপিবি তা দেখে সার্টিফিকেট ইস্যু করতো। যেসব রপ্তানিকারকের সার্টিফিকেট দরকার, বন্দর থেকে তাদের পণ্যের নমুনা এনে পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট প্রদানের সবগুলো কাজই করবে বিএফএসএ। তবে ল্যাব টেস্টে কোনো পণ্যে হেলথ হ্যাজার্ড পাওয়া গেলে তা আর রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে না।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বিএফএসএ’র আইন কর্মকর্তা জনাব শেখ মো. ফেরদৌস আরাফাত। বিএফএসএর সদস্য আব্দুল আলীম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।