ঢাকা ০৪:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ডিআইইউ’তে ‘আল ঈমান ফাউন্ডেশনের’ বিনামূল্যে কুরআন বিতরণ নওগাঁয় ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে মিলছে টিসিবি’র পণ্য মধ্যরাত থেকে লাইনে অপেক্ষা বোরহানউদ্দিন প্রেসক্লাবের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় বাইউস্ট গ্লোবাল অ্যাফেয়ারস কাউন্সিলে ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ভিয়েতনাম থেকে এসেছে ২৯ হাজার টন চাল মানিকগঞ্জে বিশ্ব পানি দিবস পালিত অজানা এক ইতিহাস টাকশাল নগরী মাহিসন্তোষ- ধামইরহাট, নওগাঁ বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়িতে গৃহবধূকে জবাই করে হত্যা, আটক ১ ময়মনসিংহ ভালুকায় হাসিনা ও কাদেরসহ ৩৯৫ জনের নামে হত্যা মামলা পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ৫ বাংলাদেশী নাগরিকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ

দেশে ফিরে দিঠি কাঁদতে কাঁদতে যা বললেন

অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা কিংবদন্তি গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কিন্তু বাবার পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার দিনে দেশে ছিলেন না গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মেয়ে গায়িকা দিঠি। বাবাকে শেষ বিদায় জানাতে এদিন বিকেল ৫টায় দেশে ফিরেছেন তিনি। রাতে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেন বাবাকে হারিয়ে শোকের সাগরে ভাসতে থাকা দিঠি । এসময় কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন,‘বাবার এমন মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছি না। দেশে থাকলে সর্বক্ষণ আমি তার পাশে থাকার চেষ্টা করতাম। নানান গল্প-আলোচনা, গান-বাজনায় বাবাকে ফুরফুরে রাখতাম। আমাদের বন্ধনটা কতটা শক্তিশালী ছিলো বলে বোঝাতে পারব না। সবসময় বাবার এত কাছে ছিলাম অথচ যখন আমি দূরে তখন তিনি চলে গেলেন!’

বাবাকে ছাড়া এখন আমি কীভাবে বাঁচব? বাবাকে এখন কোথায় পাবো? এ কথা বলে আহাজারি করতে করতে দিঠি জানান, গত শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই গিয়েছিলেন বেড়ানোর উদ্দেশে। পরদিন সকালে সেখানে তার ছেলেকে দুঃসংবাদটি জানান তার ভাইয়ের স্ত্রী। ছেলে তাকে দুঃসংবাদের কথা ভেঙে বলেননি। দেশে ফোন করে তিনি জানতে পারেন-তার বাবার আর নেই।’

দিঠি বলেন, ‘আগের দিন সন্ধ্যায়ও বাবার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি একটু গ্যাসের সমস্যায় ভুগছিলেন। জানিয়েছিলেন খাওয়ার রুচি পাচ্ছেন না। গ্যাসের ওষুধও খেয়েছিলেন। রাতে ভাইয়াদের সঙ্গে গল্প করেছিলেন। ভোর ৬টায় দিকে উঠে বার্থরুমে যান। তিনি বাথরুমে গেলে আম্মুও সাথে সাথে গিয়ে তাকে নজরে রাখতেন। এদিনও ছিলেন। বলা যায় বাবা পড়ে যাওয়ার মুহূর্তেই আম্মু তাকে ধরে ফেলেন। হাসপাতালে নেওয়ার সময়ও নাকি বাবার জ্ঞান ছিল। কিন্তু সিসিইউ-আইসিইউতে নেওয়ার পর জানা যায় তিনি আর নেই! এত বড় আঘাত আমি কীভাবে সইবো?’

কাঁন্নাজড়িত কণ্ঠে এই গীতিকবি কন্যা আরও যোগ করেন, ‘আমার বাবা মানুষের এত প্রিয় ছিলেন। জীবনে কখনো কাউকে তার সমালোচনা করতে দেখিনি। আমরা গর্বিত তার সন্তান হতে পারে। সবার কাছে আমার বাবার জন্য দোয়া চাই।’ উল্লেখ্য, গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেন। গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণ ও চিত্রনাট্য রচনা করেও সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। তার মৃত্যুতে দেশের শোবিজ অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিআইইউ’তে ‘আল ঈমান ফাউন্ডেশনের’ বিনামূল্যে কুরআন বিতরণ

দেশে ফিরে দিঠি কাঁদতে কাঁদতে যা বললেন

আপডেট সময় ০৯:৩০:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা কিংবদন্তি গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কিন্তু বাবার পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার দিনে দেশে ছিলেন না গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মেয়ে গায়িকা দিঠি। বাবাকে শেষ বিদায় জানাতে এদিন বিকেল ৫টায় দেশে ফিরেছেন তিনি। রাতে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেন বাবাকে হারিয়ে শোকের সাগরে ভাসতে থাকা দিঠি । এসময় কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন,‘বাবার এমন মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছি না। দেশে থাকলে সর্বক্ষণ আমি তার পাশে থাকার চেষ্টা করতাম। নানান গল্প-আলোচনা, গান-বাজনায় বাবাকে ফুরফুরে রাখতাম। আমাদের বন্ধনটা কতটা শক্তিশালী ছিলো বলে বোঝাতে পারব না। সবসময় বাবার এত কাছে ছিলাম অথচ যখন আমি দূরে তখন তিনি চলে গেলেন!’

বাবাকে ছাড়া এখন আমি কীভাবে বাঁচব? বাবাকে এখন কোথায় পাবো? এ কথা বলে আহাজারি করতে করতে দিঠি জানান, গত শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই গিয়েছিলেন বেড়ানোর উদ্দেশে। পরদিন সকালে সেখানে তার ছেলেকে দুঃসংবাদটি জানান তার ভাইয়ের স্ত্রী। ছেলে তাকে দুঃসংবাদের কথা ভেঙে বলেননি। দেশে ফোন করে তিনি জানতে পারেন-তার বাবার আর নেই।’

দিঠি বলেন, ‘আগের দিন সন্ধ্যায়ও বাবার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি একটু গ্যাসের সমস্যায় ভুগছিলেন। জানিয়েছিলেন খাওয়ার রুচি পাচ্ছেন না। গ্যাসের ওষুধও খেয়েছিলেন। রাতে ভাইয়াদের সঙ্গে গল্প করেছিলেন। ভোর ৬টায় দিকে উঠে বার্থরুমে যান। তিনি বাথরুমে গেলে আম্মুও সাথে সাথে গিয়ে তাকে নজরে রাখতেন। এদিনও ছিলেন। বলা যায় বাবা পড়ে যাওয়ার মুহূর্তেই আম্মু তাকে ধরে ফেলেন। হাসপাতালে নেওয়ার সময়ও নাকি বাবার জ্ঞান ছিল। কিন্তু সিসিইউ-আইসিইউতে নেওয়ার পর জানা যায় তিনি আর নেই! এত বড় আঘাত আমি কীভাবে সইবো?’

কাঁন্নাজড়িত কণ্ঠে এই গীতিকবি কন্যা আরও যোগ করেন, ‘আমার বাবা মানুষের এত প্রিয় ছিলেন। জীবনে কখনো কাউকে তার সমালোচনা করতে দেখিনি। আমরা গর্বিত তার সন্তান হতে পারে। সবার কাছে আমার বাবার জন্য দোয়া চাই।’ উল্লেখ্য, গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেন। গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণ ও চিত্রনাট্য রচনা করেও সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। তার মৃত্যুতে দেশের শোবিজ অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।