ঢাকা ০৪:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ল সাংবাদিক নূরুল কবিরকে বিমানবন্দরে হয়রানি, জামায়াতের উদ্বেগ নয়াদিল্লির প্রেস মিনিস্টার হলেন দুই সাংবাদিক ঐক্যকে রাখতে হবে ইস্পাত কঠিন অটুট: জামায়াত আমির হাসিনার বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও কেন বিমান পাঠায়নি ভারত শপথ নিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিলের সিদ্ধান্ত আবারো চেম্বারের সভাপতি নির্বাচিত আব্দুল ওয়াহেদ মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল পটুয়াখালীতে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত

ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে শুরু করেন কৃষি, ২ বছরেই বাজিমাত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃ-বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছেন সুলতানুল আরেফিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাত অঞ্চলে চাকরিও নেন। সেখান থেকে যোগ দেন একটি বেসরকারি ব্যাংকে সিনিয়র ক্যাশ অফিসার হিসেবে। কিন্তু কিছুতেই মন বসাতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত চাকরি ছেড়ে দেন। নাম লেখান কৃষিতে। দুই বছরের মধ্যেই বাজিমাত করেছেন স্মার্ট এই কৃষক।

সুলতানুল আরেফিন রাজশাহী নগরীর হড়গ্রাম এলাকার বাসিন্দা। জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের ধামিলা এলাকায় প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘ফলবাড়ি’ কৃষি খামার।

সুলতানুল আরেফিন বলেন, এখন এক দিন পর পর ৪০০-৫০০ পিস লাউ উঠে। প্রতি পিস খেত থেকেই বিক্রি হয়ে যায় ২২ টাকায়। প্রথম দিকে স্থানীয় পাইকারি ক্রেতারা আসতেন। এখন ঢাকার পাইকাররা এসে লাউ নিয়ে যান। তিনি আশা করেন, আরও তিন মাস লাউ ধরবে। লাউ থেকেই শুধু ৩ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

Dhaka post

এই কৃষি কর্মকর্তার ভাষ্য, সুতানুল আরেফিন তার আমবাগানের পতিত জমিতে লাউ চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। কৃষি বিভাগ থেকে তাকে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, ইওলো ফাঁদ ও জৈব বালাইনাশকসহ বিষমুক্ত লাউ চাষের কলাকৌশল শেখানো হয়েছে। এখন তিনি প্রতিদিন ২০০ পিস লাউ বিক্রি করছেন। ফলে তার বাগান পরিচর্যায় প্রতিদিন যে খরচ হয় সেটা লাউ বিক্রি করেই উঠে আসছে। তার দেখাদেখি অন্যরাও বাগানের পতিত জমিতে চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।

আঞ্চলিক কৃষি দপ্তরের হিসেবে, ২০০০-২০১০ মৌসুমে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সবজির আবাদ ছিল ৬০ হাজার ৪৫১ হেক্টর। সেই বছর সবজি উৎপাদন হয় ৯ লাখ ৯৯ হাজার ২৬৯ টন। ওই মৌসুমে কেবল রাজশাহী জেলায় ২১ হাজার ৫০৮ হেক্টরে সবজি উৎপাদন ছিল ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪১ টন।

গত ২০২১-২০২২ মৌসুমে এই অঞ্চলে সবজির আবাদ হয় ৭৮ হাজার ৪৯২ হেক্টর। তা থেকে সবজি উৎপাদন হয়েছেন ১৪ লাখ ৮৫৭ টন। এর মধ্যে রাজশাহী জেলায় ২৯ হাজার ৪০৩ হেক্টরে সবজি ফলেছে ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৩৪২ টন।

Dhaka post

আঞ্চলিক কৃষি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ মৌসুমের এই অঞ্চলে ১ লাখ ৬ হাজার ৮৫৫ হেক্টর ফল চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী জেলায় ২৭ হাজার ৮৯২ হেক্টর জমিতে ফলবাগান ছিল।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই অঞ্চলে ফলবাগানের একটি বড় অংশ নতুন। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিত এই ফলবাগান গড়ে তুলেছেন কৃষি উদ্যোক্তারা। এসব বাগানের পতিত জমি সবজি চাষের আওতায় আনা গেলে পাল্টে যাবে এই অঞ্চলের অর্থনীতির গতি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ল

ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে শুরু করেন কৃষি, ২ বছরেই বাজিমাত

আপডেট সময় ১২:২১:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ নভেম্বর ২০২২

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃ-বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছেন সুলতানুল আরেফিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাত অঞ্চলে চাকরিও নেন। সেখান থেকে যোগ দেন একটি বেসরকারি ব্যাংকে সিনিয়র ক্যাশ অফিসার হিসেবে। কিন্তু কিছুতেই মন বসাতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত চাকরি ছেড়ে দেন। নাম লেখান কৃষিতে। দুই বছরের মধ্যেই বাজিমাত করেছেন স্মার্ট এই কৃষক।

সুলতানুল আরেফিন রাজশাহী নগরীর হড়গ্রাম এলাকার বাসিন্দা। জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের ধামিলা এলাকায় প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘ফলবাড়ি’ কৃষি খামার।

সুলতানুল আরেফিন বলেন, এখন এক দিন পর পর ৪০০-৫০০ পিস লাউ উঠে। প্রতি পিস খেত থেকেই বিক্রি হয়ে যায় ২২ টাকায়। প্রথম দিকে স্থানীয় পাইকারি ক্রেতারা আসতেন। এখন ঢাকার পাইকাররা এসে লাউ নিয়ে যান। তিনি আশা করেন, আরও তিন মাস লাউ ধরবে। লাউ থেকেই শুধু ৩ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

Dhaka post

এই কৃষি কর্মকর্তার ভাষ্য, সুতানুল আরেফিন তার আমবাগানের পতিত জমিতে লাউ চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। কৃষি বিভাগ থেকে তাকে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, ইওলো ফাঁদ ও জৈব বালাইনাশকসহ বিষমুক্ত লাউ চাষের কলাকৌশল শেখানো হয়েছে। এখন তিনি প্রতিদিন ২০০ পিস লাউ বিক্রি করছেন। ফলে তার বাগান পরিচর্যায় প্রতিদিন যে খরচ হয় সেটা লাউ বিক্রি করেই উঠে আসছে। তার দেখাদেখি অন্যরাও বাগানের পতিত জমিতে চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।

আঞ্চলিক কৃষি দপ্তরের হিসেবে, ২০০০-২০১০ মৌসুমে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সবজির আবাদ ছিল ৬০ হাজার ৪৫১ হেক্টর। সেই বছর সবজি উৎপাদন হয় ৯ লাখ ৯৯ হাজার ২৬৯ টন। ওই মৌসুমে কেবল রাজশাহী জেলায় ২১ হাজার ৫০৮ হেক্টরে সবজি উৎপাদন ছিল ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪১ টন।

গত ২০২১-২০২২ মৌসুমে এই অঞ্চলে সবজির আবাদ হয় ৭৮ হাজার ৪৯২ হেক্টর। তা থেকে সবজি উৎপাদন হয়েছেন ১৪ লাখ ৮৫৭ টন। এর মধ্যে রাজশাহী জেলায় ২৯ হাজার ৪০৩ হেক্টরে সবজি ফলেছে ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৩৪২ টন।

Dhaka post

আঞ্চলিক কৃষি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ মৌসুমের এই অঞ্চলে ১ লাখ ৬ হাজার ৮৫৫ হেক্টর ফল চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী জেলায় ২৭ হাজার ৮৯২ হেক্টর জমিতে ফলবাগান ছিল।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই অঞ্চলে ফলবাগানের একটি বড় অংশ নতুন। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিত এই ফলবাগান গড়ে তুলেছেন কৃষি উদ্যোক্তারা। এসব বাগানের পতিত জমি সবজি চাষের আওতায় আনা গেলে পাল্টে যাবে এই অঞ্চলের অর্থনীতির গতি।