ইন্টারন্যাশনাল বক্সিং প্রতিযোগীতায় হবিগঞ্জ জেলা থেকে ৪জন খেলুয়ার অংশ নিয়ে ১৭টি জেলার ২৮জন খেলুয়ারকে হারিয়ে হবিগঞ্জ জেলার দুই বাঘিনী কন্যা তানজিমা সুলতানা শেলী ও রিমা সরকারের জয়লাভ।
জানাযায়,গতকাল ৪নভেম্বর(শক্রুবার) বিকাল ৫টায় ঢাকার মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়াম মাঠে ইন্টারন্যাশনাল পর্যায়ে’বিপিবিএস বাংলাদেশ বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ এর উদ্যেগে এক টুর্নামেন্টের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল বক্সিং সোসাইটি। উক্ত টুর্নামেন্টে সারাদেশ থেকে ১৭টি জেলার ২৮জন বক্সার প্রতিযোগী অংশ গ্রহন করেন। আর এই টুর্নামেন্টে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং বক্সিং একাডেমি থেকে ৪জন খেলুয়ার অংশ নেন এই প্রতিযোগীতায়।
এবং খেলোয়াড়দের নিয়ে ভোরে রওয়ানা দেন একাডেমির প্রতিষ্টাতা প্রশিক্ষক জুয়েল রহমান ও টিম ম্যানেজার সাহিবুর রহমান। তারা দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে ঢাকা পৌঁছেন। এবং সকল কার্যক্রম শেষ করে খেলোয়াড়দের নিয়ে টুর্নামেন্ট মাঠে উপস্থিত হয়ে আলাদা আলাদা ভাবে ৪৮কেজি ও ৫১কেজি ওজনের খেলোয়াড়দেরকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। এবং বিকাল ৫টায় উক্ত খেলাটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসাবে দায়িত্বরত(রেফারি) হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার লিপি সুলতানা মনি,ঢাকার এসএম মারুফ,সিলেটের মোঃআনুয়ার হুসেন ও তানভীর চৌধুরী।
খেলার এক পর্যায়ে রাত দশটার দিকে ৪৮কেজি ওজনের ফাইনালে অবস্থান করে হবিগঞ্জের তানজিমা সুলতানা শেলী ও কুষ্টিয়ার শিপা। পড়ে ফাইনাল রাউন্ডে কুষ্টিয়ার শিপাকে হারিয়ে শেলী বিজয়ী হয়। অপরদিকে ৫১কেজি ওজনের খেলায় ফাইনালে অবস্থান করে হবিগঞ্জের রিমা সরকার ও কিশোরগঞ্জ জেলার বিথী। ৫১কেজি ওজনের ফাইনালে বিথীকে হারিয়ে রিমা সরকার বিজয়ী হয়। উক্ত খেলাটি ৪ রাউন্ড করে খেলে এবং সবাইকে হারিয়ে হবিগঞ্জের এই দুই বাঘিনী কন্যা তানজিমা সুলতানা শেলী ও রিমা সরকার জয়লাভ করেন।
পরে তাদের পুরস্কৃত করেন উক্ত খেলার কর্নধার বাংলাদেশ বক্সিং সোসাইটির প্রতিষ্টাতা চেয়ারম্যান মোঃ আসাদউজ্জামান। বিজয়ী দুই বাঘিনী কন্যা হলো বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং ইউপির পূর্ব তোপখানা মহল্লার আব্দু শহীদ মিয়ার স্কুল পড়ুয়া কন্যা শেলী ও একই ইউনিয়নের বড়নগর মহল্লার রবীন্দ্র সরকারের স্কুল পড়ুয়া কন্যা রিমা সরকার।
৫নভেম্বর(শনিবার) বিজয়ীদের নিয়ে ঢাকা ছেড়ে হবিগঞ্জ জেলার উদ্যেশে রওয়ানা দিয়ে বিকালে নিজ উপজেলায় এসে পৌঁছেন তারা। জয়লাভ করে তারা বাড়িতে আসার সংবাদ শুনে পরিবারের সদস্যগন রিসিভ করার জন্য অপেক্ষায় থাকেন এবং তারা গাড়ি নামার পর পরই এক আনন্দের বন্যা বইতে দেখা যায়। এসময় তাদের এমন সাফল্য উপস্থিত অনেকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন। উল্লেখ্য,বানিয়াচং উপজেলার বক্সিং একাডেমি থেকে চলতি বছরের মধ্যে এই পর্যন্ত চারটি টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে ২য় বারের মতো শেলীকে নিয়ে চারজন বিজয়ী হন।
১৩সেপ্টেম্বর বিজয়ী হয় আমির উদ্দিন শিমুল,২৯জুলাই আমীর উদ্দিন ও শেলী বিজয়ী হয়,৯সেপ্টেম্বর শেলী বিজয়ী হয়। এব্যাপারে প্রতিষ্টাতা শিক্ষক জুয়েল রহমান জানান,তিনি দীর্ঘ ৫টি বছর ধরে এই একাডেমি প্রতিষ্টা করে নিজ শ্রম অর্থ খরচ করে তাদেরকে এই পর্যন্ত নিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেন। এমনকি ভবিষ্যতে তিনি একদিন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ওদেরকে অংশ গ্রহন করিয়ে বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনবেন।
টিম ম্যানেজার সাহিবুর রহমান জানান,যদি সরকারি ভাবে ও ক্রিড়া সংস্থা থেকে একটু সহযোগীতা করা হয় এই একাডেমিকে তাহলে একদিন সারাদেশবাসী তথা হবিগঞ্জ জেলাবাসীর মুখ উজ্জ্বল করবেন এই একাডেমির ছাত্র ছাত্রীরা। এছাড়াও বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা এই একাডেমিতে অংশ গ্রহন করে বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ড থেকে রক্ষা পেয়েছে বলেও জানান।
তাই সবার উদ্যেশে আরও বলেন সবাই যদি সচেতন হয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি এই একাডেমিতে নিজের ছেলে মেয়েদের ভর্তী করেন তাহলে তাদের সন্তানরা অপরাধ মূলক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকবে এবং নিজের শারিরীক সুস্থতার সহিত মন-মানসিকতা ভালো থাকবে। এজন্য তিনি সবার প্রতি এই আহবান জানান।