ময়মনসিংহের পাগলা থানার বাসিন্দা মকবুল হোসেন (৫৫)। পেশায় তিনি একজন নরসুন্দর। সেলুনে চুল কাটার কাজ করলেও আড়ালে তার ভিন্ন চেহারা। সেলুনে বসেই অটোরিকশা ছিনতাই চক্র চালাতেন মকবুল।
চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অটোরিকশা ছিনতাই করে আসছিলেন। শনিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঁঞা। এর আগে এক অটোরিকশা চালক হত্যার মূল হোতা মকবুলসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মকবুল হোসেন (৫৫), জাবেদ (২৫), কাজল মিয়া (৬০), শরীফ (৩২) ও সোহেল মিয়া (২২)। মকবুল বাদে অন্য চারজন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার বাসিন্দা। পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঁঞা জানান, গত ৩১ অক্টোবর ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার খুরশিদ মহল ব্রীজের পূর্ব ঢালে রাস্তার পাশে ঝোপঝাড়ের আড়াল থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জানা যায়, নিহত ব্যক্তিটি গফরগাঁওয়ের তেতুলিয়া গ্রামের অটোরিকশা চালক নাছির উদ্দিন (৪৫)। এ ঘটনার পরদিন নিহতের ছোট ভাই নুরুল আমিন পাগলা থানায় একটি মামলা করেন।
এরপর হত্যার রহস্য উদঘাটনে অভিযানে নামে ডিবি পুলিশ। ধারাবাহিক অভিযানে বিভিন্নস্থান থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত চার ছিনতাইকারী এবং ছিনতাইকৃত অটোরিকশা উদ্ধারসহ সোহেল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৯ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে গফরগাঁওয়ের জামতলা চৌরাস্তা থেকে আসামিরা হোসেনপুর যাওয়ার কথা বলে নাছির উদ্দিনের অটোরিকশায় উঠে৷আনুমানিক ৯টার দিকে হোসেনপুর ব্রীজের কাছে পৌঁছলে চালকের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর ছিনতাইকারীরা ঝোপের আড়ালে মরদেহ ফেলে তার অটোরিকশা ও মোবাইল সেটটি নিয়ে চলে যায়।
এসপি মাছুম আহাম্মদ ভুঁঞা আরও বলেন, এ হত্যার মূল হোতা মকবুল। সে সেলুনে চুল কাটার আড়ালে ছিনতাই চক্রের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ও পরিকল্পনা করত। একেক সময় একেকজনকে সঙ্গে নিয়ে কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী এলাকায় কখনো মারপিট, কখনো নেশাজাতীয় পানীয় পান করিয়ে অচেতন করে অটোরিকশা চুরি ও ছিনতাই করে আসছিল। এভাবে একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল মকবুল। তার বিরুদ্ধে একাধিক চুরি, ডাকাতি, অস্ত্র ও হত্যা মামলা রয়েছে।