বরগুনায় ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৩ জন রোগী নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে বরগুনা পৌরসভা থেকে সাতজন এবং অন্যান্য ইউনিয়ন থেকে ছয়জন ভর্তি হন। এ নিয়ে বরগুনায় ৭০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বুধবার (১২ জুলাই) সকালে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক লোকমান হোসাইন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। তবে আক্রান্ত রোগীদের জন্য চিকিৎসায় তেমন কোনো আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ ও আক্ষেপের সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার জেনারেল হাসপাতালে দেখা গেছে, নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে রেখে মশারি ছাড়াই চলছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা। এতে ঝুঁকিতে রয়েছেন অন্য রোগী ও স্বজনরা।
আক্ষেপ প্রকাশ করে পৌর শহরের টাউন হল এলাকার মো. অলিউল্লাহ বলেন, ‘বরগুনায় দিন দিন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও স্থানীয় প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, পৌরসভার পক্ষ থেকে লার্ভা শনাক্ত ও মশা নিধনে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। আক্রান্তদের জন্য হাসপাতালে চিকিৎসার ক্ষেত্রে তেমন কোনো আলাদা ব্যবস্থাও নেই। সাধারণ ওয়ার্ডগুলোতে মশারি ছাড়াই চলছে চিকিৎসা।’
পৌর শহরের চরকলোনি এলাকার ওমর ফারুক বলেন, ‘পৌর শহরের বেশিরভাগ ড্রেনের ময়লা ও পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় মশা বাড়ছে। এ ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। রাত-দিন সব সময়ই বাড়িতে মশারি টানিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে।’
বরগুনা পৌরসভার মেয়র কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, ‘ইতোমধ্যে ডেঙ্গুর বিষয়টি আমলে নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে পৌরসভা থেকে মাইকিং করাসহ বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
লোকমান হোসাইন জানান, ১ জানুয়ারি থেকে বুধবার (১২ জুলাই) সকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মোট ৭০ জন রোগী বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত এই হাসপাতালে কোনো ডেঙ্গু রোগী মারা যায়নি।
তিনি বলেন, ‘রোগীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। মশারি দেওয়ার পরও তারা মশারি ব্যবহার করছে না। আমরা সাধ্যমতো রোগীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’