পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র আল-আমিন গত জুনের বাড়ি থেকে বের হন। এখন কোথায় আছেন, কেমন আছেন, জানে না তাঁর পরিবার। তিনি পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠী ইউনিয়নের ফোরকান ফকিরের ছেলে। তাঁর বাবা ফোরকান ফকির জানান , ‘আল-আমিন বাড়ি ছাড়ার আগে নিজের মুঠোফোন বিক্রি করে দেয়।
কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে চলে যায়। গত কোরবানি ঈদের আগে (১০ জুলাইয়ের আগে) ইমো অ্যাপে তার মাকে ফোন দেয়। সে বলে, “আমি তাবলিগ করব। ঢাকায় আছি।” কিন্তু কোথায় আছে, ঠিকানা বলে না। যে ইমো থেকে ফোন করেছে, সেটা আরবি লেখা আইডি। কোনো নম্বর ওঠে না।’
ফোরকান ফকির গত শুক্রবার জানান, ‘আল-আমিন সর্বশেষ এক সপ্তাহ আগে বোনকে ইমোতে ফোন করে বলেছিল, “তুই এসএসসি পরীক্ষা ভালোভাবে দে। পরীক্ষা শেষ হলে আবার ফোন দেব। পাস করার পর তুই মাদ্রাসায় ভর্তি হবি,কলেজে না।”’ একই এলাকার বাসিন্দা ইব্রাহীম এসএসসি পাস করার পর কুয়াকাটার একটি মাদ্রাসায় কারিয়ানা পড়তেন। তার বাবা মো. নুরুজ্জামান জানান, ‘ইব্রাহীম বাড়ি ছাড়ার ৮-১০ দিন পর বাড়িতে ফোন করে জানায়, সে একজনের সঙ্গে ঢাকায় গেছে। সেখানে মাদ্রাসায় ভর্তি হবে। আমি বলি, তুই বাড়ি আয়, আমি তোকে ভর্তি করিয়ে দেব।
এরপর যোগাযোগ বন্ধ।’ এর আগে আল–আমিন, ইব্রাহীম ও মিরাজ আগে একসঙ্গে তাবলিগে গেছেন। আল–আমিন তিন মাস আগে এবং বাকি দুজন দুই মাস আগে বাড়ি ছাড়েন । তাঁদের মধ্যে যোগসাজশ আছে কি না, নিশ্চিত নয় পরিবারগুলো। ‘হিজরত’–এর নামে ঘরছাড়া তরুণের সংখ্যা বাড়ছে । দেশের বিভিন্ন এলাকার অর্ধশতাধিক তরুণ নতুন করে এ পথে পা বাড়িয়েছেন বলে জানা গেছে।
হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পাঁচ বছর পর নতুন করে ‘হিজরতের’ এ প্রবণতা উদ্বেগের বড় কারণ হয়ে উঠেছে বলেও মনে করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদ নিয়ে কাজ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন একটি সূত্র জানায়, পটুয়াখালীসহ অন্যান্য এলাকা থেকে নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে নেমে ৫০ জনের বেশি তরুণের ঘর ছাড়ার তথ্য পাওয়া গেছে।