ভাষাসৈনিক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক রণেশ মৈত্রের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্তজা ও মহাসচিব মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক শোকবার্তায় ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্তজা ও মহাসচিব মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, রণেশ মৈত্র ছিলেন একজন খ্যাতিমান সাংবাদিক, কলামিস্ট, ভাষা আন্দোলন কর্মী ও রাজনীতিক। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন জনস্বার্থের আন্দোলনে সব সময় সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক লাভ করেন। শোকবার্তায় ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, রণেশ মৈত্র দেশের অসহায় ও বঞ্চিত মানুষের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন।
রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আন্দোলন জোরদার করার জন্যও গড়ে তোলেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। তার অবদান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। শোকবার্তায় পরয়াত রণেশ মৈত্রের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। পাবনা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, ভাষা সংগ্রামী মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও কলামিস্ট রণেশ মৈত্র’র মৃত্যুতে সাত দিনের শোক কর্মসুচি গ্রহণ করেছে পাবনা প্রেসক্লাব। সোমবার দুপুরে এক জরুরি সভায় এই কর্মসুচি নেওয়া হয়।
পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদের পরিচালনায় সভার শুরুতে রণেশ মৈত্রর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাড়িয়ে এক মিনিট নিরাবতা পালন করা হয়। কর্মসুচির মধ্যে রয়েছে- পাবনা জেলার সাংবাদিকদের কালোব্যাজ ধারণ; প্রেসক্লাবে কালো পতাকা উত্তোলন; স্থানীয় পত্রিকাগুলোর প্রথম পাতার প্রথম কলামে ছয় ইঞ্চি পরিমাণ স্থান কালোব্যাজ দিয়ে খালি রাখা; মরদেহ আনার পর স্বাধীনতা চত্বরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার ও সর্বজনের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন; প্রেসক্লাব চত্বরে মরদেহ নিয়ে আসা ও নাগরিক শোক সভা।
সোমবার ভোররাতে রণেশ মৈত্র (৯০) ঢাকার পপুলার হাসপাতালে পরলোকগমন করেন। স্ত্রী পুরবী মৈত্র, দুই ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি। সভায় বক্তব্য দেন – পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রুমী খন্দকার, সাবেক সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল মতীন খান, প্রেসক্লাবের সহসভাপতি শহীদুর রহমান, সাবেক সম্পাদক আখিনুর ইসলাম রেমন, সাবেক সম্পাদক আহমেদ উল হক রানা, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি কামাল সিদ্দিকী, কার্যকরী সদস্য জহরুল ইসলাম, রাজিউর রহমার রুমী, আব্দুর রশিদ, সহসম্পাদক সরোয়ার উল্লাস, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইয়াদ আলী মৃধা পাভেল, সমাজকল্যাণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুইট, দপ্তর সম্পাদক কানু সান্যাল।
সদস্য কাজী মাহবুব মোর্শেদ বাবলা, আবুল কালাম আজাদ, মনিরুজ্জামান শিপন, মিজানুর রহমান, পার্থ পবিত্র হাসান প্রমুখ। ১৯৩৩ সালের ৪ অক্টোবর তার মাতামহের চাকরিস্থল রাজশাহী জেলার নহাটা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আজীবন সংগ্রামী রণেশ মৈত্র।
মহান ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন জনস্বার্থের আন্দোলনে সব সময় সাহসী ভুমিকা রাখেন তিনি। বাবা রমেশ চন্দ্র ছিলেন পাবনার আতাইকুলা থানার ভুলবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। ২০১৮ সালে তিনি সাংবাদিকতায় একুশে পদক লাভ করেন। তার স্ত্রী পুরবী মৈত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ মহিলা সমিতি পাবনা জেলা শাখার সভানেত্রী।