কুলাউড়ার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে ভার্চুয়াল জুয়া। এতে আসক্ত হয়ে পড়ছে পাড়া-মহল্লার শিশু থেকে শুরু করে কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীরা। জানা যায়, তথ্যপ্রযুক্তির এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্মার্ট ফোন, ট্যাব বা ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের জুয়ায় জড়িয়ে নিজেদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে অনেক কিশোর, তরুণ ও তরুণীকে।
সূত্রমতে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকায় প্রসার ঘটেছে এই জুয়ার। এলাকার বিভিন্ন নিভৃত অংশে জটলা করে প্রকাশ্যে জুয়া খেলতে দেখা যায় তাদের। জুয়াড়িদের অনেকে আবার বিভিন্ন মাদকেও আসক্ত। তাই অনলাইন জুয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যাও। এদের ব্যবহার করে একটি চক্র প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
সেইসাথে ভার্চুয়াল এই জুয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠেছে একাধিক কিশোর গ্যাং। তারা জুয়ার টাকা জোগাড় করতে জড়িয়ে পড়ছে মাদক বেচাকেনাসহ নানা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গেও। জুয়ায় আসক্ত কয়েকজন শিশু-কিশোর ও তরুণ জানান, অনলাইনভিত্তিক জুয়া মূলত এক ধরনের লটারি। অর্থাৎ যারা এই জুয়া খেলে তারা বিভিন্ন প্রকার লটারির টিকিট তৈরি করে। এই টিকিটগুলোতে বিভিন্ন প্রকার নম্বর থাকে- যেগুলোর ওপর বাজি ধরতে হয়। নম্বরের সঙ্গে মিলে গেলে টাকা বিকাশ বা ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাতে ও তুলতে হয়। তারা জানান, তাদের বেশির ভাগ ক্রেতা বা খেলোয়াড় হচ্ছে দেশের বাইরের। তাই জুয়ায় অংশ নিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন মাধ্যমকে তারা বেছে নেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে জানান, প্রতিদিন সকাল হলেই মোবাইল নিয়ে এলাকায় জটলা করতে দেখা যায় পাড়ার বিভিন্ন বয়সী ছেলেদের। প্রথম প্রথম কিছু বুঝতে পারিনি। পরে শুনেছি তারা মোবাইলে জুয়া খেলছে। তবে মহল্লার মানুষ তাদের কিছু বলতে ভয় পায়। কারণ তারা সংগঠিত। কেউ কিছু বললেই সংগঠিত হয়ে তাকে হেনস্তা করতে ছাড়ে না। এ ব্যাপারে তিনি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুছ ছালেক দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, আমি কুলাউড়ায় যোগদানের পর শুনেছি এখানে অনলাইন জুয়ার পাশাপাশি কিশোরগ্যাং এর ব্যাপক বিস্তার ঘটছে। আমরা এর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানে নামছি। এবং শুধু পুলিশি অভিযানে এ জুয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে ওসি বলেন, এই অপরাধ ঠেকাতে এলাকাভিত্তিক সামাজিক প্রতিরোধও প্রয়োজন। এটি নির্মূলে তিনি এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।