কুমিল্লার চান্দিনা ১নং শুহিলপুর ইউনিয়নের মো. করিম নিকছন মোল্লা নামে এক ডিলারের বিরুদ্ চুরিরঅভিযোগ ওঠে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিকেল সাড়ে ৫টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা মজুমদার। সরেজমিনে তদন্তে গিয়ে বস্তা প্রতি চাল কম পাওয়ার সত্যতা পেয়েছেন।
সে সঙ্গে পাশের একটি অন্য ঘর থেকে ১০বস্তা চাউল উদ্ধার করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে বলে জানাগেছে। রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ১নং শুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের শালিখা গ্ৰামের মোস্তাক সরকারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ১৫ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রির ডিলারশীপ উপজেলার ১নং শুহিলপুর ইউনিয়নের শালিখা গ্ৰামের মো. রেজাউল করিম নিকছন মোল্লা। তিনি গত ১৫ সেপ্টেম্বর চান্দিনা সরকারী খাদ্যগুদাম থেকে ৫১৬ বস্তায় প্রায় সাড়ে ১৫ মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করে ইউনিয়নের শালিখা গ্ৰামের মোস্তাক সরকারের বাড়িতে একটি গোডাউনে রাখেন।
এ চাল তালিকাভূক্ত ৫১৬ জন হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ১৫ টাকা কেজি দরে জনপ্রতি ৩০ কেজি করে বিক্রি করার কথা ছিল। এর আগে ৫১৬ জন থেকে ১১৮ জনের মধ্যে চাউল বিতরণ করেছেন ডিলার। এরই মধ্যে ওই ডিলার তার গোডাউন সংলগ্ন মোস্তাক সরকারের বসতঘরে চালের বস্তা পরিবর্তন করে ১০ বস্তা চাল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ পায় উপজেলা প্রশাসন।
খবর পেয়ে রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আনোয়ার হোসেন, সহকারী কমিশনার উম্মে হাবিবা মজুমদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থানে উপস্থিত হয়ে তিনি গোডাউনে ঢুকে ইউপি চেয়ারম্যান আবুবকর সিদ্দিক ও গণমাধ্যম কর্মীসহ স্থানীয়দের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে একাধিক বস্তা মেপে প্রতি বস্তায় ৪০০-৫০০গ্ৰাম করে চাউল কম পেয়েছেন। এসময় মোঃ মোস্তাক মিয়ার স্ত্রী নার্গিস আক্তারের ঘরে থেকে ৪৯ কেজি ১০০গ্ৰাম করে ৯ বস্তা ও ২৯কেজি ২০০গ্ৰাম এক বস্তা সহ মোট ১০ বস্তা চাউল উদ্ধার করা হয়। তবে ৫১৬ বস্তা থেকে ১১৮ বস্তা বিতরনে ৩৯৮ বস্তা চাল মজুতের সত্যতা পেয়েছেন তিনি।
ডিলার লিক্সশন বলেন, চান্দিনা সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে যে ভাবে দিয়েছে তিনি সে ভাবেই এনে বিক্রি করছেন। তালারত অবস্থায় গোডাউন থেকে চাল কিভাবে মোস্তাক সরকারের ঘরে ঢুকেছে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। এদিকে ঘরের মালিক মোস্তাক সরকারের স্ত্রী নার্গিস আক্তার বলছেন, আমার ঘরে কিভাবে এ চাউল এসেছে তা জানানেই। আমার বসতঘর তালা দিয়ে পাকের ঘরে চাবি রেখে তিন দিনের জন্য বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা মজুমদার জানান, প্রাথমিক তদন্তে এবং উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী সরকারি ন্যায্য মূল্যের চাল বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। সম্পূর্ণ বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যারকে অবগত করেছি। তিনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাপন শীল জানান, আমি বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব দেই। তিনি মোস্তাক সরকারের বসত ঘরে বাজারের বস্তায় ১০ বস্তা চাল উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই ডিলারের গুদাম তালাবদ্ধ করা হয়েছে। সোমবার থেকে ওই ডিলারের চাল বিতরণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করার জন্য উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি যেহেতু এখনো সুস্পষ্ট ভাবে প্রমাণিত হয়নি সেহেতু ওই ডিলারকে চেয়ারম্যানের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।