নোয়াখালী হাতিয়ার ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বিশ্ব কর্মসূচির রিলিফের চাপাচারকালে চাল ভর্তি দুটি ট্রাকসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে এক ট্রাক ড্রাইভার পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতরা হলো, সুবর্ণচর উপজেলার চর আমান উল্যাহ এলাকার আবুল খায়েরের ছেলে ট্রাক ড্রইভার মো.শামীম (৩২), চর জুবলি গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে জব্দকৃত চালের মালিক দাবিদার মো. মনির (২৮) ও চর মজিদ গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে ট্রাক ড্রাইভার মো.ওসমান (১৯)।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ২টার দিকে দুই ট্রাক চালসহ তিনজনকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেব প্রিয় দাস। এর আগে, গতকাল সোমবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার ২ নং চরবাটা ইউনিয়নের তোতার বাজার ও ৭ নং পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের মঞ্জু চেয়ারম্যান বাজার থেকে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির রিলিফের ২২ মেট্রিক টন চাল ভর্তি দুটি ট্রাকসহ তাদের আটক করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় , গতকাল সোমবার রাতে হাতিয়ার ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্যবসায়ী মনির ও সুবর্ণচরের পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে আবদুর রহমান ওরফে ডিলালের (৪২) যোগসাজশে ট্রলারযোগে কালোবাজারে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পরে রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দের ২২ মেট্রিক টন চাল সুবর্ণচরের তোতা বাজার ও মঞ্জু চেয়ারম্যান বাজার ঘাটে নিয়ে আসে।
তোতার বাজার (চট্ট মেট্রো-ট-১২-১০২১) ও মঞ্জু চেয়ারম্যান বাজার সংলগ্ন ঘাটের পাশে খালি জায়গা থেকে পাচার করতে ট্রাকে (ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-২০৮৫) লোড করার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে গ্রাম পুলিশ নূর করিম পুলিশকে খবর দিলে ট্রাক এবং আলামতসহ পরিবহন কাজে নিয়োজিত তিন ব্যক্তেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ট্রাকটির গতীরোধ করতে গেলে চালক চৌকিদার নুর করিমকে চাপা দেয়ার চেষ্টা করে। মঞ্জু চেয়ারম্যান বাজার সংলগ্ন ঘাটে পুলিশের অভিযান টের পেয়ে ওই ট্রাকের ড্রাইভার ডিলার রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে পালিয়ে যায়।
চাল আটককারী গ্রাম পুলিশ মো. নূর করিম জানান, সোমবার বিকালে মেঘনা নদী পার হয়ে হাতিয়া থেকে চালগুলো প্রথমে ভূমিহীন বাজারে আনা হয়। সেখানে বেশ কিছু বস্তা পরিবর্তন করে পাচারকারীরা। এমন একটি সংবাদ ভূমিহীন বাজারের স্থানীয় লোকজন তাকে সোমবার সন্ধ্যায় জানায়। চাল আটক করা হলে ট্রাক ড্রাইভার জানায়, চাল গুলো পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে সারের ডিলার আবদুর রহমানের। তাৎক্ষণিক আব্দুর রহমানের সঙ্গে স্থানীয় একজন সাংবাদিক মুঠোফোনে কথা বললে সে জানায়, ভাসানচর থেকে কিছু চাল খাওয়ার জন্য আনার কথা ছিল।
সাংবাদিক তাকে দুই ট্রাক চাল আটকের কথা বললে আবদুর রহমান মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বন্ধ করে দেয়। ট্রাক ড্রাইভার চাল পাচারের সাথে সুবর্ণচরের রহমান ডিলার ও হাতিয়ার মনির জড়িত বলে জানান। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুর রহমান অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, তিনি রাজনীতি করেন। গ্রাম পুলিশ গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী হলে তার বিরোধীতা করেন। গ্রাম পুলিশ শক্রতা করে এসব বলেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
চাল আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি দেব প্রিয় দাস ২২ মেট্রিক টন চাল ভর্তি দুটি ট্রাক আটক করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।