কোরআন শরিফ আল্লাহ তায়ালার কালাম। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে মানুষের অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। তেলাওয়াতের বিশেষ ফজিলত ও সওয়াব রয়েছে।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর তেলাওয়াত করল তার বিনিময়ে সে একটি নেকী পাবে, আর একটি নেকীর বদলা হবে দশগুণ, একথা বলছি না যে, আলিফ-লাম-মীম, একটি অক্ষর বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মীম একটি অক্ষর।’ -(তিরমিজি, হাদিস: ২৯১০)
আরেক হাদিসে হজরত আবু মুসা আল-আশ‘আরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করে তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করে তার উদাহরণ হলো লেবুর মত তার স্বাদও ভাল আবার ঘ্রাণও ভাল। মুমিনের উদাহরণ হলো খেজুরের ন্যায়, তার স্বাদ ভাল কিন্তু কোনো ঘ্রাণ নেই, আর কোরআন তেলাওয়াতকারী পাপী ব্যক্তির উদাহরণ হলো ফুলের মতো ঘ্রাণ ভাল কিন্ত স্বাদ তিক্ত, আর কোরআন তেলাওয়াত নাকারী হাফেজের উদাহরণ হলো মাকাল ফলের মতো যার স্বাদ তিক্ত এবং সু-গন্ধ নেই।’ (বুখারি, হাদিস: ৭৫৬০)
আল্লাহর কালামের প্রতি মানুষের আগ্রহ-আকর্ষণ আজন্ম। তাই তেলাওয়াত করেন সবাই। কোরআন তিলাওয়াতের বেশ কিছু আদব রয়েছে। প্রত্যেক তিলাওয়াতকারীর কর্তব্য সে আদবগুলো অনুসরণ করা। এর মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আদব হল-
১. মন-মস্তিষ্ক সজাগ অবস্থায় পূর্ণ আগ্রহভরে তিলাওয়াত করা।
২. ঘুমের চাপ থাকা অবস্থায় তিলাওয়াত না করা।
হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন রাতে নামাজ পড়তে দাঁড়ায় এবং (ঘুমের কারণে) কোরআন তার জিহবায় জড়িয়ে যায়, সে নিজেও জানে না সে কী পড়ছে, তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে। -(সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৭৮৭)
৩. কোরআন শরিফের ওপর মাথা বা অন্য কোনো অঙ্গ দিয়ে ভর না দেওয়া।
৪. তিলাওয়াত চলার সময় একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে কথা বলা থেকে বিরত থাকা।
হযরত নাফে রহ. বলেন, হজরত ইবনে ওমর রা. যখন কুরআন তিলাওয়াত করতেন তিলাওয়াত থেকে ফারেগ হওয়া পর্যন্ত কারো সাথে কথা বলতেন না।
-(সহীহ বুখারী ২/৬৪৯; আততিযকার ফী আফজালিল আযকার পৃ. ১৯১; আততিবইয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন ১১১; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৭৭; তাফসীরে কুরতুবী ১/২২)