প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরজ বিধান পালন আবশ্যকীয়। ফরজের পাশাপাশি নফল ইবাদত পালনের প্রতিও গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। নফল পরকালে আমলের পাল্লা ভারি করবে এবং মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি করবে। তাই নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও নফল ইবাদত আদায় করতেন। সাহাবিদেরও এর প্রতি যত্নশীল হতে বলতেন।
দিনের শুরুতে আল্লাহর রাসুল যেসব নফল ইবাদত করতে বলেছেন তার একটি চাশতের নামাজ। চাশত হচ্ছে ফারসি শব্দ। এর আরবি শব্দ হল, দুহা। দুপুরে সূর্য মধ্য আকাশে স্থির হওয়ার আগ মুহূর্ত অর্থাৎ জোহরের আগের সময়কে আরবিতে ‘দুহা’ এবং ফারসিতে চাশত বলা হয়।
প্রতিদিন এ সময় চার রাকাত নফল নামাজ আদায়ের অনেক ফজিলত রয়েছে। এ বিষয়ে বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘আমার প্রিয়তম রাসুল (সা.) আমাকে তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন, যেন আমি তা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ত্যাগ না করি। তাহল-
১. প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা।
২. সালাতুত দুহা অর্থাৎ চাশতের নামাজ আদায় করা।
৩. ঘুমানোর আগে বিতর আদায় করা।’ (বুখারি, হাদিস : ১১৭৮)
এই নামাজের ফজিলত সম্পর্কে বুরাইদা (রা.) থেকে আরেকটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড়া আছে। অতএব, মানুষের কর্তব্য হলো প্রত্যেক জোড়ার জন্য একটি করে সদকা করা।
সাহাবায়ে কেরাম বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কার শক্তি আছে এই কাজ করার?’ তিনি বলেন, ‘মসজিদে কোথাও থুতু দেখলে তা ঢেকে দাও অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও। তবে এমন কিছু না পেলে চাশতের দুই রাকাত নামাজ এর জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫২২২)।
এ হাদিস থেকে বোঝা যায় যে চাশতের নামাজ ৩৬০ সদকার সমতুল্য।
চাশতের নামাজের রাকাত সংখ্যা
চাশতের নামাজের সর্বনিম্ন ২ রাকাত পড়া যায়। উপরে ৪, ৮, ১২ রাকাত পর্যন্ত হাদীসে পাওয়া যায়। মক্কা বিজয়ের দিন দুপুরের আগে আল্লাহ্র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী (রা.) এর বোন উম্মে হানী (রা.) এর গৃহে খুবই সংক্ষিপ্তভাবে ৮ রাকাত পড়েছিলেন। সংক্ষিপ্তভাবে পড়লেও রুকু এবং সিজদায় তিনি পূর্ণ ধীরস্থিরতা বজায় রেখেছিলেন এবং প্রতি দুই রাকাত অন্তর সালাম ফিরিয়ে ছিলেন। -(বুখারী, হাদীস : ২০৭)
চাশতের নামাজের নিয়ম
চাশতের নামাজ অন্য যেকোনো দুই রাকাত বিশিষ্ট সুন্নত বা নফল নামাজ আদায়ের মতই। কোনো নফল নামাজে যেমন দুই রাকাত পড়ে ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে থাকেন, এখানেও তেমনই।