মানুষ কীভাবে সিদ্ধান্ত নেবে ও কোন সিদ্ধান্ত তার জন্য কল্যাণকর হবে এবং কীভাবে বিষয় নির্বাচন করবে— এ ব্যাপারে ইসলামের সুন্দর দিক-নির্দেশনা রয়েছে। যেন মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য লাভে ধন্য হয় এজন্য রাসুল (সা.) ‘ইস্তেখারা’র নামাজ শিক্ষা দিয়েছেন।
প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ ইবনে হাজার (রহ.) বলেন, ইস্তেখারা করা মানে কোনো বিষয় বাছাই ও নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া। উদ্দেশ্য হচ্ছে, যে ব্যক্তিকে দুটি বিষয়ের মধ্যে একটি বিষয় বাছাই করে নিতে হবে, সে যেন উত্তমটি বাছাই করে নিতে পারে, সে প্রার্থনা করা।
ইস্তেখারার মাধ্যমে মূলত বান্দা আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা করে যে, আমি যা করতে চাই তা যদি আমার জন্য কল্যাণকর হয় তাহলে তা সহজ করে দিন এবং বরকত দান করুন। আর যদি এতে কল্যাণ না থাকে তাহলে তা থেকে আমাকে বিরত রাখুন এবং আমার জন্য যা কল্যাণকর তা-ই আমাকে দান করুন। এটিই মূলত ইস্তেখারার বাস্তবতা।
ইস্তেখারার জন্য দুটি করণীয় বলা হয়েছে হাদিসে। একটি হলো, দু’ রাকাত নামাজ আদায় করা এবং ইস্তেখারার প্রসিদ্ধ মাসনুন দোয়াটি মনোযোগের সাথে পড়া। সময়ের স্বল্পতা বা অন্য কোনো কারণে এই কাজ সম্ভব না হলে তিনবার বা সাতবার এই দুআ পড়েও ইস্তেখারা করা যায়,
اللهم خر لي واخترلي -(ইবনুস সুন্নী, হাদীস : ৫৯৭, ৫৯৮)
এরপর যে দিকে মনের টান অনুভব হয় আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা করে সে কাজই শুরু করে দিবে। এই আমল করার জন্য শরীয়তে রাত-দিন বা কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া নেই। যেকোনো সময় তা করা যায়।
কিন্তু অনেকে মনে করে, ইস্তেখারার জন্য ঘুমাতে হয় কিংবা রাত্রি বেলায় ঘুমানোর আগেই শুধু ইস্তেখারা করা যায়। আবার অনেকে মনে করে, স্বপ্নে কোনও কিছু দেখলেই ইস্তেখারা পূর্ণ হয়। কিন্তু আলেমদের মতে, এর কোনোটিই ইস্তেখারার জন্য জরুরি কোনো বিষয় নয়; বরং রাত-দিনের যে সময় নামাজ পড়া যায়। এবং দুই রাকাত নামাজ পগে নির্দিষ্ট দোয়াটি পড়ে ইস্তেখারা করে নেওয়া যায়। -(আলমাদখাল, ইবনুল হাজ্ব ৪/৩৬-৪০; হায়াতুল হায়াওয়ান ৩/৩৮; আল কাউসার, প্রচলিত ভুল, ৬)