ঢাকা ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আমন ধান কাটার পর আলু চাষে লাভের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আত্রাইয়ের কৃষকেরা কুমিল্লায় যথাযথ মর্যাদায় সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত উচ্চ আদালতের রায় দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি বেজমেন্ট ব্যবসায়ীদের ভোলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোহাম্মদ সানাউল হকের বিদায় সংবর্ধনা যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক অপসারণ দাবি জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে সুখবর জেলা প্রশাসককে গাছের চারা উপহার দিলেন ইউএনও টঙ্গীতে সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের ফাঁসীর দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের নামে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মমিন মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে লেক ভিউ আবাসিক হোটেলের নামে চলছে নারী জুয়া ও মাদক ব্যবসা

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার আমল

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগেই আল্লাহ তায়ালা কোরআনের সুরা কামারের প্রথম আয়াতে বলেছেন, ‘কেয়ামত সন্নিকটে’। নবীজি সা. কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগ মুহুর্তের বেশ কিছু আলামতের কথা বলেছেন। এই আলামতগুলোর মধ্যে সর্বশেষ ও ভয়াবহ হলো দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটা। দাজ্জাল কেয়ামতে ৪০ দিন আগে পৃথিবীতে আসবে এবং মানুষকে বিপথগামী করতে সবধরনের চেষ্টা চালাবে। 

কেয়ামতের আগে দাজ্জালের ফিতনা

মানুষকে তার ফাঁদে আটকাতে সে মৃত মানুষকে জীবিত করবে। হাদিসের ভাষ্যে,  ‘সে মানুষের কাছে গিয়ে বলবে, আমি যদি তোমার মৃত পিতা-মাতাকে জীবিত করে দেখাই, তাহলে কি তুমি আমাকে প্রভু হিসেবে মানবে? সে বলবে অবশ্যই মানব। এ সুযোগে শয়তান তার পিতা-মাতার আকৃতি ধরে বলবে, হে সন্তান! তুমি তার অনুসরণ কর। সে তোমার প্রতিপালক’ (সহিহ জামে আস্-সগীর: ৭৭৫২)।

দাজ্জালের ফেতনার সময় অনেকেই তার ফাঁদে পা দেবে। তার অনুসরণ করবে, হাদিসের বর্ণনামতে,  ‘দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারী হবে ইহুদি এবং মহিলা’(মুসনাদে আহমদ)। ‘ইস্পাহানের সত্তর হাজার ইহুদী দাজ্জালের অনুসরণ করবে। তাদের সবার পরনে থাকবে সেলাই বিহীন চাদর’ (মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)।

হাদিসে দাজ্জালের বর্ণনা

দাজ্জাল সম্পর্কিত এক হাদিসে এসেছে, হজরত নাওয়াস ইবনে সাময়ান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন সকালে দাজ্জালের কথা আলোচনা করলেন। তিনি আওয়াজকে উঁচু-নিচু করছিলেন। ফলে আমরা মনে করলাম দাজ্জাল খেজুর বাগানের মধ্যেই রয়েছে।

অতঃপর যখন আমরা তার কাছে গেলাম, তখন তিনি আমাদের অবস্থা বুঝে ফেললেন। তিনি বললেন, তোমাদের কী হলো। আমরা বললাম, আল্লাহর রাসুল! আপনি সকালে দাজ্জালের কথা আলোচনা করেছিলেন, আওয়াজকে উঁচু-নিচু করেছিলেন, তাই আমরা মনে করলাম দাজ্জাল হয়তো খেজুর বাগানেই আছে।

তিনি বললেন, তোমাদের ক্ষেত্রে দাজ্জাল ছাড়া অন্যকিছুতে এত বেশি ভয় আমাকে দেখানো হয়নি। যদি আমি তোমাদের মাঝে থাকাবস্থায় সে বের হয়, তা হলে তোমাদের ছাড়া আমি সর্বপ্রথম তার প্রতিরোধ করব।

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার আমল

আর যদি তোমাদের মাঝে না থাকাবস্থায় সে বের হয়, তা হলে প্রত্যেকে তার প্রতিরোধ করবে। আল্লাহর শপথ! প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আমার খলিফা রয়েছে। নিশ্চয়ই দাজ্জাল কোঁকড়া চুলবিশিষ্ট যুবক হবে এবং তার চোখ কানা হবে।

যেন আমি আবদুল ওযা ইবনে কাতালের মতো তাকে দেখতে পাচ্ছি। তোমাদের মধ্যে যে তাকে পাবে সে যেন সুরা কাহাফের শুরু অংশ পড়ে। (সহিহ মুসলিম ২৯৩৭, সুনানে আবু দাউদ ৪৩২১, তিরমিজি ২২৪১)

আরেক হাদিসে দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করতে বলা হয়েছে। হাদিসের বর্ণনায়— যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের ফিতনা হতে হেফাজতে থাকবে। (মুসলিম, কিতাবুল ফিতান)

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাচাঁর দোয়া

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাচঁতে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে আরেকটি দোয়ার কথা বলা হয়েছে। দোয়াটি হল-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ عَذَابِ النَّارِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কাবরি, ওয়া মিন আজাবিন্নারি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ্দাজ্জাল।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কবরের শাস্তি, জাহান্নামের শাস্তি, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।-(বুখারি, হাদিস : ১৩৭৭)

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আমন ধান কাটার পর আলু চাষে লাভের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আত্রাইয়ের কৃষকেরা

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার আমল

আপডেট সময় ১২:১৯:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগেই আল্লাহ তায়ালা কোরআনের সুরা কামারের প্রথম আয়াতে বলেছেন, ‘কেয়ামত সন্নিকটে’। নবীজি সা. কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগ মুহুর্তের বেশ কিছু আলামতের কথা বলেছেন। এই আলামতগুলোর মধ্যে সর্বশেষ ও ভয়াবহ হলো দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটা। দাজ্জাল কেয়ামতে ৪০ দিন আগে পৃথিবীতে আসবে এবং মানুষকে বিপথগামী করতে সবধরনের চেষ্টা চালাবে। 

কেয়ামতের আগে দাজ্জালের ফিতনা

মানুষকে তার ফাঁদে আটকাতে সে মৃত মানুষকে জীবিত করবে। হাদিসের ভাষ্যে,  ‘সে মানুষের কাছে গিয়ে বলবে, আমি যদি তোমার মৃত পিতা-মাতাকে জীবিত করে দেখাই, তাহলে কি তুমি আমাকে প্রভু হিসেবে মানবে? সে বলবে অবশ্যই মানব। এ সুযোগে শয়তান তার পিতা-মাতার আকৃতি ধরে বলবে, হে সন্তান! তুমি তার অনুসরণ কর। সে তোমার প্রতিপালক’ (সহিহ জামে আস্-সগীর: ৭৭৫২)।

দাজ্জালের ফেতনার সময় অনেকেই তার ফাঁদে পা দেবে। তার অনুসরণ করবে, হাদিসের বর্ণনামতে,  ‘দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারী হবে ইহুদি এবং মহিলা’(মুসনাদে আহমদ)। ‘ইস্পাহানের সত্তর হাজার ইহুদী দাজ্জালের অনুসরণ করবে। তাদের সবার পরনে থাকবে সেলাই বিহীন চাদর’ (মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)।

হাদিসে দাজ্জালের বর্ণনা

দাজ্জাল সম্পর্কিত এক হাদিসে এসেছে, হজরত নাওয়াস ইবনে সাময়ান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন সকালে দাজ্জালের কথা আলোচনা করলেন। তিনি আওয়াজকে উঁচু-নিচু করছিলেন। ফলে আমরা মনে করলাম দাজ্জাল খেজুর বাগানের মধ্যেই রয়েছে।

অতঃপর যখন আমরা তার কাছে গেলাম, তখন তিনি আমাদের অবস্থা বুঝে ফেললেন। তিনি বললেন, তোমাদের কী হলো। আমরা বললাম, আল্লাহর রাসুল! আপনি সকালে দাজ্জালের কথা আলোচনা করেছিলেন, আওয়াজকে উঁচু-নিচু করেছিলেন, তাই আমরা মনে করলাম দাজ্জাল হয়তো খেজুর বাগানেই আছে।

তিনি বললেন, তোমাদের ক্ষেত্রে দাজ্জাল ছাড়া অন্যকিছুতে এত বেশি ভয় আমাকে দেখানো হয়নি। যদি আমি তোমাদের মাঝে থাকাবস্থায় সে বের হয়, তা হলে তোমাদের ছাড়া আমি সর্বপ্রথম তার প্রতিরোধ করব।

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার আমল

আর যদি তোমাদের মাঝে না থাকাবস্থায় সে বের হয়, তা হলে প্রত্যেকে তার প্রতিরোধ করবে। আল্লাহর শপথ! প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আমার খলিফা রয়েছে। নিশ্চয়ই দাজ্জাল কোঁকড়া চুলবিশিষ্ট যুবক হবে এবং তার চোখ কানা হবে।

যেন আমি আবদুল ওযা ইবনে কাতালের মতো তাকে দেখতে পাচ্ছি। তোমাদের মধ্যে যে তাকে পাবে সে যেন সুরা কাহাফের শুরু অংশ পড়ে। (সহিহ মুসলিম ২৯৩৭, সুনানে আবু দাউদ ৪৩২১, তিরমিজি ২২৪১)

আরেক হাদিসে দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করতে বলা হয়েছে। হাদিসের বর্ণনায়— যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের ফিতনা হতে হেফাজতে থাকবে। (মুসলিম, কিতাবুল ফিতান)

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাচাঁর দোয়া

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাচঁতে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে আরেকটি দোয়ার কথা বলা হয়েছে। দোয়াটি হল-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ عَذَابِ النَّارِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কাবরি, ওয়া মিন আজাবিন্নারি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ্দাজ্জাল।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কবরের শাস্তি, জাহান্নামের শাস্তি, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।-(বুখারি, হাদিস : ১৩৭৭)